পিকনিকের কথা বলে ছাত্রীদের আদালতে নিয়ে সাক্ষ্য দেওয়ান শিক্ষক

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পাবনা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পিকনিকের কথা বলে ছাত্রীদের আদালতে নিয়ে যান শিক্ষক

পিকনিকের কথা বলে ছাত্রীদের আদালতে নিয়ে যান শিক্ষক

পিকনিকের কথা বলে পাবনার চাটমোহর উপজেলার পাচুরিয়া মুক্তিযোদ্ধা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের স্কুলের ছাত্রীদের আদালতে নিয়ে ইভটিজিংয়ের মামলার সাক্ষ্য দেওয়ানোর অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) পিকনিকে নেওয়ার নামে পাবনা আদালতে এ সাক্ষ্য দেওয়ানোর ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি জানাজানি হলে ওইদিন রাতে অভিভাবকদের সঙ্গে শিক্ষকদের হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে বলে জানা যায়।

বিজ্ঞাপন

এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা জানান, সোমবার বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে পাবনার রানা ইকো পার্কে পিকনিকের উদ্দেশে ৩টি বাসযোগে পাবনা শহরে রওনা হন শিক্ষকরা। এরপর প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নিয়ে যান পাবনা আদালতে। সেখানে কয়েকজন মেয়ে শিক্ষার্থীকে আলাদাভাবে ডেকে নিয়ে প্রধান শিক্ষক তার ইচ্ছামতো কথা শিখিয়ে দিয়ে আদালতে জবানবন্দী দিতে বলেন। এসময় জনৈক এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষকের দায়ের করা ইভটিজিং মামলায় সাক্ষ্য প্রদান করান মেয়ে শিক্ষার্থীদের দিয়ে। আদালত প্রাঙ্গণে অনেক সময় অপেক্ষা করায় অনেক ছাত্রছাত্রী ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং অনেকে ভয়ে বাসায় ফোন করে বিষয়টি জানায়। ঘটনাটি অভিভাবকরা জানলে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।

শফিকুল ইসলাম নামে এক অভিভাবক জানান, পিকনিকের জন্য আমার মেয়ের থেকে ২শ টাকা চাঁদা নেওয়া হয়েছে। মেয়ে জানিয়েছিলো তারা রানা ইকো পার্কে যাবে। কিন্তু একে ব্যবহার করে ছাত্রীদের দিয়ে প্রধান শিক্ষক তার ব্যক্তিগত মামলার সাক্ষ্য দেওয়ান. যা অন্যায়।

এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিদ্যালয়ের মেয়েদের ইভটিজিং করার ঘটনায় কয়েকমাস আগে চাটমোহর থানায় আমি একটি অভিযোগ দায়ের করি। বর্তমানে অভিযোগটি পাবনা আদালতে বিচারাধীন। সেই মামলায় সোমবার ১৫ জন মেয়ের আদালতে সাক্ষ্য প্রদানের দিন ধার্য ছিল। পাবনায় মেয়েদের সাক্ষ্য প্রদানের বিষয়টি সব ছাত্রছাত্রীরা জানার পরে তারাও তাদের সহপাঠীদের সঙ্গে পাবনা আদালতে যেতে চায়। ছাত্রছাত্রীরা নিজেরাই ২শ টাকা করে চাঁদা তুলে এদিন তারা পাবনা রানা ইকোপার্কে পিকনিক করার সিদ্ধান্ত নেয়। তারাই বাস ভাড়া করেছে, তারাই সব আয়োজন করেছে। আমি শুধু পিকনিক স্পটে যাওয়ার আগে কোর্টে কয়েকজন মেয়েকে নিয়ে হাজির হয়ে আদালতে সেই মামলার সাক্ষ্য প্রদান করার ব্যবস্থা করিয়েছি। বিষয়টি আমি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করেছিলাম।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মগরেব আলী জানান, আদালতে শিক্ষার্থীদের সাক্ষ্য আছে বলে জানিয়েছিলেন প্রধান শিক্ষক। তবে পিকনিকের কথা বলে এভাবে সব শিক্ষার্থীকে আদালতে নেওয়া ঠিক হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়টির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেদুয়ানুল হালিম জানান, বিষয়টি জেনেছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।