দুদকের জালে লক্ষ্মীপুর আওয়ামী লীগের দুই নেতা

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

দুদকের গোয়েন্দা জালে লক্ষ্মীপুর আওয়ামী লীগের দুই নেতা/ছবি: সংগৃহীত

দুদকের গোয়েন্দা জালে লক্ষ্মীপুর আওয়ামী লীগের দুই নেতা/ছবি: সংগৃহীত

লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন এবং লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন লিকার বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে।

এমন অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন লক্ষ্মীপুর আওয়ামী লীগের এ দুই নেতা।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পাওয়ায় প্রধান কার্যালয় থেকে তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই এ সংক্রান্ত কাজে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে বলে সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

অভিযোগের বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদক সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন ২০২১ সালে নির্বাচনী হলফনামায় বছরে আয় ৩৬ লাখ ১০ হাজার ২৯০ টাকা এবং ১ কোটি ৪০ লাখ ৪৬ হাজার ৮৬৮ টাকার সম্পদ দেখিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আয়কর রিটার্নে দাখিলকৃত সম্পদের তথ্য অনুযায়ী তার মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ১৩ লাখ ৯১ হাজার টাকা।

তবে দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধান সূত্রে জানা যায়, নয়ন লক্ষ্মীপুর মহিলা কলেজ রোডের ১০ শতাংশ জমির ওপর পাঁচতলা ভবন সংশ্লিষ্ট এলাকায় ৪০-৫০ শতাংশ জমি ক্রয় করেন এবং ধানমন্ডিসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে তার একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে। সব মিলিয়ে তার ঘোষিত সম্পদের বিবরণের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি সম্পদের খোঁজ মিলেছে দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে।

দুদক জানায়, নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন টাকার বিনিময়ে নিজস্ব ব্যক্তিদের টেন্ডার পাইয়ে দিতেন এবং বাজার দখল, বাসস্ট্যান্ড থেকে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চাঁদা তুলতেন। তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে অনিয়ম ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগে প্রভাব খাটিয়ে নিজ ও তার পক্ষের অন্য ব্যক্তিবর্গের নামে এবং তার ওপর নির্ভরশীলদের নামে প্রচুর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন।

অন্যদিকে লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান ফরিদা ইয়াসমিন লিকা ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রভাব খাটিয়ে নিজ নামে ও পরিবার পরিজনের নামে অবৈধভাবে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। ২০২২ সালে মহিলা সদস্য পদের নির্বাচনের জন্য দাখিলকৃত নির্বাচনী হলফনামায় তার অতি সামান্য পরিমাণ সম্পদ থাকার তথ্য পাওয়া যায়। কিন্তু তিনি নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিজ নামে এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের নামে ঢাকায় একাধিক ফ্ল্যাট ও প্লট থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

ফরিদা ইয়াসমিন লিকা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিজ ও তার ওপর নির্ভরশীলদের নামে প্রচুর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন মর্মে জানা যায়। এছাড়াও বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন মর্মে গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সত্য পরিলক্ষিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।