‘সরকার চলে গেছে, চোরতো সব যায় নাই’
‘সরকার (আওয়ামী লীগ) চলে গেছে কিন্তু চোর তো আর সব নিয়া যায় নাই। এখনো সবই হচ্ছে, সিন্ডিকেট হচ্ছে, চাঁদাও উঠাইতেছে। আগে হয়তো এক টাকা নিতো, এখন পঞ্চাশ পয়সা নিচ্ছে। আগে খোলাখুলি খাইতো, এখন গোপনে খাচ্ছে। কিন্তু সব কিছু আগের মতোই চলছে'
কথাগুলো বলছিলেন শেওড়াপাড়া কাঁচা বাজারের ডিম ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম। ১০ বছরের অধিক সময় ধরে তিনি এখানে ডিমের ব্যবসা করেন। তার কাছে ডিমের দাম বাড়ার কারণ চাইলে এইভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) বাজারটিতে গিয়ে দেখা যায়, এক ডজন ফার্মের মুরগীর ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা করে। যা গত সপ্তাহেও ছিল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা ডজন।
এনিয়ে হেনা ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারি আব্দুল হাকিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, চাহিদা বাড়ার কারণে দাম বেড়ে থাকতে পারে। কারণ সঠিক বলতে পারবো না। আমরা পাইকারি বাজার থেকে যেভাবে কিনে আনি, সেভাবেই বিক্রি করি।
তার বিক্রির পরিমাণ বাড়ছে জানিয়ে এই বিক্রেতা বলেন, আগে যেখানে আমি দিনে ২৫০০ ডিম বিক্রি করতাম এখন সেখানে বিক্রি করছি ৪০০০ হাজার। মাছের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে ডিমের দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। একই সঙ্গে কর্পোরেট উৎপাদকদেরকে কারসাজিকে দায়ী করেন তিনি।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর বাজারে ডিমের দাম স্বাভাবিক রাখতে ডিমের উৎপাদন, পাইকারি ও খুচরা দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। সে দেশ অনুযায়ী উৎপাদক পর্যায়ে প্রতিটি ডিম ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ১১ টাকা ৮৭ পয়সা দাম নির্ধারণ করা হয়। তবে তারচেয়েও কমপক্ষে ডিম প্রতি দুই টাকা বেশি দিতে হচ্ছে ভোক্তাদের।
ডিমের এমন বাড়তি দাম নিয়ে ক্রেতা সুরুজ তালুকদার বলেন, গত সপ্তাহেও ডিম কিনেছি ১৬০ টাকা ডজন, এখন এসে দেখি আরও দশ টাকা বেড়ে গেছে। এখন তো কমার কথা, তাহলে বাড়ছে কেন? সরকারের উচিত নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যে নজর দেয়া।
ইব্রাহীমপুর কাঁচা বাজারে কথা হয় গৃহিনী তাছলিমা খানের সঙ্গে। তিনি বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে আজকে এসে দেখি ডিমের দাম বেড়ে গেছে। এখন দাম বাড়লেও যেহেতু খেতে হবে তাই বাড়তি দামেই কিনতে হবে। ক'দিন আগেই খবরে দেখলাম যে, ইন্ডিয়া থেকে ডিম আসতেছে। আবার এখন দেখি দাম বেড়ে গেছে। কিছুই বুঝি না কীভাবে কি হয়।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দামের এমন উর্ধ্বমুখীতায় ক্ষোভ জানান অধিকাংশ ভোক্তা। দ্রব্যমূল্য নিয়ে যেন সরকার বাড়তি নজর দেন সে দাবিও ভোক্তাদের।