পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনা, আহত কলেজছাত্রের মৃত্যু
জাতীয়
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনা আহত ফাহিম ইভান (১৯) নামে এক কলেজছাত্র ৩ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর একটি বেসরকারি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বার্তা২৪.কমকে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
নিহত কলেজছাত্র ফাহিম ফটিকছড়ি উপজেলার পাইন্দং ইউপির খলিফার বাড়ির সৌদি প্রবাসী জানে আলমের বড় ছেলে। ফাহিম ফটিকছড়ি সরকারি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
বিজ্ঞাপন
এর আগে গত ২৮ অক্টোবর (সোমবার) বিকেল সাড়ে ৫টায় চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কের সরকারহাট এলাকায় পরীক্ষা শেষ করে বাইক নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে পথচারীদের রক্ষা করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইক থেকে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন ফাহিম।
নিহত ফাহিমের বন্ধুরা জানায়, সোমবার অনার্স ১ম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা ছিল। হাটহাজারী কলেজে পরীক্ষা শেষ করে মোটরসাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরছিল সে। সরকারহাট আসার পর তার মোটরসাইকেলের সামনে দুজন মহিলা রাস্তা পাড় হচ্ছিল।
এ সময় তাদের বাঁচানোর জন্য গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয় ফাহিম। এরপর তাকে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন হাসপাতালে ৩ দিন আইসিইউ এবং লাইফ সাপোর্টে রাখার পর বৃহস্পতিবার সে মারা যায়।
ফরিদপুরে হুসাইন নামে ১৩ বছরের এক কিশোর অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকালে শহরের ভাটি লক্ষ্মীপুরে একটি মহিলা মাদ্রাসার বাউন্ডারি দেয়ালের পাশে ফেলে রাখা লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ কিশোরের লাশ উদ্ধার করে।
নিহত হুসাইনের বাড়ি শহরের চর টেপাখোলা ব্যাপারীপাড়া। তার বাবার নাম মৃত খোকা ব্যাপারী। মাত্র এক সপ্তাহ আগে মারা গেছেন তার বাবা। মায়ের নাম শেফালী বেগম (৪৮)।
হুসাইনের চাচাতো ভাই ওবায়দুর রহমান (৩৫) বলেন, তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট ছিল হোসাইন। বড় বোন গুলোর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এক সপ্তাহ আগে তার বাবা মারা যাওয়ার পর উপার্জনের অবলম্বন হিসেবে হুসাইনকে একটি নতুন রিকশা কিনে দেন আত্মীয়-স্বজনেরা।
সেই রিকশা নিয়ে সর্বশেষ বৃহস্পতিবার বিকেলে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ ছিলো সে। রাতে বাড়িতে না ফেরায় এলাকায় মাইকিংও করা হয়। এরপর শুক্রবার সকালে লোক মারফত তার লাশ পাওয়া গেছে বলে তারা জানতে পারেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, দড়ি দিয়ে গলায় পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে করে হত্যা করা হয়েছে হুসাইনকে।
কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সনাতন কুমার জানান, স্থানীয়দের মারফত খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি সিআইডির ক্রাইম সিনের টিম ঘটনা তদন্ত করছে। আশা করছি দ্রুতই জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।
জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের তাবলীগী মারকাজে সহাবস্থান বজায় রাখতে মাওলানা মোহাম্মদ জুবায়ের ও মাওলানা সাদের অনুসারীদের অনুরোধ জানিয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এতে একপক্ষকে অন্যপক্ষের মারকাজে কোনো ধরনের বাধা কিংবা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করতেও অনুরোধ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজধানীর কাকরাইল মসজিদের ক্ষেত্রে এরআগে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, সেটি অনুসরণ করতে হবে।
গাজীপুরের টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান মাঠ দখল নিয়ে গেল ১৭ ডিসেম্বর রাতে তাবলীগের দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত চারজনের প্রাণহানি ঘটেছে।
পরে দুপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ইজতেমা ময়দান খালি করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এছাড়া পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ, মিছিল ও বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) ইজতেমা ময়দান ঘিরে জারি করা সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার নাজমুল করিম খানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গাজীপুর মহানগর পুলিশ আইনের ক্ষমতাবলে গত ১৮ ডিসেম্বর দুপুর ২টা থেকে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের তিন কিলোমিটারের মধ্যে জারি করা আদেশগুলো বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা থেকে প্রত্যাহার করা হল।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মীর আরমান হোসেন (৪৮) নামে এক বিএনপি নেতাকে ফোন করে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সলিমপুর ইউনিয়নের জঙ্গলসলিমপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে ছিন্নমূল বস্তি এলাকায় আরমানকে ছুরিকাঘাত করা হয়। গুরুতর অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মীর আরমান সীতাকুণ্ড উপজেলা বিএনপির সাবেক বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক এবং চট্টগ্রাম মহানগর ছিন্নমূল বস্তিবাসী সমন্বয় পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। তিনি রাঙ্গুনিয়ার মীর মোতাহের হোসেনের ছেলে।
সীতাকুণ্ড থানার ওসি মো. মজিবুর রহমান বলেন, লোকটিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। আমরা ঘটনার তদন্ত করছি এবং আইনগত পদক্ষেপ নিচ্ছি।
এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি করেছেন সীতাকুণ্ড উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব কাজী মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, আরমানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা দোষীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানাই।
চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ‘শহীদ ওয়াসিম আকরাম উড়ালসড়ক’র টোল আদায় কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় এই উড়ালসড়কের পতেঙ্গা প্রান্তে টোল আদায়ের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম ও প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান।
এরপর ১০টা ২০মিনিটে প্রথম মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন তাঁর গাড়ির টোল প্রদান করেন। বর্তমানে উড়ালসড়কটির পতেঙ্গা প্রান্তে ৪টি বুথের মাধ্যমের দুদিকের টোল আদাল করা হবে। পরবর্তীতে লালখান বাজারসহ ১০টি পয়েন্টে র্যাম্প স্থাপনের পর সেখানেও টোল আদায় করা হবে।
শুরুতে উড়ালসড়কটি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নামে নামকরণ করা হয়েছিল। তবে সম্প্রতি এটির নাম বদলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ হওয়া ওয়াসিম আকরামের নামে নতুন করে নামকরণ করা হয়েছে।
প্রকল্পটির পরিচালক প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এক্সপ্রেসওয়ের নাম পরিবর্তনের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে, ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই উড়ালসড়কটি উদ্বোধন করেন। তবে উদ্বোধনের পরও উড়ালসড়কটি পুরোপুরি যানচলাচলের জন্য প্রস্তুত ছিল না। এক্সপ্রেসওয়ে চট্টগ্রাম শহরের যানজট কমানোর পাশাপাশি বিমানবন্দর যাতায়াত সহজ করতে নির্মিত হয়েছে। সড়কটির কার্যক্রম পুরোপুরি চালু হওয়ায় এখন যানচলাচল অনেক বেশি নির্বিঘ্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) জানায়, এক্সপ্রেসওয়েটি দিয়ে ১০ ধরনের গাড়ি চলাচল করতে পারবে। এটিতে মোটরসাইকেল এবং ট্রেইলর ওঠানামার সুযোগ রাখা হয়নি। চূড়ান্ত হওয়া টোলের হার অনুযায়ী, সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ৩০ টাকা, কারজাতীয় গাড়ি ৮০ টাকা, জিপ ও মাইক্রোবাস ১০০ টাকা, পিকআপ ভ্যান ১৫০ টাকা, মিনিবাস ও ট্রাক (চার চাকা) ২০০ টাকা এবং বাসকে ২৮০ টাকা দিতে হবে। এছাড়া ট্রাক (৬ চাকা) ৩০০ টাকা এবং কাভার্ডভ্যানকে ৪৫০ টাকা টোল দিতে হবে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম মূল শহর থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাতায়াত নির্বিঘ্ন করা, শহরের যানজট কমিয়ে আনার পাশাপাশি যাত্রাপথের দূরত্ব কমাতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সিডিএ। ২০১৭ সালের ১১ জুলাই একনেক সভায় ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। সাড়ে ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। তবে ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী এর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। প্রথমে ২০২০ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্য ধরা হয়।
এরপর বিভিন্ন সময় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে তা ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। তবে সবশেষ সিডিএর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কাজের সময় আরও একবছর বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। এছাড়া সিডিএ ১ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৩৬৯ কোটি সাত লাখ ১০ হাজার ৮১৯ টাকা।