দুর্গাপূজার প্রস্তুতি: রঙ-তুলির আঁচড়ে সাজছে প্রতিমা

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা ২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা জেলার সাভার ও ধামরাইয়ে দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে প্রতিমা। বিভিন্ন রঙের ছোঁয়ায় প্রতিমা হয়ে উঠছে আরও জীবন্ত। ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা। তবে এ বছর পূজার সংখ্যা কমে আসায় শিল্পীদের আয়ও কিছুটা কমেছে বলে জানান তারা।

আগামী ২ অক্টোবর দুর্গা পূজার মহালয়া ও ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে এরইমধ্যে মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে ব্যাপক কর্মব্যস্ততা।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্য বলছে, এ বছর ঢাকার সাভার ও ধামরাইয়ে মোট ৩৭৯টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে ধামরাই পৌরসভায় ৪২টি, ধামরাইয়ের ১৬ ইউনিয়নে ১৪৬টি, সাভার পৌরসভায় ৪০টি, সাভারের ১২ ইউনিয়নে ৭১টি ও আশুলিয়াতে ৮০টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

সরেজমিনে সাভার ও ধামরাইয়ের বিভিন্ন মণ্ডপে ঘুরে দেখা যায় শিল্পী ও কারিগরদের ব্যস্ততা। ধামরাইয়ের গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের বারবাড়িয়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরে ঢুকতেই দেখা গেল, মণ্ডপজুড়ে রঙের ছড়াছড়ি। নানান পাত্রে রাখা হয়েছে লাল, নীল, সাদা, কালোসহ বিভিন্ন রঙ। শিল্পীরা ছোট ছোট পাত্রে করে সেই রঙ তুলিতে করে রঙিন করে তুলছেন মাটির প্রতিমা।

এই মন্ডপটি গড়ে তোলা হয়েছে বারবাড়িয়া ঠাকুরবাড়িতে। গেল প্রায় ২৫-৩০ বছর ধরে প্রতি বছর নিরবচ্ছিন্নভাবে পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ বছর এই মণ্ডপে প্রতিমা তৈরি করেছেন ক্ষিতীশ পাল ও তার শিস্য রাজন পাল। এবারই প্রথম নিজে প্রতিমা বানিয়েছেন রাজন পাল। তার কাছে কাজটি অনেকটাই দুর্গার কৃপা লাভের। বললেন, মায়ের প্রতিমা বানানো শিখেছি। এবার নিজে বানালাম। এই প্রতিমায় পূজা হবে, ভাবতে ভালো লাগে, শান্তি লাগে।

পাশেই দুর্গা প্রতিমায় রঙের প্রলেপ দিচ্ছিলেন ক্ষিতীশ পাল। প্রায় ৩৫ বছর ধরে প্রতিমা বানানোর কাজ করছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব এই শিল্পী। তবে এ বছর আয় কিছুটা কম বলে জানালেন তিনি। বলেন, গত বছর সাতটি প্রতিমা বানিয়েছিলাম। তবে এই বছর পাঁচটি বানিয়েছি। এই মৌসুমে তো সবচেয়ে বেশি আয় হয়। কিন্তু দেশের পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় অনেকেই পূজা বাদ দিয়েছেন। এ কারণে আয়ও কমে গেছে। একই কথা বললেন ধামরাইয়ের প্রতিমা শিল্পী খোকন চন্দ্র পাল, সাভারের দীপক পালসহ আরও কয়েকজন শিল্পী।

এদিকে নিরাপত্তা শঙ্কা ও সবকিছুর দাম বৃদ্ধির কারণে আয়োজন কিছুটা সীমিত করেছেন আয়োজকরা। বারবাড়িয়া ঠাকুরবাড়ির পূজার অন্যতম আয়োজক দ্বিজেন চক্রবর্তী বলেন, আমরা এখানে ২৫-৩০ বছর ধরে পূজা করছি। প্রতি বছর ব্যাপক জাকজমক উৎসবের মধ্য দিয়ে পূজা উদযাপন করা হয়। তবে এবার কিছুটা দুশ্চিন্তা রয়েছে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী যথাযথ নিরাপত্তা দিলে সবকিছু ঠিকভাবে শেষ করতে পারব বলে আশা করছি।