বুড়িগঙ্গা নদীল দখল দূষণ রোধ ও রাজধানীর চতুর্দিকে বৃত্তাকার নৌপথ চালু করাসহ ৭ দাবিতে মানবন্ধন করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) বুড়িগঙ্গা নদীল পারড় সোয়ারীঘাট এলাকায় এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাপা’র যুগ্ম সম্পাদক ও বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনের সমন্বয়ক, মিহির বিশ্বাস এর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন কবির সুমন এর সঞ্চালনায় এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বাপা সাধারণ সম্পাদক আলমগীর দবির, যুগ্ম সম্পাদক ড. মাহবুব হোসেন, জাতীয় পরিষদ সদস্য আশরাফ আমিরুল্লাহ, জাতীয় পরিষদ সদস্য হাজী শেখ আনছার আলী, বাপা জীবন সদস্য মো. আবদুল হামিদ, সিডিপির কর্মকর্তা এডওয়ার্ড এ মধু, পরিবেশ কর্মী ও বুড়িগঙ্গা পাড়ের স্থানীয় বাসিন্দা ফরিদ উদ্দিন আহমেদ জুয়েল প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে মিহির বিশ্বাস বলেন, সরকারের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি ও পরিকল্পনা পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও বাস্তবে তার বাস্তবায়ন চোখে পড়েনা। দেশের দখল হওয়া নদীগুলো উদ্ধারে সরকারকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এছাড়া, রাজধানীর চারদিকে চক্রাকার নৌপথ চালু করার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
বাপা’র সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির বলেন, নদীকে নারীর মত প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করা হচ্ছে। বুড়িগঙ্গাসহ দেশের সকল নদীগুলোকে দখল ও দূষণমুক্ত করে নদীর পানি প্রবাহ স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া, প্রত্যেকটি নদীর সাথে সংযুক্ত খাল, প্লাবন অঞ্চল ও কৃষি জমি পুনরুদ্ধর ও সংরক্ষণ করার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
ড. মাহবুব হোসেন বলেন, দেশের নদীগুলো এখনও দখলকারিরা নিয়ন্ত্রণ করছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার থাকাকালীন দেশের নদী রক্ষা করা না গেলে রাজনৈতিক সরকারের সময় রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।
মানববন্ধনে ৭টি দাবি তুলে ধরা হয়েছে। সেগুলো হলো:
১. সীমানার অভ্যন্তরে তালিকা অনুযায়ী সরকারী স্থাপনা, বেসরকারী প্রকল্প ও শিল্পকারখানা, মাঝারী আবাসনসহ সকল প্রকারদখলী স্থাপনা উচ্ছেদ অথবা পুনর্বাসন করার মাধ্যমে নদীর জায়গা নদীকে ফিরিয়ে দিতে হবে।
২. আদি বুড়িগঙ্গা নির্মোহভাবে ও সম্পূর্ণ দখলমুক্ত ও পূনঃখনন করতে হবে এবং এর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে হবে।
৩. প্রত্যেকটি নদীর সাথে সংযুক্ত খাল, প্লাবন অঞ্চল ও কৃষি জমি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষন করতে হবে।
৪. জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে পূণঃর্গঠন করে হাইকোর্টের নির্দেশের আলোকে দেশের অভ্যন্তরে সমস্ত নদী-বিল-হাওর এবং জলাশয়ের অভিবাবক
হিসাবে দায়িত্ব দিয়ে নদীগুলোর দখলদারদের তালিকা পূর্ণাঙ্গ করতে হবে।
৫. রাজধানীর চারিদিকে চক্রাকার নৌপথ চালু করতে অবিলম্বে সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে চক্রাকার নৌপথ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
৬. নদীর সীমানা নির্ধারণের ভিত্তি হিসাবে মূল ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে (সিএস) এবং ভরা মৌসুমে নদী প্রবাহের ধারা ব্যবহার করতে হবে।
৭. নদী, খাল ও জলাশয় দূষণকারীদের উপর উপযুক্ত জরিমানা আরোপ করার ব্যবস্থা নিতে হবে।