আমানতকারীদের টাকা ক্ষতিপূরণসহ ফেরতের দাবি
ব্যক্তি আমানতকারীদের টাকা ক্ষতিপূরণসহ ফেরত দেওয়াসহ ৪ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ব্যক্তি আমানতকারী ফোরাম।
সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের কো-অর্ডিনেটর তাসদিক আহমেদ লিখিত বক্তব্যে বলেন, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক লাইসেন্স প্রাপ্ত একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ ব্যাংক তাকে জনসাধারণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক উৎসহ হতে আমানত নিতে বৈধতা দিয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং- এর বর্তমান দুরবস্থা ব্যবসায়িক লাভ-ক্ষতির জন্য না বরঞ্চ সরাসরি লুটপাটের জন্য হয়েছে। এই লুটপাট পি.কে. হালদার সিন্ডিকেট করতে পেরেছে বি.এস.ই.সি (BSEC) এবং বাংলাদেশ ব্যাংক- এই দুটি রেগুলেটরি সংস্থার কারণে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস. কে.সুর এবং জেনারেল ম্যানেজার শাহ আলম সরাসরি জনসাধারণের আমানত লুটপাটে এই সিন্ডিকেটকে সহায়তা করেছেন। তাদেরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন করা দরকার।
তিনি বলেন, ২০২০ সালে মহামান্য হাটকোর্ট কর্তৃক অবসরপ্রাপ্ত আমলা নজরুল ইসলাম খানকে (এন.আই.খান) চেয়ারম্যান করে নতুন একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়। কিন্তু, দীর্ঘ ৪ বছর অতিক্রম করার পর, আমরা আমানতকারীরা বলছি, একজন অবসরপ্রাপ্ত আমলার নেতৃত্বাধীন পরিচালনা পর্ষদ আমাদের স্বার্থ রক্ষায় একেবারেই অক্ষম। অবসরপ্রাপ্ত আমলা এন.আই.খান এর নেতৃত্বে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এর এই জটিল পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ লাভ একদমই অসম্ভব। তিনি এই ডুবন্ত প্রতিষ্ঠানে তার পরিবার ও পরিজন থেকে ৭/১০ জনকে চাকরি দিয়েছেন। এই কেম্পানির চেয়ারম্যান থেকে এই কোম্পানির কুমিরের খামার (ময়মনসিংহে অবস্থিত) উদ্দীপন নামে একটি এন.জি.ও.কে দিয়েছেন- যার চেয়ারম্যানও তিনি। এখানে আমানতকারীদের স্বার্থ বেশ ভালভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এন.আই.খান-কে অবিলম্বে চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে তার এই সমস্ত কাজ স্বল্প সময়ের মধ্যে অনুসন্ধান করে দোষ পাওয়া গেলে তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
তাসদিক আহমেদ বলেন, আমাদের অর্থাৎ ব্যক্তি আমানতকারীদের আজীবনের সঞ্চয় গত ৬ বছর ধরে (২০১৮ হতে) আটকে আছে। এই সময় ১৪০০ ব্যক্তি আমানতকারী বাংলাদেশি নাগরিকের যে সঞ্চয়তার অন্তত ৭০ শতাংশ মূল্য হারিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের জন্য আমাদের আমানত গত ৬ বছর ধরে আমরা ফেরত পাচ্ছি না। এর দায়িত্ব অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া উচিত। কিন্তু তা তারা না নিয়ে টাকা উদ্ধারের পুরো দায়িত্ব আমাদের উপর ছেড়ে দিয়েছে এবং বলেছে যে যখন যে টাকা উদ্ধার হবে তা আনুপাতিকভাবে আমাদের দেয়া হবে। অর্থাৎ টাকা কবে ফেরত পাওয়া যাবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। যা খুবই অন্যায়।
এসময় ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ব্যক্তি আমানতকারী ফোরামের পক্ষ থেকে তিনি তাদের চার দফা দাবি তুলে ধরেন। তাদের দাবিগুলো হলো:
এন.আই. খান কে বরখাস্ত করে বর্তমান পর্ষদ এখনই ভেঙ্গে দিতে হবে; এস.কে.সুর এবং শাহ্ আলমকে গ্রেফতার করে এখনই বিচারের আওতায় আনতে হবে; বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর যাতে ব্যক্তি আমানতকারীদের বক্তব্য শুনেন সেই ব্যবস্থা করতে হবে; এবং ব্যক্তি আমানতকারীদের টাকা এখনই ক্ষতিপূরণসহ ফেরত দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ব্যক্তি আমানতকারী ফোরামের সভাপতি বাদল নন্দী, জেনারেল ডিপোজিটর সোহেল আহমেদ, নাসরাত হোসেন, জাওয়াদুল ইসলাম প্রমুখ।