চট্টগ্রামের দুই ‘ভিআইপি’ রেস্তোরাঁর খাবারে খেলছিল তেলাপোকার দল
চট্টগ্রাম নগরীর প্রবর্তক মোড় এলাকার 'ইকুইটি জিএফ ফরচুনা মলটি’ অন্যতম ভিআইপি শপিং মল হিসেবে পরিচিত। সেখানের ফুড কোর্টে তাই উচ্চবিত্তের আনাগোণাই থাকে বেশি। পঞ্চম তলায় অবস্থিত সেই ফুড কোর্টে ঢুকে বিস্মিত হয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। খাবার তৈরির কক্ষে ঢুকে-দুগন্ধের কারণে তাদের যেন নাক বন্ধ করার অবস্থা, ফ্রিজ খুলে বাসি খাবারের গন্ধে তো কারও কারও বমি করার দশা হলো।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় ও চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা পাঁচলাইশ থানার একটি টিমের সমন্বয়ে এই তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
‘বিরিয়ানি বক্স কাবাব অ্যান্ড ক্যারি' নামের একটি ফাস্ট ফুড প্রতিষ্ঠানের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাদ্য তৈরি ও খাবারে অননুমোদিত কেমিক্যাল ব্যবহারের অভিযোগেই মূলত অভিযানে গিয়েছিলের অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। সেখানে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় রেস্তোরাঁটিকে ৮ হাজার টাকা জরিমানা করেন তাঁরা। পরে আরও তিনটি রেস্তোরাঁয় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এর মধ্যে নাইনটিন ক্যান্ডেল নামের ফাস্ট ফুডের প্রতিষ্ঠানটি বাসি রাইস এবং ভেজিটেবল বিক্রির উদ্দেশ্য সংরক্ষণ করছে। এছাড়া রেস্তোরাঁটিতে মেদছাড়া চিজ, ভাজা পোড়া পুরনো তেল ব্যবহার, রাইস সেদ্ধ করার পানিতে তেলাপোকা পাওয়া যায়। এর প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটিকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এরপর ক্রাঞ্চ নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালালে দেখা যায় বাসি খাবার ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হয়েছে। আবার কর্নফ্লাওয়ারের মধ্যে জীবন্ত একাধিক তেলাপোকা, পচা আলু ফ্রাই করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এসব অভিযোগে রেস্তোরাঁটিকেও ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এর পর জিফুড নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানে মেয়াদবিহীন পাউরুটি ও ঘি খাবার তৈরিতে ব্যবহার এবং বাসি চিকেন ফ্রিজে রাখায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন অধিদপ্তরের উপপরিচালক ফয়েজ উল্যাহ, সহকারী পরিচালক নাসরিন আক্তার, রানা দেব নাথ ও মো. আনিছুর রহমান।
অধিদপ্তরের উপপরিচালক ফয়েজ উল্যাহ উপরের বিষয়গুলো নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, শপিংমলটি ভিআইপি এলাকায় অবস্থিত। এখানে উচ্চবিত্তের মানুষ কেনাকেটা ও খাবার খেতে আসেন। আমরা চারটি রেস্তোরাঁয় অভিযান পরিচালনা করি। এর মধ্যে দুটোতে আমাদের মনে হলো বেশ ভয়াবহ। ওই দুই রেস্তোরাঁয় তেলাপোকা খাবারে সরাসরি বিচরণ করছিল। তিন চারদিনের বাসি খাবার তো আছেই। এসব অভিযোগে ৪টি প্রতিষ্ঠানে মোট ১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করে ভবিষ্যতে যেন এমন অপরাধ সংগঠিত না হয় সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। জনস্বার্থে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এ তদারকি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।