অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের আরও তিন উপদেষ্টা শপথ গ্রহণ করেছেন।
তারা হলেন- ব্যবসায়ী সেখ বশির উদ্দিন, চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম।
তাদের মধ্যে ব্যবসায়ী সেখ বশির উদ্দিনকে বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় ও মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
রোববার (১০ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৭টার দিকে বঙ্গভবনে তারা শপথ গ্রহণ করেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাদের শপথবাক্য পাঠ করান।
এসময় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস উপস্থিত ছিলেন।
সেখ বশির উদ্দিন দেশের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আকিজ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি সেখ আকিজ উদ্দিনের সন্তান।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বরাবরই বিগত সরকারের অন্যায় কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে এসেছেন। শুধু তাই নয়, ছাত্র আন্দোলনের একেবারে শুরু থেকেই তিনি পাশে ছিলেন। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরও নানা ধরনের পরামর্শ দিয়েছেন ফেসবুকের পাতায়। ফলে তার উপদেষ্টা হওয়ার গুঞ্জণ বেশ আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিলো। অবশেষে সেই গুঞ্জণ সত্য হলো।
মো. মাহফুজ আলম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির সমন্বয়ক ছিলেন। তার বাড়ি লক্ষ্মীপুর উপজেলার রামগঞ্জ উপজেলার ইসাপুর গ্রামে। পড়াশোনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তিনি। এছাড়া ছাত্র সংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির তাত্ত্বিক নেতা হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত তিনি
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গত ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এরইমধ্যে তিনমাস পার করেছে ২১ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ। তাদের অনেকেই পালন করছেন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। এ নিয়ে রাজনীতিবিদদের প্রায়ই অভিযোগ, এক ব্যক্তি একইসঙ্গে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করায় সরকারের কাজে দীর্ঘসূত্রতা সৃষ্টি হচ্ছে। তাই উপদেষ্টা পরিষদের পরিসর বাড়ানোরও দাবি তুলেছেন তারা।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান উপদেষ্টামণ্ডলীতে রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ, সাবেক পররাষ্ট্রসচিব তৌহিদ হোসেন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, বেসরকারি সংস্থা উন্নয়ন বিকল্পের নীতিনির্ধারণী গবেষণার (উবিনীগ) নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার, গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালক নূর জাহান বেগম, বেসরকারি সংস্থা ব্রতীর নির্বাহী পরিচালক শারমিন মুরশিদ, ইসলামী চিন্তাবিদ আ ফ ম খালিদ হাসান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, সাবেক রাষ্ট্রদূত সুপ্রদীপ চাকমা, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, বীর প্রতীক ফারুক-ই-আজম, সাবেক সচিব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এবং বাংলাদেশ রাইফেলসের সাবেক মহাপরিচালক লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম।