ঝুপড়ি ঘরে বৃদ্ধা রিজিয়া বেগমের জীবনযুদ্ধ

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, বরিশাল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের খালের পাড়ে একটি ছোট্ট ঝুপড়ি ঘর। সেখানেই ৭০ বছরের বৃদ্ধা রিজিয়া বেগমের জীবন কাটছে অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্টে। স্বামী মোসলেম আলী হাওলাদারের মৃত্যুর পর বিয়ে না করে একমাত্র কন্যা সন্তান নিয়ে কোনো রকমে দিন পার করছিলেন তিনি। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে মেয়েও সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ফলে বৃদ্ধ মা আজ একাকী, বিধ্বস্ত ঘরে বেঁচে থাকার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।

গত ২০ বছর ধরে ভিক্ষা করেই কোনো রকমে ভাত জুটছে রিজিয়ার। সকাল হলে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে বাড়ি বাড়ি ছুটে বেড়ান তিনি। কিন্তু নিয়মিত মেলে না সহায়তা। কোনোদিন ভিক্ষার চাল না পেলে সেই দিন অনাহারে কাটাতে হয়। তার ঝুপড়ি ঘরটিও ধ্বংসের মুখে; ছাউনির উপরটা ভাঙা, সামান্য বৃষ্টিতেই ঘরে পানি জমে যায়। সামনের ও পিছনের অংশ খোলা থাকায় বৃষ্টির সময় পলিথিন টাঙিয়ে ঝড়-বৃষ্টি সামলাতে হয়।

বিজ্ঞাপন

রিজিয়া বেগমের জীবনের সবচেয়ে বড় দুঃখ, সরকারি সহায়তার আবেদন করেও এখনও পর্যন্ত কোনো ঘর পাননি তিনি। বহুবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে ঘর চেয়েছেন, কিন্তু কেউই তার দুর্দশা মেটাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেননি। এক বছর আগে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান বাবু কিছু টিন দিয়ে একটি ছাপড়ার ঘর তৈরি করে দিয়েছিলেন, কিন্তু ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে সেই ঘরটিও উড়ে গেছে।

একাকী, অসহায় রিজিয়া বেগম আজ ভেঙে পড়েছেন। তার এই মানবেতর অবস্থায় কোনো খোঁজখবর নেয়ার লোক নেই। একটি ঘর তৈরি করে দেয়ার জন্য বিত্তশালীদের কাছে আকুতি জানিয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালে রিজিয়া বেগমের ঘর ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পরে তাকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছিল। তবে নতুন করে তার মাথা গোঁজার ঠাঁই তৈরি করার জন্য নিজের বেতন থেকে ১০ হাজার টাকা সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।