`মধু হই হই' গানে নেচে-গেয়ে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

`মধু হই হই' গানে নেচে-গেয়ে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

`মধু হই হই' গানে নেচে-গেয়ে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

চট্টগ্রাম নগরীর দুই নম্বর গেট এলাকায় `মধু হই হই আঁরে বিষ খাওয়াইলা' গানে নেচে, গেয়ে ও উল্লাস করতে করতে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও ঘটনাটি বেশকিছু দিন আগের বলে জানা গেছে।

গত ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা গেছে- কয়েকজন যুবক গোল হয়ে গাইছেন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গান `মধু হই হই আঁরে বিষ খাওয়াইলা'। কেউ মুখ দিয়ে বাজাচ্ছেন বাঁশি, কেউ করছেন উল্লাস। ঠিক তাদের মাঝখানেই নীল রঙের গেঞ্জি এবং জিন্স প্যান্ট পড়া এক যুবক ঢুলছেন। যার দুই হাত বেঁধে রাখা হয়েছে পাইপের সাথে। মার খেয়ে ভুক্তভোগী যুবকের মাথা ঢলে পড়ে এবং একপর্যায়ে তিনি নিস্তেজ হয়ে পড়েন।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভিডিওটি নগরের দুই নম্বর গেট এলাকার। আর ওই যুবকের নাম শাহাদাত হোসেন (২৪)। যার লাশ গত ১৪ আগস্ট নগরের প্রবর্তক মোড়ের অদূরে বেসরকারি একটি হাসপাতালের সামনে রাস্তা থেকে পুলিশ উদ্ধার করে।

খুনের শিকার শাহাদাত হোসেন নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি থানার পাঁচবাড়িয়া ইউনিয়নের নদনা গ্রামের মিয়া জান ভূঁইয়া বাড়ির মৃত মোহাম্মদ হারুনের ছেলে। তিনি নগরীর কোতোয়ালি থানার বিআরটিসি এলাকার বয়লার কলোনিতে স্ত্রী শারমিন আক্তারের সাথে থাকতেন।

লাশ উদ্ধারের পর গত ১৫ আগস্ট শাহাদাতের চাচা মোহাম্মদ হারুন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। কিন্তু তখনও কেউই জানতেন না শাহাদাতকে এভাবে নির্মমভাবে পিটিয়ে মারা হয়েছে।

মামলার এজাহারে শাহাদাতের চাচা উল্লেখ করেন, গত ১৩ আগস্ট দুপুর দুইটার দিকে কাজের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন শাহাদাত। সারাদিন পর তার স্ত্রী শারমিন সন্ধ্যার দিকে ফোন করলে তিনি জানান, কিছুক্ষণের মধ্যেই বাসায় যাবেন। রাত গভীর হলেও শাহাদাত বাসায় না ফেরায় তাকে ফোন করেন শারমিন। কিন্তু তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।

পরদিন শাহাদাতের চাচা সকাল ৯টার দিকে ফেসবুকে দেখেন, নগরের প্রবর্তক মোড়ের অদূরে বদনাশাহ মিয়া (রহ.) মাজারের বিপরীতে সড়কের পাশে তার ভাতিজার মরদেহ পড়ে আছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়, শাহাদাত হোসেনের মাথা, গলাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর জখমের পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে নগর পুলিশের পাঁচলাইশ জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. আরিফ হোসেন বলেন, গত ১৪ আগস্ট প্রবর্তক এলাকা থেকে শাহাদাত নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তার চাচা বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। সম্প্রতি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, শাহাদাতকে স্টিলের পাইপের সাথে বেঁধে কিছু যুবক গান গেয়ে গেয়ে পেটাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এই ঘটনা আসলে মানা যায় না, খুবই কষ্টকর। আমরা খুব দ্রুত আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করব। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।