বিলুপ্তের পথে প্রাচীন কৃষি উপকরণ ‘আছড়া’
কৃষি জমি চাষাবাদের প্রাচীন জনপ্রিয় উপকরণ ‘আছড়া’। এটি নিড়ানি, হাতেটানা বলে একেক এলাকায় ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত৷ আবহমান গ্রাম বাংলায় একসময় এই আছড়ার ব্যবহার ছিল বহুল। কিশোরগঞ্জ জেলায় এটিকে আছড়া ও নিড়ানি হিসেবেই ডাকা হয়।
কৃষকরা এটিকে ব্যাবহার করে জমি চাষাবাদের উপযোগী করে তুলতেন। একসময় গরু, ঘোড়া দিয়ে এটির ব্যবহার করা হলেও এখন কৃষক নিজেই হাতে টেনে ব্যবহার করে থাকেন৷ বর্তমানে নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে৷ ফলে এই আছড়ার দেখা মিলেনা সচরাচর৷
আছড়া তৈরির উপকার হচ্ছে কাঠ এবং তালের কাঠ এবং সুপারি কাঠ৷ এর হাতল দেওয়া হয় তাল বা সুপারি কাঠ দিয়ে৷ এখনও এর ব্যবহার গ্রামের কৃষি জমিতে কদাচিৎ দেখা মিলে৷
কৃষকরা জানান, এই আছড়া একসময় গরু বা ঘোড়া দিয়ে টানা হতো। এটি ছিল খুবই পরিশ্রমের কাজ৷ এখন কৃষক নিজেই টানেন জমিতে৷ এটা দিয়ে আছড়া দিলে জমি মসৃণ হয়। মাটিতে রোদ পৌঁছে জমির উর্বরতায় শক্তি বাড়ে৷
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সোমবার (৪ নভেম্বর) ভোর থেকেই ফসলের মাঠে কৃষকরা কাজে নেমেছেন৷ শীতকালীন ফসলের জন্য পুরোদমে জমি তৈরি করছেন৷ কৃষক নিজেই আছড়া দিয়ে টেনে দিচ্ছেন জমি। কিছুক্ষণ থেমে থেমে আবার একি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা ভিটাদিয়া গ্রামের কৃষক মতি মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমার কাছে থাকা এই আছড়া-নিড়ানিটার বয়স প্রায় শত বছরের৷ আমি ছোট থেকেই এটি বাপ দাদাদের ব্যবহার করতে দেখেছি৷ এখন আমিও ব্যবহার করছি। একসময় সবার কাছে থাকলেও এখন কয়েক গ্রাম ঘুরে এটির দেখা মেলা কঠিন৷ আমার থেকে অনেকেই নিয়ে এটা জমিতে ব্যবহার করেন।