মৃত্যুর কাছে হার মানলেন আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থী কাউসার
দুই মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা গেলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত কাউসার মাহমুদ।
রোববার (১৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাউসার মাহমুদ শাহাদাত বরণ করেন।
কাউসার লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের আব্দুল মোতালেবের ছেলে। আব্দুল মোতালেব নগরের চট্টগ্রাম কর্মাস কলেজ রোডে দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে থাকেন।
মোগলটুলীতে তার মুদির দোকান রয়েছে। ছেলে কাউসার মাহমুদ বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির বিবিএ বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।
কাউসার মাহমুদের বাবা আব্দুল মোতালেব গণমাধ্যমকে জানান, রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার সিএমএইচ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাউসার মাহমুদ শাহাদাত বরণ করেন। সোমবার দুপুর ১২টা-সাড়ে ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার জানাজা হবে।
সেখান থেকে মরদেহ চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে সোমবার রাতে আব্দুর রহমান মাতব্বর জামে মসজিদে একটি জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে মসজিদের পাশে কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
গত ৪ আগস্ট নগরের কোতোয়ালি থানার নিউমার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ আহত শিক্ষার্থী কাউসার মাহমুদকে প্রাথমিকভাবে আগ্রাবাদ ইসলামী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় একই হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র বা ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়।
পরে গত ২২ সেপ্টেম্বর আহত শিক্ষার্থী কাউছার মাহমুদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। আইসিইউতে থাকাকালীন তার শারীরিক অবস্থার পুনরায় অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম সেনানিবাসকে বিষয়টি জানায়।
২৮ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অফিসিয়াল পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে জানানো হয়, চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী কাউসার মাহমুদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে আগের দিন তাকে চট্টগ্রাম সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়।
পরে চট্টগ্রাম সিএমএইচের সহযোগিতায় ২৪ পদাতিক ডিভিশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় আর্মি অ্যাভিয়েশনের হেলিকপ্টারে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা সিএমএইচে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে স্থানান্তর করা হয়।
রোববার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে জুলাই আন্দোলনে অংশ নেন চট্টগ্রাম বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী কাউসার মাহমুদ। উত্তাল সেই আন্দোলন চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ছোড়া গুলি তার শরীরে লাগে। দীর্ঘদিন লড়াই করে ঢাকার সিএমএইচে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাউসার মাহমুদ শাহাদাত বরণ করেন।