দোকানের জায়গা নিয়ে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৩০

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, নেত্রকোনা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোনার কেন্দুয়া পৌরশহরের বাজারে একটি দোকান ঘরের জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু'পক্ষের লোকজনের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

বিজ্ঞাপন

এতে উভয়পক্ষের অন্তত দুইজন গুলিবিদ্ধ সহ ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতরা কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

ময়মনসিংহে রেফার্ডকৃত আহতরা হচ্ছেন-শাওন (৩৩), রফিকুল (৪০), বাবু (২১), রফিকুল ইসলাম (৫৯) ও রনি (২২)। এদের মধ্যে রফিকুল ইসলাম ও রনি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

প্রত্যক্ষ্যদর্শী, স্থানীয় ও বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে কথা জানা গেছে, কেন্দুয়া উপজেলা মধ্য বাজারে থাকা সোহেল আমিন নামে এক ব্যক্তির কিশোরগঞ্জের দোকান নামে বড় একটি দোকানঘর রয়েছে। এটি রাতে দখল করতে যায় দিগদাইর গ্রামের বাসিন্ধা উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক নাসির খন্দকারের বড় ভাই যুবলীগ নেতা আল আমিন।

এসময় দোকান মালিক সোহেলের পক্ষে জায়গা রক্ষা করতে যান চকবাট্টা গ্রামের বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন ভুইয়া। এক পর্যায়ে বিএনপি দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি শুরু হয়ে দুই গ্রামের বাসিন্ধাদের মাঝে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।

উভয় গ্রুপই জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালীর সমর্থক। প্রথমে কেন্দুয়া থানার সামনে এক দফা সংঘর্ষ হয়। পরে প্রায় ৫০ গজ দুরেই বিএনপি কার্যালয়ের সামনে আবারও সংঘর্ষ বাধে।

পুলিশ নিস্ক্রিয় থাকায় দুই দফায় সংঘর্ষের খবরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ঘটনায় স্থানীয় কেন্দুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৫ জন ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫ জনকে মমেক পাঠানো হয়েছে। এছাড়া অন্যরা নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।

এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী জানান, গত ৪০ বছর ধরে ক্রয়সূত্রে দোকানের মালিক সোহেল আমিনরা। কিশোরগঞ্জের দোকান নামে বড় দোকানটির ঐতিহ্য রয়েছে।

আওয়ামী লীগের ক্ষমতাকালে যুবলীগ নেতা আল আমিন খন্দকার দোকানটির বিক্রেতার ছেলের কাছ থেকে দ্বিতীয়বার লিখিয়ে নেন। আল আমিন খন্দকার যুবদলের নাসির খন্দকারের ছোট ভাই হলেও সে যুবলীগ নেতা হয়ে বিগত সময়ে নানা ধরনের ক্ষমতা দেখিয়েছে। কয়েক দফায় এ নিয়ে দরবারও হয়েছে। নাসিরও তার ভাইয়ের এমন কাজের বিপক্ষে।

আজ আবার ওই দোকানের তালা খুলতে যায় আল আমিন খন্দকার। পরে নাসির বাধা দিলে চাচাতো ভাই পৌর যুবদলের আহবায়ক উজ্জ্বল খন্দকারকে নিয়ে যায় তালা খুলতে। যে কারণে এলাকার মানুষ অন্যায় কাজে বাধা দিলে উজ্জ্বল খন্দকারকে নিয়ে দুলাল চেয়ারম্যানের ভাতিজা ফরহাদ ভুইয়ার সহযোগিতা পায় আল আমিন খন্দকার। শোনা গেছে ফরহাদ ভুইয়া গুলিও নাকি চালিয়েছে। এই ঘটনায় কয়েকজন আহতও হয়েছে।

এ দিকে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. অনুপ কুমার সরকার জনান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৫ জনের মতো চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজন অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাদেরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুজন গুলিবিদ্ধ থাকার কথাও জানান তিনি।

কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, কেন্দুয়া পৌর শহরের মধ্যবাজারে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ এবং সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।