পুকুর থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার , স্বামী-ভাসুর আটক

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,লক্ষ্মীপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

লক্ষ্মীপুরে পারিবারিক কলহের জেরে ফাতেমা বেগম (২২) নামে এক গৃহবধূকে হত্যা করে মৃতদেহ পুকুরে ফেলে দেয়া হয়।

এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে তার স্বামী রাজু (২৫) ও ভাসুর বাবলুকে (২৭) গাছের সাথে বেঁধে রাখে শ্বশুর বাড়ির লোকজন। পরে তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পুলিশ তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৪ অক্টোবর) ভোর রাতে দিকে সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদনগর গ্রামের ভিকটিম ফাতেমা বেগমের বাবার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। তার মৃতদেহ মর্গে পাঠানো হচ্ছে।

ফাতেমা মোহাম্মদ নগর গ্রামের মৃত সাইফুল্লাহ মওলানার মেয়ে। তাদের সংসারে রুবি নামে চার বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে।

অভিযুক্ত রাজু একই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মাইজের বাড়ির মোসলেহ উদ্দিনের ছেলে। সে পেশায় সিএনজি অটোরিকশা চালক। তার আরও এক স্ত্রী রয়েছে। ফাতেমা তার প্রথম স্ত্রী।

ফাতেমার স্বজনদের অভিযোগ, যৌতুকের জন্য নির্যাতন করেই ফাতেমাকে হত্যা করা হয়ছে। পূর্বেও তাকে ব্যাপক নির্যাতন করা হতো।

বাড়ির লোকজন জানান, ভোরে বাড়ির পাশের পুকুরের পানিতে ফাতেমার মৃতদেহ পাওয়া যায়। মৃত্যুর জন্য তার স্বামী রাজুকে সন্দেহ করা হচ্ছে।

ফাতেমার বড় বোন রাবেয়া আক্তার বলেন, ৫ বছর পূর্বে আমার বোনের সাথে রাজুর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমার বোনকে জ্বালাতন করতো। যৌতুক চাইতো। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে জমি বিক্রি করে তাকে বিদেশ পাঠানো হয়। এক মাসের মাথায় চলে এসে আমার বোনকে নির্যাতন করে।

ফাতেমার বড় ভাই মো. আবদুল্লাহ বলেন, প্রায় ১৫ দিন থেকে আমার বোন ও তার স্বামী আমাদের বাড়িতে থাকতেছে। সোমবার ভোরে ঘরের পাশের একটি পুকুরে আমার বোনের মৃতদেহ পাওয়া যায়। ঘরে তারা দুইজন ও তাদের মেয়ে ছিল। আমার বোনকে তার স্বামীই হত্যা করে মৃতদেহ পুকুরে ফেলে দেয়। তার গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

তিনি দাবি করে বলেন, বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করতো। টাকা দিয়ে বিদেশ পাঠাই। এরপরেও সংসারে শান্তি ছিল না। কয়েক মাস আগে রাজু অন্যত্র বিয়ে করে। এনিয়ে তাদের সংসারে অশান্তি আরও বেড়ে।

স্থানীয় নারী ইউপি সদস্য তাজ নাহার বেগম বলেন, ফাতেমার মৃতদেহ বাড়ির পাশের পুকুরে পাওয়ার সংবাদ শুনে আমি তাদের বাড়িতে আসি। হত্যার অভিযোগে তার স্বামী রাজুকে বাড়ির লোকজন গাছের সাথে বেঁধে রাখে। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

এদিকে ফাতেমার স্বামী অভিযুক্ত রাজু নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, রাতে আমরা একসাথে শ্বশুর বাড়িতে ছিলাম। ভোররাতে পুকুরে গোসল করতে গিয়ে সে আর ঘরে আসেনি। কে বা কারা তাকে মেরেছে, আমি জানি না।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসান মোস্তফা স্বপন বলেন, দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ঘটনাটি সঠিকভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।