এক নারীকে বোকা বানিয়ে তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া স্বর্ণসহ মেহেদী হাসান (২৪) নামের এক ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে সদর থানা পুলিশ।
গ্রেফতার মেহেদী হাসান নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানার চনপাড়া গ্রামের মৃত কবির হোসেন ছেলে। সে বর্তমানে ঢাকা জেলার ডেমরা থানার ৪নং ওয়ার্ডে ভাড়া বাসায় বসবাস করতো।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (১১ নভেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মাহমুদুর রহমান। এর আগে রোববার (১০ নভেম্বর) গ্রেফতার মেহেদীকে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
শনিবার (৯ নভেম্বর) রাজবাড়ী বড় বাজারের মা টাওয়ারের সামনে এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শামেলা বেগম বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
বিজ্ঞাপন
থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সদর উপজেলার চর নারায়ণপুর গ্রামের মৃত হাসান সরদারের স্ত্রী শামেলা বেগম বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজবাড়ী বড় বাজারের মা টাওয়ারের সামনে আসলে মেহেদী হাসান শামেলা বেগমের কাছে এসে বলে সে ঢাকা থেকে এসেছে এবং ঢাকায় একটা কোম্পানীতে চাকরী করতো। কিন্তু সে কোম্পানী থেকে তাকে কোন বেতন না দেওয়ায় সে কোম্পানী থেকে ছেকারিন চুরি করে নিয়ে আসে। যার মূল্য ২ লাখ ১০ হাজার টাকা।
মেহেদী শামেলাকে লোভ দেখিয়ে ছেকারিন বিক্রি করে দেওয়ার জন্য বলে এবং বিক্রির টাকা ভাগাভাগি করে নিবে বলে জানায়। তখন সেই ছেকারিনের প্যাকেট শামেলা বেগমের ভেনেটি ব্যাগের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়। পরে মেহেদী ও তার সাথে থাকা রুবেল হোসেন (৩৭) ও রাসেল (২৪) শামেলা বেগমকে ব্রেনওয়াশ করে তার কানে থাকা ৮ আনা ওজনের স্বর্ণের কানের দুল এবং গলায় থাকা ১০ আনা ওজনের স্বর্নের চেইন হাতিয়ে নেয়। যার আনুমানিক মূল্য ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
পরবর্তীতে বিষয়টি টের পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মেহেদীকে আটক করে স্থানীয়রা। তখন রুবেল ও রাসেল পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মেহেদীকে আটক করে। পরে ভেনেটি ব্যাগ খুলে দেখা যায় এর মধ্যে এক প্যাকেট বেকারির বিস্কুট।
পরবর্তীতে আসামি মেহেদী হাসানের মা জানতে পারে যে, পলাতক আসামিদের কারণে তার ছেলে থানায় আটক আছে। তখন মেহেদীর মা পলাতক ২ ও ৩নং আসামি সাথে যোগাযোগ করে তাদের কাছ থেকে ৮ আনা ওজনের স্বনের কানের দুল এবং গলায় থাকা ১০ আনা ওজনের স্বর্নের চেন উদ্ধার করে।
রাজধানীর পল্লবীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মো. ইমন হোসেন আকাশ হত্যা মামলায় শাহবাগ থানার তাঁতী লীগ সভাপতি মো. ইকবাল হোসেনকে (৪২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাত আড়াইটায় রূপনগর থানার ৬ নম্বর সেক্টরের ৯ নম্বর বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পল্লবী থানা সূত্র জানা যায়, গত ৪ আগস্ট বিকেলে পল্লবী থানার মিরপুর-১০ বাস স্ট্যান্ডের পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনের সড়কে ছাত্র-জনতার সঙ্গে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করেছিল ইমন। এ সময় আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালায় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। আক্রমণকারীরা ককটেল বিস্ফোরণসহ এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ করলে গুলিতে ইমন গুরুতর আহত হয়। আহত ইমনকে স্থানীয় ডা. আজমল হাসপাতাল লিমিটেডে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ইমনের মা বেবী বাদী হয়ে ২৭ আগস্ট পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করেন।
থানা সূত্র আরও জানায়, তদন্তাধীন এ মামলায় সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ইমন হত্যা মামলার তদন্তে প্রাপ্ত আসামি ইকবালকে রূপনগর থানা পুলিশের সহায়তায় গ্রেফতার করা হয়।
নিজ জেলা নেত্রকোনায় বরেণ্য লেখক ড. হুমায়ুন আহমেদের ৭৬তম জন্মদিন পালিত হয়েছে। হিমু-রূপা সেজে শোভাযাত্রা ও কেককাটার মধ্য দিয়ে দিবসের সূচনা করে লেখক ভক্তরা।
প্রতিবছরের ন্যায় বুধবার (১৩ নভেম্বর) হিমু পাঠক আড্ডার উদ্যোগে তরুণরা হিমু-রূপা সেজে সতপাই অস্থায়ী কার্যালয় থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে। এতে কবি, লেখক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবি, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিরা অংশ নেন। শোভাযাত্রা শেষে হিমু উৎসবের প্রথমার্ধের আয়োজনে শিল্পকলা একাডেমির মুক্তমঞ্চে সকলকে সাথে নিয়ে কেক কাটেন জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস ও পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ।
এর আগে সকালে ১১ টায় সাতপাই থেকে সংগঠনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা লেখক হায়রদার জাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক যতীন সরকার অসুস্থ থাকায় মোবাইল ফোনে অনুমতি সাপেক্ষে শোভাযাত্রার উদ্বোধন ঘোষণা করেন অধ্যাপক মতীন্দ্র চন্দ্র সরকার। পরে শোভাযাত্রাটি পুরো শহর প্রদক্ষিণ করে মোক্তারপাড়া শিল্পকলা একাডেমির মুক্তমঞ্চে গিয়ে শেষ হয়।
সেখানে প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আলপনা বেগমের পরিচালনায় হিমু স্রষ্টা হুমায়ূন আহমেদের স্মরণের মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্মের কাছে সাহিত্যকর্মকে তুলে ধরার প্রয়াসকে সাধুবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস, পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ, লেখক বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী, অধ্যাপক মতীন্দ্র চন্দ্র সরকার, প্রবীন সাংবাদিক শ্যামলেন্দু পাল, শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার তমাল বোস, মো. অহিদুর রহমান, অধ্যাপক নাজমুল কবীর সরকারসহ অনেকই।
সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে একাডেমির সহযোগিতায় আড্ডায় আড্ডায় লেখকের তৈরি নাটক সিনেমায় ব্যবহৃত কালজয়ী গান ও নৃত্য পরিবেশিত হবে।
এছাড়াও লেখকের জন্মস্থান নানার বাড়ি জেলার মোহনগঞ্জের শেখ বাড়িতে ও লেখকের পৈত্রিক ভিটা কেন্দুয়ার কুতুবপুরে লেখক প্রতিষ্ঠিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপিঠে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
সেনাসদরের কর্নেল স্টাফ কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার বলেছেন, বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিতে সেনাবাহিনী কত দিন মাঠে থাকবে সেটা সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়। কারণ সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে সরকারের সিদ্ধান্তে। সরকার নির্ধারণ করবে সেনাবাহিনী কত দিন মাঠে থাকবে।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে ঢাকা সেনানিবাসে ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় মোতায়েন করা সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী প্রশাসনকে ৬০ দিন সহায়তা করতে এই তথ্যটি সঠিক নয়। ৬০ দিনের জন্য নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কত দিন থাকব এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। কারণ সেনাবাহিনী মোতায়েন হয়েছে সরকারের সিদ্ধান্তে, সরকারই এটা নির্ধারণ করবে কত দিন মোতায়েন থাকা প্রয়োজন।
'মানবাধিকার লঙ্ঘন বা বিচারবহির্ভূত হত্যা প্রতিরোধ করার ব্যাপারে সেনাবাহিনী অত্যন্ত সচেতন। এই ব্যাপারে আমাদের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের নির্দিষ্ট আদেশ রয়েছে যে, কোনো ধরনের পরিস্থিতিতে যেন আমরা—সেনাবাহিনী বিচারবহির্ভূত হত্যা সংঘটিত হতে না দেই, সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে এটা প্রতিরোধ করার, বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা রয়েছে এই ধরনের (মানবাধিকার লঙ্ঘন) কোনো যেন ঘটতে না দেই। যে ঘটনাগুলো ঘটছে আপনারা সেগুলো জানতে পারছেন। এর বাইরে আমাদের কার্যক্রমের কারণে কতগুলো পরিস্থিতিতে এই ধরনের কোনো কিছু প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে, এটা হয়তো অনেক সময় জনসম্মুখে আসে না।
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছি। পুলিশের কাছে অপরাধের যে তথ্য থাকে, এটা নিয়ে একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ আমরা করিয়েছি। সে অনুযায়ী, সেনাবাহিনী মোতায়েন হওয়ার পরে বা নির্বাহী ক্ষমতা পাওয়ার পরে আগের তুলনায় অপরাধের সংখ্যা কমেছে। নথিভুক্তি কমেছে। তার মানে পরিস্থিতির অবনতি হয়নি। আমাদের হয়তো প্রত্যাশা অনুযায়ী উন্নতি হয়নি, এটা অনেকে বলতে পারেন।
ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ইন্তেখাব।
দেশব্যাপী আলোচিত সিলেটের কানাইঘাটে প্রতিবেশীকে ফাঁসাতে শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিনকে হত্যা করা হতে পারে ধারণা করছেন তার বাবা শামীম আহমদ। মুনতাহা আক্তার জেরিন কানাইঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের বীরদল ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে।
শামীমের দাবি- প্রতিবেশী আব্দুল ওয়াহিদ ওরফে মটরকে ফাঁসাতে মুনতাহকে হত্যা করা হতে পারে। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বার্তা২৪.কমের প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে এই কথা জানান মুনতাহার বাবা।
শামীম আহমদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, মটর ও মুনতাহার গৃহশিক্ষক মার্জিয়াদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ রয়েছে। যা আশেপাশের সবাই জানেন। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে মুনতাহাকে হত্যা করা হয় ও পরবর্তীতে মটরের পুকুরে মরদেহ ফেলে তাকে ফাঁসাতে চেয়েছিল বলে মনে হচ্ছে। রোববার ভোররাতে পুকুরে মার্জিয়ার মা যখন মুনতাহার মরদেহ পুকুরে ফেলে দিতে চায় তখন মটর দেখে ফেলেন। পরে আলিফজান বিবি পালিয়ে যেতে চাইলে মটরসহ স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করে।
মার্জিয়াদের সঙ্গে বিরোধের কথা স্বীকারও করেছেন আব্দুল ওয়াহিদ ওরফে মটর।
মটর বলেন, বেশ কিছুদিন আগে এক লোকের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল মার্জিয়ার। পরবর্তীতে ওই লোককে মার্জিয়া ও তার মা মারধর করে। তার বিচার করতে গিয়ে দোষী হয় তারা দুজন। তখন থেকে মার্জিয়া ও তার মা দাবি করেন আমার মেয়ের সঙ্গে ওই লোকের বিয়ে দেবে বলে তাদেরকে দোষী বানানো হয়েছে। এই থেকে আমার সঙ্গে তাদের বিরোধ।
তিনি আরও বলেন, মুনতাহা নিখোঁজের ৭ দিনের মাথায় তা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে আমার বাড়ির পুকুরে লাশ ফেলার পাঁয়তারা করেছিল মার্জিয়া ও তার মা। আল্লাহর মেহেরবানিতে খুনি মরদেহসহ গ্রামবাসীর হাতে ধরা পড়ে। আমি এই ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি চাই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মুনতাহার মৃত্যুতে গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে মানুষ। পরিবারের লোকজনকে শান্তনা দিচ্ছেন। ঘটনাস্থল ঘুরে দেখছেন। কথা বলছেন গ্রামের লোকজনের সাথে। সবার একটাই প্রশ্ন কেন মুনতাহাকে হত্যা করা হয়েছে। কি এমন অপরাধ ছিল, যার জন্য এভাবে হত্যা করতে হয়েছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঘটনার পর থেকে ঘাতকরা মুনতাহাদের ঘরে যাওয়া আসা করেছিলেন। সাবেক গৃহশিক্ষিকা শামীমা বেগম মার্জিয়ার মা আলিফজান বিবি পূর্বের মতো বিভিন্ন স্থানে ভিক্ষার জন্য গিয়েছেন। তারাও মুনতাহাকে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে খোঁজাখুজি করেছেন। কিন্তু কারো মুখে ছিল না কোনো দুশ্চিন্তার ছাপ। তারা স্বাভাবিকভাবেই জীবন-যাপন করছিলেন। তাদের আচরণে কেউ বুঝতেই পারেনি এই ঘটনায় তারা সম্পৃক্ত।
স্থানীয়রা বলছেন, মুনতাহাকে প্রাইভেট না পড়াতে নিষেধ ও চুরির ঘটনায় বিরোধে এমন ঘটনা ঘটাতে পারে। এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানায়, শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিনের কোথাও কোনো খোঁজ না পেয়ে বাবা শামীম আহমদ একটি সাধারণ ডায়েরি করেন থানায়। এরপর বিভিন্ন সময় তার কাছে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে মুঠোফোনে কল দিয়ে টাকা পয়সা চাওয়া ও তথ্য দেয়া হয়। তাদের কথা শুনে সিলেটে নগরীসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তল্লাশি করা হয়। কিন্তু কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি মুনতাহাকে। শনিবার (৯ নভেম্বর) মুনতাহার বাবা মার্জিয়ার পরিবারকে কিছুটা সন্দেহ হচ্ছে বলে পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ ওই রাতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে মার্জিয়াকে। এরমধ্যে ১০ নভেম্বর ভোর ৪ টার সময় খাল থেকে তুলে মুনতাহার প্রতিবেশী আব্দুল ওয়াহিদ ওরফে মটরের পুকুরে মরদেহ ফেলে দেওয়ার সময় মটরসহ স্থানীয় জনতা ধাওয়া দিয়ে মার্জিয়ার মা আলিফজানকে আটক করে।
গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল বলেন, বাড়ি থেকে কাপড় নিয়ে সেগুলো কেটে ফেলে দেয়াকে কেন্দ্র করে মুনতাহার পরিবারের সঙ্গে মার্জিয়ার সামান্য কথা কাটাকাটি হয়। এই বিরোধের জেরে মুনতাহাকে নিয়ে গিয়ে মেরে ফেলেছে। মুনতাহার জন্য শুধু এলাকার মানুষ কাঁদেনি পুরো দেশের মানুষ কেঁদেছে। আমরা সঠিক বিচার চাই।
আবুল হাসান নামে আরেকজন বলেন, আমাদের গ্রামে এই ঘটনা একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। এই ঘটনা কানাইঘাটের জন্য একটি কলঙ্কিত অধ্যায়। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এই ধরনের ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের যেন রেহাই না দেওয়া হয়। তাদেরকে আইনের আওতায় এনে ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে সিলেটে জেলা পুলিশের কানাইঘাট সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার অলক শর্মা বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা সবগুলো বিষয় নিয়ে কাজ করছি। আসামিদের ইতোমধ্যে ৫ দিনের রিমান্ডের জন্য থানা নিয়ে আসা হয়েছে। রিমান্ড শেষে হয়তো আরও কিছু তথ্য পেতে পারি।
প্রসঙ্গত, ৩ নভেম্বর সকালে নিখোঁজের আগে মুনতাহা আক্তার জেরিন তার বাবা শামীম আহমদের সঙ্গে স্থানীয় একটি মাদরাসার ওয়াজ মাহফিলে গিয়ে বাড়িতে আসে। পরে চিপস খাওয়ার জন্য ৫ টাকা চাইলে তার বাবা চিপস এনে দেন। কিছুসময় পর যোহরের ওয়াক্ত হওয়ায় মসজিদে নামাজে চলে যান শামীম। ওই সময়ে দুটি সবুজ রঙয়ের আপেল হাতে নিয়ে মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে মুনতাহা ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর থেকেই আর তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। গত শনিবার (৯ নভেম্বর) কানাইঘাট থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি অপহরণ মামলা করেন। রোববার ভোররাতে মুনতাহার মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ সেটাকে হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড করে। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে ৪ জনকে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন-কানাইঘাট থানার বীরদল ভাড়ারীফৌদ গ্রামের মৃত ময়না মিয়া আলিফজান (৫৫) ও তার মেয়ে শামীমা বেগম মার্জিয়া (২৫), একই এলাকায় ইসলাম উদ্দিন (৪০) ও নাজমা বেগম (৩৫)।
সোমবার (১১ নভেম্বর) আসামিদের সিলেট জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কাজী মো.আবু জাহের বাদলের আদালতে তোলার পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শামসুল আরেফিন জিহাদ ভূঁইয়া ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে বিচারক ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।