বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধে সাংবাদিক কিংবা অন্য যে কেউ জড়িত থাকুক না কেন, আইন অনুযায়ী তার বিচার হবে। মনে রাখা দরকার- সাংবাদিকদের হাত লম্বা, কিন্তু আইনের হাত আরও লম্বা এবং রাষ্ট্রের হাত আরও লম্বা।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেন, একটি বিশেষ গোষ্ঠী, বিশেষ মহল ও একটি বিশেষ রাষ্ট্র সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। কিন্তু শহীদ অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের রক্তের বিনিময়ে এই জাতি আবার ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এভাবে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়ে যাবে।
মিথ্যা মামলা হচ্ছে জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী বলেন, নানা অজুহাতে মিথ্যা মামলা হচ্ছে, এটা অস্বীকার করছি না। তবে বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের মত এই মামলা রাষ্ট্র কিংবা পুলিশ করছে না। বরং সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মামলা মানেই গ্রেফতার নয়। তদন্ত এবং যাচাই-বাছাই শেষে প্রকৃত অপরাধীদের ধরা হবে। আমরা ন্যায়বিচারের দ্বার সবার জন্য উন্মুক্ত রেখেছি।
ইসকনের হামলায় চট্টগ্রামের অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা ও সনাতনী জাগরণ মঞ্চের নেতা চিম্ময় বহ্মচারী গ্রেফতার প্রসঙ্গে মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, তিনি বড় ধরনের ষড়যন্ত্রে জড়িত। অভিযোগটা যেহেতু গুরুতর, তাই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব অন্তর্বর্তী কমিটির আহ্বায়ক জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে ও অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্য গ্লোবাল টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান গোলাম মাওলা মুরাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্য মুস্তফা নঈম, এনটিভির ব্যুরো প্রধান শামসুল হক হায়দরী, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিএমইউজে) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজ, সিএমইউজের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান ও ওয়াহিদ জামান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাসেল আহমেদ। একাত্তর টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান সাইফুল ইসলাম শিল্পী, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার বিশেষ প্রতিনিধি মিয়া মোহাম্মদ আরিফ ও শাহনেওয়াজ রিটন।
মতবিনিময়কালে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতে ইসলামী’র সেক্রেটারি নুরুল আমীন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আব্বাস, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক শেখ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, গণসংহতি আন্দোলন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও চট্টগ্রাম জেলা কমিটির আহ্বায়ক সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান মারুফ রুমী, নাগরিক ঐক্য চট্টগ্রাম বিভাগের প্রধান সমন্বয়কারী নুরুল আফছার মজুমদার স্বপন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নীলা আফরোজ, রায়হান রাফি, রিদোয়ান সিদ্দিকী, আরিফ মঈনুদ্দীন, মাঈনুল ইসলাম, ইফফাত ফাইরুজ ইফা।
এর আগে সকালে অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানসহ ঢাকা থেকে আসা সিনিয়র আইনজীবী সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট বদরুল আনোয়ার লোহাগাড়ায় উপজেলা অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের বাড়িতে যান এবং তার কবর জেয়ারত করেন।