রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে গোলাগুলির ঘটনায় রুবেল (৩৬) নামে এক আউটসোর্সিং কর্মচারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গুলি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় বিদেশি পিস্তলসহ রনি শেখ রুবেল নামে একজনকে আটক করেছে আনসার সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের তেজগাঁও জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) সালেহ মোহাম্মদ জাকারিয়া।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, পঙ্গু হাসপাতালে গুলির ঘটনার বিস্তারিত জানতে আমরা কাজ করছি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গুলিবিদ্ধ রুবেলকে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনায় হাসপাতালে পুলিশ সেনাবাহিনী বিজিবি উপস্থিত রয়েছে।
মৌসুমি ভিক্ষুকের ভিড় বেড়েছে বিভাগীয় নগরী রংপুরে। ব্যস্ত এই শহরে প্রতিদিন সকাল থেকে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের আনাগোনা বাড়তে থাকে। সেইসঙ্গে সপ্তাহে শনি ও বৃহস্পতিবার বাড়ে মৌসুমি ভিক্ষুকের সংখ্যা। শহরের ছোট-বড় দোকানগুলোতে খুচরা কিছু টাকা নিতে সারিবদ্ধভাবে মৌসুমি ভিক্ষুকদের উপস্থিতি দেখা যায়।
কেউ চাতালে, বাসা বাড়িতে, ফসলের কিংবা মৌসুমি বিভিন্ন কাজ করে থাকেন তারা। কাজ না থাকায় পেটের তাগিদে মৌসুমি ভিক্ষুক হিসেবে দূর-দূরান্ত থেকে শহরে ভিড় জমান এই মৌসুমি ভিক্ষুকরা।
রংপুর মহানগরীতে শহরের আনাচে কানাচে ছোট-বড় দোকানে কাঁধে একটি টোটব্যাগ নিয়ে ছুটতে দেখা যায় তাদের। নিজেদের মধ্যে খুঁনসুটি করার দৃশ্যও চোখে পড়ে।
রংপুর নগরীর ভুরার ঘাট এলাকার বাসিন্দা জমিলা বেগম বলেন, ভিক্ষা না করে কোনো উপায় নেই। কাইয়ো না দ্যাকে, ছইল পইল ধরি খাও কি প্যাটতো ভোক মানে না। এ্যালা খ্যাত নিরানি কাম, ধান শুকানির কাজ নাই। বসি থাকি তো আর প্যাট ভরে না। হামার কোনো ভাতা নাই,কিছু নাই। শনিবার আর বৃহস্পতিবার শহর ঘুরি। কোনোদিন ১ হাজার টাকা, কোনোদিন ৫০০-৬০০ টাকা হয়। সংসার চালাবার জইনতে শহর ঘুরিয়া ২-৪ টাকা যাই পাও কনমতে প্যাটের খোরাক হয়।
পীরগাছা থেকে আসা মৌসুমি ভিক্ষুক মুন্নী বলেন, বিধবা মানুষ। স্বামী নাই, ভিক্ষা করবার মন চাই না। কিন্তু সংসার চালাবার জইনতে শহরোত আসিয়া কালেকশন করি। কখনও আলু তোলা কাম করো, কখনো ধান শুকান, মাড়াই যেটা পাও তাই করো। এল্যা তো কাম নাই গ্রামের ওতি। কি আর করি খাই। ৪টা ছাওয়া নিয়া খরচতো আর কম না। সব জিনিসের মেলা দাম। দুই খান হাত ধরিয়া যদি কাজ না পাও, ভিক্ষা করিয়া কোনোদিন ৪০০ -৬০০ টাকা হয়। কোনদিন ১ হাজার টাকাও পার হয়৷ তাকে দিয়া টানিটুনি বাড়ি খরচ চলে। এলা স্বামী স্ত্রীরা চাকরি করে জইনতে বাড়ি বাড়ি ঘুরিয়া খয়রাত পাওয়া যায় না। বাড়ি বাড়ি ঘুরলে চাইল ছাড়া ট্যাকা দেয় না, এইজনতে শহরে আসি। আর কিছুদিন পর ধান কাটামারি হইবে তখন ধানের কাম কটমো।
কাঁধে টোটব্যাগ নিয়ে দলবেঁধে ফুটপাতে ছুটেচলা ৩ জন মৌসুমি ভিক্ষুক বলেন, হামার দুঃখ হামরা বুঝি, খয়রাতে না বেড়েয়া করমু কি। ছাওয়া মানুষ করি এলা ভাত দেয় না। এ্যালাও ধান উঠে নাই গ্যারোস্তের ঘরত কাম নাই। খামো কি, ধান উঠলে ছাড়াই মারাই করিয়া দিন হাজিরা পাই। এলা গ্রামোত কাম নাই, খাওয়াতো বন্ধ থাকে না। সপ্তাহে ২ দিন শহরত আসিয়া কালেকশন হয় ৭০০-১২০০, কোনোদিন বেশি হয়। কাইয়ো টাকা দেয়, কাইয়ো ছাড়ি মারে। এই খয়রাতি টাকা দিয়া কোনোমতে সপ্তাহখান চলে। ভোরের ট্রেনত ৩ জন একসঙ্গে আসি আবার খয়রাত শেষ হইলে ট্রেনত বাড়ি চলি যাই।
নবাবগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী লিফু বলেন, আল্লহকে সন্তুষ্টি করতে দান করা। দান গরীবের হক। সপ্তাহে ২ দিন অসহায় ভিক্ষুকদের জন্য কিছু খুচরা টাকা রাখা হয়। সাধ্যমত চেষ্টা করি তাদের না ফেরাতে, তারা এসে নিয়ে যায়।
বেশ কয়েকজনের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, তাদের দুঃখের বাস্তব গল্প। পেটের খোরাক জোগাতে গ্রাম থেকে পা বাড়িয়েছেন শহরমুখে। কাজ না থাকায় অভাব ঘোচাতে অনবরত ছুটে চলছেন প্রতিটি দোকানে। কেউ টাকা দিচ্ছেন, কেউ ফিরিয়ে দিচ্ছেন এই ভিক্ষুকদের ৷ মৌসুমি কাজের এই মানুষগুলোর জীবিকার একমাত্র অবলম্বন ভিক্ষাবৃত্তি এমনটি বলছেন তারা।
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে ৭টি ঘর সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত হয়েছে এবং এ ঘটনায় ৩ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার দেউলী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। প্রবল ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়ে ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। আহতরা বর্তমানে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
স্থানীয় ইউপি সচিব মো. মুনসুর হেলাল এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে মো. সেলিম হাওলাদার, মো. আলমগীর সিকদার এবং মো. করিম মিয়ার ঘর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, হঠাৎ প্রবল বৃষ্টির সাথে ঝড়ো বাতাস শুরু হলে ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ে এবং মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ঘূর্ণিঝড় 'দানা' বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে এবং এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এর ফলে পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এর প্রভাবে মির্জাগঞ্জসহ উপকূলীয় এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত এবং দমকা হাওয়ার কারণে জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
মির্জাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, "আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং উপজেলা জুড়ে ৬০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।"
রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলায় আঞ্চলিক স্বশস্ত্র সংগঠন মারমা ন্যাশনাল পার্টি (মগ পার্টি) কর্তৃক দুই চালককে মারধরের ঘটনায় উপজেলার বাঙ্গালহালিয়া- রাজস্থলী সড়ক অবোরোধ করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) কয়েক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ রাখেন তারা।
অবরোধে সড়কে যান চলাচল ব্যহত হলে প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী স্থানীয়দের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয় তারা।
জানা গেছে, বুধবার দুপুরে রাজস্থলী বাজারে মগ পার্টির সদস্যরা অটোরিকশা চালক কালাম হোসেন (২৮) এবং মাহিন্দ্র চালক মো. মইনুলকে (২৫) বেধড়ক মারধর করে।
স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করালে অটোরিকশা চালক কালামের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসা দিতে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে।
আহত চালক কালামের মা ফাতেমা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা মেরেছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
আহত আরেক চালক মইনুলের মা মোমেনা বেগম বলেন, কি কারণে সন্ত্রাসীরা আমার ছেলেকে মেরেছে আমরা জানি না। তিনি অপরাধীধের আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদানের জোর দাবি জানান।
বাঙালহালিয়া ইউনিয়নের সংরক্ষিত ইউপি সদস্য (১,২.৩) সালমা আক্তার বলেন, মগ পার্টির সন্ত্রাসীরা স্থানীয় দুই চালককে মারধর করেছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সাথে কথা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
স্থানীয় সুফিয়া বেগম জানায়, গত একমাস ধরে মগ পার্টির সদস্যরা ২ নং ওয়ার্ডের যাকে পাচ্ছেন তাকে পিটাচ্ছে। এভাবে চলতে পারে না। তিনি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান।
রাজস্থলী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব কান্তি রুদ্র বলেন, আহত চালককে চিকিৎসা খরচ বাবদ ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। যারা ঘটনা ঘটাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ বাজারে সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে বাজার তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করেছে উপজেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার আশুগঞ্জ বাজারে এই অভিযান চালানো হয়। এসময় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দ্রব্যমূল্যের তালিকা না থাকায় ও অধিক মূল্যের সবজি বিক্রি করার অপরাধে ১ হাজার টাকা করে পাঁচজন ব্যবসায়ীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি তাদেরকে সতর্ক করা হয়।
বাজারে সবজি, ডিম, ব্রয়লার মুরগি, আলু, ডাল, পিঁয়াজ, রসুন, আদা ও ভোজ্য তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে বাজার তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শ্যামল চন্দ্র বসাক।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাজার তদারকি কার্যক্রম পরিচালনায় আশুগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ,বিল্লাল হোসেন পুলিশ ফোর্স, উপজেলা প্রকৌশলী পৃথুল ভৌমিক।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্যামল চন্দ্র বসাক বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আশুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে এবং মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী ক্রয়সীমার মধ্যে রাখতে নিয়মিত এই বাজার মনিটরিং অভিযান অব্যাহত থাকবে।