সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর)ভোরে ঢাকার গুলশান থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাবের একটি দল।
বিজ্ঞাপন
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইং পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিম ফেরদৌস।
তিনি বলেন, গত ৪ আগস্ট নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন ছাত্র-জনতার ওপর হামলা, আক্রমণ ও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সাক্ষাৎ হয়েছে। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে তাদের এ সাক্ষাৎ হয়।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে গত ৩০ আগস্ট বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হওয়ার পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। ফোনালাপের সময় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অধ্যাপক ইউনূসকে অভিনন্দন জানান শাহবাজ শরিফ। এ ছাড়া তিনি আশা করেন, দক্ষিণ এশিয়ার এ দুই দেশের মধ্যে সদ্ভাব জনগণের সুবিধার জন্য যথেষ্ট সহযোগিতায় রূপান্তরিত হবে। এ সময় ফোন করার জন্য শাহবাজ শরিফকে ধন্যবাদ দেন ড. ইউনূস।
এদিকে জাতিসংঘের অধিবেশনের ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় বাংলাদেশ সরকারকে ‘পূর্ণ সমর্থনের’ কথা জানিয়েছেন বাইডেন।
বৈঠকে ড. ইউনূস বিগত সরকারের আমলে সব ধরনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সাহসী ভূমিকা ও বাংলাদেশ পুনর্গঠনে তাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা জো বাইডেনকে জানান। অধ্যাপক ড. ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, দেশ পুনর্গঠনে তার সরকারকে অবশ্যই সফল হতে হবে।
এ সময় যেকোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ সরকারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
এছাড়াও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বেশ কয়েকজন সরকারপ্রধান ও বিভিন্ন সংস্থার প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। সংক্ষিপ্ত বৈঠকে বাংলাদেশ-কানাডা সম্পর্ক জোরদার, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তোলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন ড. ইউনূস ও জাস্টিন ট্রুডো।
ঢাকাসহ দেশের ১৬টি অঞ্চলের উপর দিয়ে ৬০ কিমি বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, ঢাকা, ফরিদপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলের উপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিমি বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় লঘুচাপ তৈরি হওয়ায় দেশের চার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখানোর পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
হাঁটতে গেলেই লাগে গায়ে-গায়ে ধাক্কা। দাঁড়ালেও নেই স্বস্তি। ‘নতুন না পুরান’ এমন প্রশ্নে স্বস্তি নেই চায়ের দোকানেও। কাঠফাটা রোদ মাথায় নিয়েও জো নেই একটু একলা থাকার। ছুড়ে আসে প্রশ্ন, ‘ভাই লাগলে বলেন, পাসপোর্ট পাবেন সবার আগে’!
বলছিলাম আগারগাঁওয়ে অবস্থিত ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্টের অফিসের কথা। দালালদের দৌরাত্ম্য এতটাই যে, পাসপোর্ট সংগ্রহের এক লাইন ছাড়া বাকিটা যেন ‘দালাল রাস্তা’। সাহায্যের নামে এগিয়ে আসছেন, বাকপটুতায় হাতিয়ে নিচ্ছেন টাকা।
সরেজমিনে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) পাসপোর্ট অফিসটিতে প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান করে এমন চিত্রেরই দেখা মেলে। এসময় পাসপোর্ট অফিসের সামনের রাস্তা, চা-দোকান, ফটোকপির দোকান, পাসপোর্ট অফিসের মূল ফটকসহ পাসপোর্ট ফাইল জমা দেয়ার জন্য নির্ধারিত নিচতলায়ও চোখে পড়ে দালালদের অবাধ যাতায়াত।
দেখা যায়, পাসপোর্ট অফিসে প্রবেশ করতে গেলেই কোন না কোন দালালের মুখোমুখি হতে হচ্ছে সেবাপ্রার্থীদের। দালাল এসে জিজ্ঞেস করছে, সাহায্য লাগবে কিনা, নতুন পাসপোর্ট না পুরাতন পাসপোর্ট, ডকুমেন্টস ঠিকঠাক আছে কিনা, দ্রুত লাগলে করে দেয়া যাবে, এর মতো নানা প্রশ্ন। অনেকের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে করছে প্রতারণাও।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একটি সংঘবদ্ধ দালাল চক্র আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে আসা সেবাপ্রার্থীদের ফরম পূরণ, ফরম সত্যায়ন, ব্যাংকে ফি জমা, কাগজপত্র ঘাটতি, ভুল বা ভুয়া কাগজপত্র করে দেয়ার জন্য প্রলুব্ধ করে। সব সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়ে হয়রানি করে পাসপোর্টপ্রত্যাশীদের।
অতিরিক্ত ৫ থেকে ৬ হাজার টাকার বিনিময়ে কোন রকম পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই পাসপোর্ট করে দেয়ার প্রস্তাবও দেয় প্রার্থীদের। এভাবে নানা লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে হাতিয়ে নেয় টাকা। প্রলুব্ধ হয়ে হয়রানিতে পড়ে পাসপোর্টপ্রত্যাশীরা।
এমনই একজন দুলাল মিয়া (ছদ্মনাম)। প্রায় সাত বছর ধরে বিবাহিত, তবে পাসপোর্টে পরিবর্তন হয়নি সে স্ট্যাটাস। এবার রিনিউ আবেদনে বৈবাহিক অবস্থা অবিবাহিত হতে পরিবর্তন করে বিবাহিত করার আবেদন করেছেন। কিন্তু নিকাহনামা নিয়ে না আসায় পড়েন ঝামেলায়। তার ফাইল জমা নেননি পাসপোর্ট কর্মকর্তা।
দুলাল মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এক দালাল পাঁচশো টাকা নিয়ে ম্যারিড সার্টিফিকেট দিছে, কিন্তু ভিতরে জমা নিচ্ছে না। বলতেছে নিকাহনামা লাগবে। এখন ঐ দালালকে খুঁজতেছি, পাঁচশো টাকা ফেরত নিতে হইবো’।
পাসপোর্ট রিনিউ করতে এসে পুলিশ ভেরিফিকেশনের কথা বলায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক সেবাগ্রহীতা। তিনি বলেন, ‘আইডি কার্ডের সঙ্গে আমার পাসপোর্টের চৌধুরী বানান কারেকশন করছি। আমার পাসপোর্টের মেয়াদ আছে এই বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এইটাও বলে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবো’।
ঠিক না হলে সমন্বয়ক লাগায় দেয়ার হুমকি দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘মেয়াদ থাকতে থাকতে বানালাম যেন পুলিশ ভেরিফিকেশন না লাগে। আমি এখন পর্যন্ত ইউরোপের ১৪টা দেশ ঘুরছি। এইজন্য আজকে আসছি, তারপর সমন্বয়ক লাগায় দিবোনে’।
ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে আসা এমন আরও কয়েকজন সেবাগ্রহীতার সঙ্গে কথা বললে, তারাও এমন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান। তাদের অনেকেরই অভিযোগ, নতুন সরকার আসছে কিন্তু কোন কিছুই তো ঠিক হচ্ছে না। এখনো আগের মত প্রকাশ্যেই দালাল ঘোরাফেরা করছে, দেখার কেউ নেই। আনসার সদস্য নিজেরাই তো আড্ডা দিচ্ছে দালালদের সঙ্গে, সেখানে আর কী ঠিক হবে!
নাম পরিচয় গোপন রেখে কথা হয় এক দালালের সঙ্গে। পাসপোর্ট সংশোধন করতে দিলে, কয়েক বছর যাবত আটকে আছে, এখন কী করা যায় এমন প্রশ্নে প্রস্তাব দেন এক হাজার টাকা দেয়ার। সে টাকা দিলে সে জানিয়ে দিবে এখন কী অবস্থায় আছে পাসপোর্ট, আর পাসপোর্ট বের করতেই বা কত টাকা লাগবে। তবে অগ্রিম টাকা দিতে না চাইলে সটকে পড়ে সে দালাল।
পরে একই বিষয়ে কথা হয় আরিফ নামের আরেক দালালের সঙ্গে। কাজটি আজকেই করাবো কিনা এমন প্রশ্নে আগামীকাল করার কথা জানালে, কাজটি করে দেয়া যাবে বলে আশ্বস্ত করেন এই দালাল। তবে টাকা লাগবে ১০ হাজার, সময় লাগবে এক সপ্তাহ বলে সাফ জানিয়ে দেন আরিফ। তার কথা, আজ (মঙ্গলবার) যদি সব কাগজপত্র দিয়ে যান তাহলে এক সপ্তাহের মধ্যে সব কাজ হয়ে যাবে। আগামী মঙ্গল বা বুধবার এসে পাসপোর্ট নিয়ে যাবেন।
টাকা কখন দিতে হবে জানতে চাইলে আরিফ বলেন, যখন কাগজ জমা দিবেন, টাকা তখনই দিতে হবে। পাসপোর্ট হাতে পাবার পর টাকা দিতে চাইলে তিনি বলেন, সর্বোচ্চ ১/২ হাজার টাকা এখন কম দিতে পারবেন। বাকি টাকা আজই দিতে হবে। না হলে কাজ হবে না। পরে আগামীকাল করতে চাই জানালে যোগাযোগের জন্য নিজের নাম্বার দিয়ে চলে যান।
এনিয়ে ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের উপ-পরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দালালের কাছে যান কেন? দালাল একেকজনের কাছ থেকে ১০/২০/৪০/৫০ হাজার টাকা নিচ্ছে। আমি যদি ১২০০ লোকের মধ্যে ৩০০ লোক ফেরত দিতাম, ৩০টা লোক ফেরত দিতাম … আমি তো কাউকে ফেরত দিচ্ছি না। ফলে আপনি কেন দালাল ধরে আসবেন’।
দালালরা এসে লাইনে দাঁড় করিয়ে দিয়ে যাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘যাকে দাঁড় করিয়ে দিয়ে যাচ্ছিলো সে কি পঙ্গু? তাকে তো অন্যের সামনে দাঁড় করায়নি, পিছনেই দাঁড় করাচ্ছে তাহলে সে কি পঙ্গু যে সে তার (দালাল) হাত ধরে এসে দাঁড়াতে হবে? যে দালালের মাধ্যমে আসছে তাকে জিজ্ঞেস করেন সে কেন দালালের মাধ্যমে আসছে’।
পরে দালালদের সঙ্গে দায়িত্ব পালনরত আনসার সদস্যরাও জড়িত জানালে তিনি আনসার এপিসিকে ডেকে এনে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। এসময় আনসার এপিসি ফেরদৌস আহমেদ ছবি দেখে দুই আনসার সদস্যকে সনাক্ত করেন। তার মধ্যে একজন ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্য হওয়ায় সেটা ব্যাটালিয়ন আনসারকে জানানোর কথা বলেন। আফজাল হোসেন নামের অন্য আনসার সদস্যকে তাৎক্ষণিক মূল ফটক থেকে সরিয়ে অন্য দায়িত্বে নিয়োজিত করা ও তাকে তিরস্কার করা হবে বলেও জানান ফেরদৌস।
চুয়াডাঙ্গায় পবিত্র সীরাতুন্নবী (সা.) ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে মনোমুগ্ধকর ‘তারুণ্যের গান ও নাশিদ সন্ধ্যা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টা থেকে শুরু হয়ে মধ্যরাত পর্যন্ত শহরের টাউন ফুটবল মাঠে অনুষ্ঠিত এই নাশিদ সন্ধ্যায় হাজারো মানুষ উপস্থিত হন।
জেলার মাদ্রাসা ও কলেজের শিক্ষার্থীরা এ আয়োজন করেন। যেখানে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীদের পরিবেশনায় পুরো অনুষ্ঠানটি সুর ও আধ্যাত্মিকতার এক অনন্য মেলবন্ধন সৃষ্টি করে।
এরআগে বিকেল থেকেই টাউন ফুটবল মাঠে শহর ও আশপাশের এলাকা থেকে শত শত শ্রোতা সমবেত হতে শুরু করেন। এমন এক সুন্দর সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আবহে মাঠের আশেপাশের রাস্তাগুলোতে শতাধিক মুখরোচক খাবারের দোকান নিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা। এই ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে নাশিদ অনুষ্ঠান উপভোগ করতে আসা দর্শকরা খাবারের স্বাদ গ্রহণের পাশাপাশি সংগীতের সুরেও ভাসলেন।
অনুষ্ঠানে মূল আকর্ষণ ছিল ঢাকার জনপ্রিয় কলরব শিল্পী গোষ্ঠীর পরিবেশনা। মুহাম্মদ বদরুজ্জামান, আবু রায়হান, ইলিয়াস আমিন, ইকবাল মাহমুদ, হুসাইন আদনান, তাওহিদ জামিল, সালমান সাদী, আবির হাসান, ইমানুল ফারহান, তাহসিনুল ইসলাম, শাফিন আহমেদ, আহনাফ খালিদসহ অন্যান্য শিল্পীরা নাশিদ পরিবেশন করে দর্শকদের মন জয় করে নেন। তাদের কণ্ঠের সুর আর গভীর আধ্যাত্মিক গানের মধ্যে উপস্থিত শ্রোতারা যেন মুগ্ধ হয়ে যান।
শুধু এই শিল্পীরাই নয়, চুয়াডাঙ্গার স্থানীয় ইশারা শিল্পী গোষ্ঠী, সুরের নহর শিল্পী গোষ্ঠী, রাইয়ান শিল্পী গোষ্ঠী এবং হেদায়াহ টিউন স্টুডিওর পরিবেশনায় বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে এক অপরূপ পরিবেশ বিরাজ করে। এই স্থানীয় গোষ্ঠীগুলোর পরিবেশনায় দর্শকদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো।
নাশিদ পরিবেশনার পাশাপাশি অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃতি করেন অনুষ্ঠানের আয়োজক কমিটির কলেজ প্রতিনিধি এস এম জুবায়ের আহমেদ। কবিতা ও নাশিদের ঝঙ্কারে পুরো মাঠ আন্দোলিত হয়। হাজারো দর্শক সুরের মুগ্ধতায় সবাই মোবাইলের ফ্লাশ লাইট জ্বালিয়ে এবং মাথা ঝাঁকিয়ে তাল মেলান। শহর ও আশপাশের এলাকা থেকে হাজার হাজার দর্শক আনন্দের সঙ্গে নাশিদের মুগ্ধতায় সময় কাটান।
দর্শক শ্রোতাদের মধ্যে এমন এক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা চুয়াডাঙ্গার মানুষদের জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা ছিল। অনুষ্ঠানটি শেষে দর্শকবৃন্দ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানটির সাফল্য কামনা করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইলিয়াস হোসেন ও সালেকিন আহমেদ শোভন।
অনুষ্ঠানটির বিষয়ে আয়োজক কমিটির কলেজ প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী এস এম জুবায়ের আহমেদ বলেন, ‘দেশ এখন নতুন করে স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করছে। আমাদের লক্ষ্য কেবল রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক মুক্তি নয়, বরং নৈতিক ও সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণও। ইসলামি সংস্কৃতি মানুষকে সুন্দর জীবনযাপন এবং সঠিক মূল্যবোধের শিক্ষা দেয়। আমাদের চাওয়া হলো, এই সংস্কৃতি সকলের মধ্যে জাগ্রত হোক, যেন আমরা সঠিক পথের দিশা পাই এবং সমাজ থেকে সকল ধরনের অপসংস্কৃতি দূর হোক। ইসলামি সংস্কৃতি আমাদের শেখায় সহনশীলতা, শান্তি এবং মানবতার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকের এই নাশিদ সন্ধ্যার মূল উদ্দেশ্য ছিল মানুষের মধ্যে ইসলামি মূল্যবোধ এবং আধ্যাত্মিক চেতনা ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা চাই, তরুণ প্রজন্ম ইসলামি সুর আর সংস্কৃতির মাধ্যমে নিজেদের জীবনকে আরও উন্নত করে তুলুক। এই আয়োজনের মাধ্যমে আমরা দেখাতে চেয়েছি যে, সুন্দর সংস্কৃতি আমাদের জীবনকে কেবল বিনোদন নয়, আত্মার খোরাকও দিতে পারে। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে এ ধরনের আরও অনেক আয়োজনের মাধ্যমে আমাদের সমাজ আরও উন্নত হবে এবং নৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হবে।’