চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার বড়হাতিয়ায় গভীর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় সাপের কামড়ে রমজান আলী (২০) নামের এ যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিজ্ঞাপন
নিহত রমজান আলী উপজেলার বড়হাতিয়া ২ নম্বর ওয়ার্ড হাজি পাড়া গ্রামের মৃত ভেট্টা মিয়ার ছেলে।
নিহতের স্ত্রী ময়ূরী আক্তার বলেন, প্রতিদিনের ন্যায় মঙ্গলবার রাতে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। মধ্যরাতে আমার স্বামী চিৎকার দিলে বাড়ির অন্যরাও ঘুম থেকে জেগে উঠেন। সারারাত যন্ত্রণায় কাতরিয়েছিল। সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিষধর সাপের কামড় চিহ্নিত করে মৃত ঘোষণা করেন।
লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ হানিফ বলেন, বিষধর সাপের কামড়ে মৃত্যু হওয়া যুবকের মরদেহ জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন স্বজনরা। আমরা পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশ লাশের সুরতহাল শেষ করেন।
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ডাম্প ট্রাক ও যাত্রীবাহী মাহিন্দ্রা গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও মসজিদের ইমাম নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও সাতজন। তারা ২৫০ শয্যা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কুমারখালী উপজেলার কালুরমোড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার এসআই শহিদুল ইসলাম ও মসজিদের ইমাম মনির হোসাইন (২২)। মনির হোসেন উপজেলার সদকী ইউনিয়নের ঝাউতলা এলাকার বিল্লাল হোসেনের ছেলে। মনির ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং হাফেজ ছিলেন। পাশাপাশি কুমারখালী তেবাড়ীয়া তিন গম্বুজ জামে মসজিদে ইমামতি করতেন।
আহতরা হলেন উপজেলার শিলাইদহের আসাদুল ইসলাম (৬০), চড়চাপড়া গ্রামের মো. আরমান (৬০) ও তার স্ত্রী মালেকা খাতুন (৪৫), শেরকান্দি গ্রামের হাসেন আলী (৬০), খোকসা উপজেলার গোসাইডাঙ্গী গ্রামের মমতাজ বেগম (৪০), ভেড়ামারা উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের মো. রুহুল (১৯) ও রিয়াজুল (৩০)।
প্রত্যক্ষদর্শী হারুন অর রশিদ হারুন বলেন, ট্রাক ও যাত্রীবাহী মাহিন্দ্রা গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে দুর্ঘটনাটি ঘটে। এতে ৯ জন গুরুতর আহত হন। পরে তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে কুষ্টিয়া হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকুল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী মাহিন্দ্রা এবং রাজবাড়ীর থেকে আসা একটি ডাম্প ট্রাক কালুর মোড় এলাকায় পৌঁছালে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাহিন্দ্রা দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং চালকসহ ৯ যাত্রী গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজন মারা যান। ট্রাক ও মাহিন্দ্রা গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
কিশোরগঞ্জে যৌথবাহিনীর দুই দফা অভিযানে প্রায় ১৫ লাখ শলাকা অবৈধ সিগারেট ও প্রায় সাড়ে ১২ লাখ নকল রাজস্ব স্ট্যাম্প জব্দ করা হয়েছে। যার বাজারমূল্য ২১ কোটি ৪৩ লাখ ৩৫ হাজার ৮০৬ টাকা। অনিয়মের অভিযোগে ‘হেরিটেজ টোব্যাকো’ ও ‘তারা ইন্টারন্যাশনাল’ নামে দুই প্রতিষ্ঠানকে চার লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পরে প্রতিষ্ঠান দুইটিকে সিলগালা করে দেওয়া হয়।
দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে অবৈধভাবে কারখানা স্থাপন করে পরিচালনা করছিল দুই টোব্যাকো কোম্পানি৷ কর ফাঁকি দিয়ে এসব সিগারেট বাজারজাত করার পরিকল্পনা ছিল তাদের। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও স্থানীয় প্রশাসনের অনুরোধে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত পর্যন্ত কুলিয়ারচর ও ভৈরবে অভিযান চালায় যৌথবাহিনী।
অভিযানের নেতৃত্ব দেন লে. কর্নেল ফারহানা আফরিন। অভিযানে দুইটি কারখানা থেকে ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ৮২০ শলাকা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের অবৈধ সিগারেট এবং ১২ লাখ ২৫ হাজার অবৈধ ট্যাক্স স্ট্যাম্প জব্দ করা হয়। যার বাজার মূল্য ২১ কোটি ৪৩ লাখ ৩৫ হাজার ৮০৬ টাকা।
গতকাল দুপুরে কুলিয়ারচরে হেরিটেজ টোব্যাকো কোম্পানিতে করা অভিযানে জাল ব্যান্ডরোল ও ব্যবহার করা ব্যান্ডরোলের সন্ধান পায় যৌথ বাহিনী। এছাড়াও কারখানার বর্জ্য যায় নদীতে। যার মাধ্যমে নদীতে দূষণ ছড়িয়ে পড়ছে। নকল পণ্য উৎপাদনের অভিযোগে হেরিটেজ টোব্যাকো কোম্পানিকে ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া নকল সন্দেহে ১ লাখ ৬০ হাজার শলাকা সিগারেট, ১১ লাখ ৭২ হাজার অবৈধ রাজস্ব স্ট্যাম্প ও ৭ হাজার কেজি সেলুলোজ অ্যাসিটেট জব্দ করা হয়।
জানা যায়, হেরিটেজ টোব্যাকো ব্যান্ডরোল নকল করার মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ সিগারেট উৎপাদন করছে। প্রতিষ্ঠানটি কোনো অনুমোদন ছাড়াই কারখানায় বয়লার মেশিন স্থাপন করে সিগারেট উৎপাদন করছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি ‘টোব্যাকো প্রসেসিং প্ল্যান্ট’তৈরি করেছে। এ ধরনের প্ল্যান্ট তৈরি করতে কলকারখানা কর্তৃপক্ষের বিশেষ অনুমোদনের প্রয়োজন।
এর আগেও হেরিটেজ টোব্যাকোকে পরিবেশ ছাড়পত্রের জন্য সিলগালা করা হয়েছিল। তখন কারখানায় কোনো ধরনের বয়লার বা কোনো ধরনের বিশেষ যন্ত্রপাতি স্থাপন করতে পারবে না বলে জানানো হয়। তারপরও প্রতিষ্ঠানটি প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মেশিন স্থাপন, ব্যান্ডরোল জালিয়াতি করে বাজারজাতকরণ ও পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করছে।
অভিযানে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সামিউল ইসলাম, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট নরসিংদীর বিভাগের উপকমিশনার সোহেল রানা, কিশোরগঞ্জ জেলার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মতিন।
এর আগে, বেলা ১১টার দিকে ভৈরব উপজেলার শম্ভুপুরে তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো কোম্পানিতে যৌথ বাহিনী অভিযান পরিচালনা করে। ভৈরব উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিদওয়ান আহমেদ জানান, ওই কারখানা জাল ব্যান্ডরোল পাওয়ায় দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
যৌথ বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, তারা ইন্টারন্যাশনালের কারখানার অবস্থান নীরব ও জনশূন্য এলাকায়। প্রতিষ্ঠানের মালিক লিটন মিয়া নানা কৌশলে রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ আছে। অভিযানে ৫৩ হাজার অবৈধ রাজস্ব স্ট্যাম্প এবং নকল সন্দেহে ১৩ লাখ ১৯ হাজার ৮২০ শলাকা সিগারেট জব্দ করা হয়। পরে নকল পণ্য উৎপাদনের অভিযোগে তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো কোম্পানিকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানে সময় উপস্থিত ছিলেন র্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পের কমান্ডার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, ভৈরব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহীন।
ভৈরব উপজেলার ভারপ্রাপ্ত ইউএনও রিদওয়ান আহমেদ বলেন, ‘কোম্পানিটি জাল ব্যান্ডরোলের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এসেছে। অভিযানে বিপুল পরিমাণ সিগারেট ও ব্যান্ডরোল জব্দ করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে এ বৈঠক হয়। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে একটি পোস্ট করা হয়।
এতে বলা হয়, দুই নেতার আলোচনায় বিভিন্ন পর্যায়ে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা পুনরুজ্জীবিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
জাতিসংঘের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পরে অধিবেশনে যোগ দেন তিনি।
অধিবেশনের ফাঁকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। সংক্ষিপ্ত বৈঠকে বাংলাদেশ-কানাডা সম্পর্ক জোরদার, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তোলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন তারা।
বৈঠকে সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেয়ায় অধ্যাপক ইউনূসের প্রশংসা করেন জাস্টিন ট্রুডো। জানান, বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পাশে থাকবে কানাডা।
এ সময় অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বিগত সরকার নানাভাবে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করেছে। বৈঠকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের কানাডায় আরও বেশি ভিসা দেয়ার অনুরোধ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
এরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় বাংলাদেশ সরকারকে ‘পূর্ণ সমর্থনের’ কথা জানিয়েছেন বাইডেন।
বৈঠকে ড. ইউনূস বিগত সরকারের আমলে সব ধরনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সাহসী ভূমিকা ও বাংলাদেশ পুনর্গঠনে তাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা জো বাইডেনকে জানান। অধ্যাপক ড. ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, দেশ পুনর্গঠনে তার সরকারকে অবশ্যই সফল হতে হবে।
এ সময় যেকোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ সরকারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।