চট্টগ্রামের পূজা মণ্ডপে ইসলামিক গান পরিবেশনা! সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা-সমালোচনা
চট্টগ্রামের একটি পূজা মণ্ডপে ‘ইসলামিক গান’ গাওয়া নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা হচ্ছে। নগরীর জেএমসেন হলের পূজা মণ্ডপে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি নামের একটি ইসলামিক গানের দল ওই গান পরিবেশন করে। সেই গানের ভিডিও পরে ফেসবুকে অনেকে শেয়ার করেন।
পূজা উদযাপন কমিটির এক নেতার আমন্ত্রণে সংগঠনটি ওই পূজা মণ্ডপে গান করতে যায়। তবে গান গাওয়ার পরে সনাতন ধর্মের মানুষদের মধ্যে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। তাঁরা ওই সংগঠনটিকে জামায়াত ইসলামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে দাবি করছেন। যদিও জামায়াত জানিয়েছে, তারা এই গান করার বিষয়ে কিছুই জানেন না, গানের দলটিও তাদের কোনো অঙ্গ সংগঠন নয়।
প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে ওই গানের দলের ছয় সদস্য গান পরিবেশন করতে মঞ্চে ওঠে। সংগঠনটি শাহ্ আবদুল করিমের লেখা বিখ্যাত গান ‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’ এবং চৌধুরী আবদুল হালিমের লেখা ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম, বিশ্ব মানুষের কল্যাণে স্রষ্টার এই বিধান’-শীর্ষক গান দুটি পরিবেশন করে। এর মধ্যে শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম, বিশ্ব মানুষের কল্যাণে স্রষ্টার এই বিধান-গানটির ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম নগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল বলেন, ‘আমাদের যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তের অনুমতি নিয়ে ওই গানের দলটি পূজা মণ্ডপে এসে গান পরিবেশ করেছে বলে জেনেছি। তবে ওই সময় আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না।’ সংগঠনটি জামায়াতের কিনা এমন প্রশ্নে হিল্লোল সেন উজ্জ্বল বলেন, ‘এই বিষয়ে আমার জানা নেই।’
চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি-র সভাপতি সেলিম জামানও দাবি করেছেন পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তের আমন্ত্রণেই তাদের একটি দল পূজা মণ্ডপে গান করতে গিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘পূজা উদযাপন পরিষদের সজল বাবু আমাদের দাওয়াত দিয়েছিলেন। তিনি ফোন করে বলেন ‘‘আপনারা একটু আসেন। আপনাদের একটু ফ্লোর (সুযোগ) দেব। কিছু দেশাত্মবোধাক গান গাইবেন।’’ সে আমন্ত্রণে গিয়ে আমাদের দলটি দুটি সম্প্রীতির গান করে। কিন্তু এটি নিয়ে একটা পক্ষ প্রচারণা চালাচ্ছে ষড়যন্ত্র করতেই আমরা গান করতে গিয়েছি। আমরা তো জোরপূর্বক কিছুই করিনি। দাওয়াত পেয়েই গিয়েছিলাম।’
চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি জামায়াতের কোনো গানের দল কিনা এমন প্রশ্নে সেলিম জামান বলেন, ‘এটি জামায়াতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো সংগঠন নয়। শুদ্ধ সাংস্কৃতিক চর্চার উদ্দেশে ২০১৫ সালে আমাদের গানের দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়।’
তবে এই বিষয়ে সজল দত্তের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাঁর নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
এদিকে গানের দলটির সঙ্গে জামায়াতকে জড়িয়ে ফেসবুকে অনেকে লেখালেখি করলে এই বিষয়ে সংগঠনটি তাঁদের বক্তব্য স্পষ্ট করে।
মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ এই বিষয়ে বলেন, ‘এই গানের দলের সঙ্গে জামায়াতের কোনো সম্পর্ক নেই। গান করার সময় জামায়াতের কেউও অনুষ্ঠানস্থলে ছিলেন না।’