পাইকারিতে কমতে শুরু করেছে আলুর দাম, প্রভাব নেই খুচরা বাজারে
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে অসহনীয় জনজীবন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাজার তদারকি ও শুল্ক কমানোর মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও এক পণ্যের দাম কমার সাথে সাথে বেড়ে যায় অন্য আরেক পণ্যের দাম। আবার পাইকারি বাজারে কমলেও সে প্রভাব খুচরা বাজারে আসতে লেগে যায় কয়েকদিন। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ খেঁটে খাওয়া মানুষ পড়েছেন দুর্ভোগে।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাজধানীর কাওরান বাজার পাইকারি আড়ত ও আশেপাশের বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। এদিন পাইকারি আড়ত থেকে দাম কমার কথা জানানো হলেও খুচরা বাজারে পাওয়া গেছে ভিন্ন চিত্র।
রাজধানীর শেওড়াপাড়া কাঁচাবাজার, কাওরান বাজার ও ইস্কাটন রোডের বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি সাদা আলু পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা আর লাল আলু ৬২ টাকা প্রতি কেজি। তবে তা খুচরা বাজারে গিয়ে প্রতি কেজি ৭০-৭৫ টাকা করে বিক্রি করতে দেখা যায়। এছাড়াও আগাম বাজারে উঠা নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১২০ টাকা করে।
কাওরান বাজারে অবস্থিত বিক্রমপুর ভান্ডারের আড়ৎদার ইউসুফ মিয়া বার্তা২৪.কম-কে জানান, গত দুই দিন ধরে আলুর দাম কমছে। আগে আলুর দাম ৬২ থেকে ৬৫ টাকা থাকলেও এখন সেটা কমে আসছে। গত দুই দিন ধরে আমরা সাদা আলু ৬০ টাকা ও লাল আলু ৬২ টাকা ধরে বিক্রি করছি।
আলুর দাম সামনে আরও কমবে কি না জানতে চাইলে ইউসুফ মিয়া বলেন, এটা তো আসলে বাজারের উপর নির্ভর করে, আমাদের পক্ষে নিশ্চয়তা দিয়ে বলা যায় না। তবে দাম কমতে পারে। আর এক থেক দেড় মাস পরেই যেহেতু বাজারে নতুন আলু চলে আসবে সে ক্ষেত্রে দাম বাড়বে বলে মনে হয় না।
পাইকারি বাজারে দাম কমছে এটা জানেন কি না জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক খুচরা বিক্রেতা বলেন, আমি তো গত দুই দিন আলুর বাজারে যাইনি তাই বলতে পারছি না দাম কমছে কি না। যদি দাম কমে থাকে তাহলে নতুন আলু আনলে তখন দাম কমেই বিক্রি করবো। আমরা তো এক বস্তা আলু এনে এক সপ্তাহ বিক্রি করি, এখন বেশি দামে এনে লস দিয়ে তো বিক্রি করতে পারবো না।
তাহের হোসেন নামের এক ক্রেতা বার্তা২৪.কম কে বলেন, সব কিছুর দামই বাড়তি, ৭০-৭৫ টাকা করে আলু কিনতে হচ্ছে। কাঁচা মরিচের দাম একটু কমে আবার বেড়ে গেছে। এখন কাকে কি বলবেন। এগুলোর প্রতি তো কেউ খেয়াল করছে না। অন্ততপক্ষে বাজার যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারতো তাহলে মানুষ অনেক শান্তি পাইতো।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দ্রব্যমূল্যের দাম কিছুটা কমলেও তা স্থায়ী হয়নি বেশিদিন। এরপর থেকে শুল্ক কমিয়ে, বাজার তদারকি করে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে দাম কমানোর চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি কিছুই। এমতাবস্থায় নানা সমালোচনার মুখে সরকার মন্ত্রণালয় পুনবণ্টন করে নতুন উপদেষ্টা নিয়োগ দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের জন্য।