‘রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র আ. লীগ সরকারের সাদা হাতি’
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সাবেক সরকারের সব থেকে বড় সাদা হাতি বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি সব থেকে বড় অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধন করেছে। বিগত সরকার দেশকে লুটপাটের আখড়ায় পরিণত করেছে যার কারণে রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ঢুকে গেছে।
সেন্টার ফর গভার্নেন্স স্টাডিজের (সিজিএস) উদ্যোগে আয়োজিত ‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংলাপ’ শীর্ষক শনিবার (৫ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর হোটেল আগ্রাবাদে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংলাপে অতিথি আলোচক হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক হিসেবে ছিলেন সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান। এছাড়াও শিক্ষক-শিক্ষার্থী, আইনজীবী, রাজনীতিক, শিল্প উদ্যোক্তা, নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যমকর্মী, আধিকারকর্মী, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, নারী সংগঠক, সেচ্ছাসেবীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের পেশাজীবীরা মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে সংস্কার বিষয়ে তাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত জানান।
ড. মইনুল ইসলাম সংবিধান প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য স্থাপন করার কথা উল্লেখ করেন। তিনি মনে করেন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও ভোটের মাধ্যমে হওয়া কাম্য। এই প্রসঙ্গে তিনি ফরাসি সংবিধানের উদাহরণ দেন। তিনি সংবিধানকে দ্বিকক্ষীয় কাঠামোতে রূপান্তর করার পরামর্শ দেন। এছাড়াও সংসদের উচ্চকক্ষে সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব করার কথা উল্লেখ করেন।
ড. মইনুল দুদককে সংস্কার এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান করার দাবি জানান। পাশাপাশি স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন করা গেলে সংস্কারের অনেকটা পথ আগানো যাবে বলেও মন্তব্য করেন। নারীদের জন্য এক তৃতীয়াংশ আসন বরাদ্দ রাখার মতামতও দেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক প্রফেসর নিজাম উদ্দিন আহমদ বলেন, সংবিধান পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে বলেন মৌলিক অধিকার রক্ষা করতে হবে। নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ভারসাম্য স্থাপন করার মাধ্যমে সংবিধানের সংস্কার করা সম্ভব। কারণ নির্বাচনের পর যে দল ক্ষমতায় আসে তাদের মধ্যে পরিবর্তন করার প্রবণতা থাকে। নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার হলে সকল ব্যবস্থার সংস্কার হওয়া সম্ভব। সংবিধান সংস্কারের কাজটি সফল করার জন্য সকলের ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরি।
সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান বলেন, ফলাফল তাৎক্ষণিকভাবে দৃশ্যমান না হলেও একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। শেষ সরকার ব্যর্থ হতে পারে, তবে এটি সামগ্রিকভাবে জাতির ব্যর্থতা না। জনগণকে গণতান্ত্রিক দেশ গঠনে আশাবাদী এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে হবে। এই সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সকল সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের একজন তার মতামত দিয়ে বলেন, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি দূর করা এবং সমাজে সংবিধানের সুষ্ঠু প্রতিফলনই হতে পারে নতুন সংবিধানের সার্থকতা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী শিক্ষার মান উন্নয়ন, গবেষণার কাজে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করা, কারিগরি শিক্ষার প্রসার বাড়ানোর কথা বলেন। এছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার আদিবাসী গোষ্ঠীদের প্রতিনিধিত্ব করে একজন দর্শক নিজের মতামত রাখেন।