পটুয়াখালীতে আমন ধানের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি
পটুয়াখালীর কলাপাড়া, গলাচিপা, দশমিনা, বাউফল ও দুমকি উপজেলার ফসলি জমিগুলোতে সবুজে ভরে উঠেছে আমন ধানের ক্ষেত। হেমন্তের কোমল হাওয়ায় দুলছে সজীব ধানের গাছ, যা দেখে কৃষকদের মুখে ফুটেছে প্রশান্তির হাসি। এ বছর আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
চলতি আমন মৌসুমে শুরুতে অতিরিক্ত বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে অনেক কৃষকের বীজতলা নষ্ট হয়েছিল। তবে হতাশ না হয়ে কৃষকরা ধারদেনা করে পাশের এলাকা থেকে চড়া দামে আমন চারা কিনে পুনরায় জমিতে রোপণ করেন। দুই মাসের নিবিড় পরিচর্যার ফলে বর্তমানে অধিকাংশ ক্ষেতেই ধানের শিষ দেখা দিয়েছে। কিছু জমিতে ধান সোনালি আভা পেয়েছে এবং ক্ষেত থেকে সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে, যা বাম্পার ফলনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
কলাপাড়ার কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, ‘প্রথম দিকে বীজতলা নষ্ট হওয়ায় চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। তবে আবার চারা লাগানোর পর এখন ফসলের অবস্থা ভালো। আশা করছি, এবার আমন ধান ভালো দামে বিক্রি করতে পারবো।’
সদর উপজেলার কৃষক আবু মুছা বলেন, ‘আমার তিন বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছি। ধানক্ষেতের এমন সবুজ আভা দেখে খুব ভালো লাগছে। আশা করছি, এবার ভালো ফসল পেলে সারা বছরের খরচ উঠে আসবে।’
দুমকির কৃষক হারুন অর রশিদ বলেন, ‘বৃষ্টি বেশি হওয়ায় শুরুতে কিছু সমস্যা হয়েছিল। তবে এখন ক্ষেতের অবস্থা চমৎকার। আশা করছি, এবারের ফলন আমাদের সবার মুখে হাসি ফোটাবে।’
জেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর পটুয়াখালীতে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। প্রাথমিকভাবে কিছু চ্যালেঞ্জ থাকলেও বর্তমানে আবহাওয়ার অনুকূল প্রভাবের কারণে মাঠজুড়ে সবুজের সমারোহ দেখা যাচ্ছে। এতে করে কৃষকরা এখন বাম্পার ফলনের আশায় দিন গুনছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এবারের আমন মৌসুমে কৃষকরা সঠিক সময়মতো সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করায় উৎপাদন ভালো হচ্ছে। আমরা আশাবাদী যে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে পটুয়াখালীর কৃষকরা বাম্পার ফলন পাবেন, যা তাদের জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য বয়ে আনবে এবং জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
চলতি আমন মৌসুমে বাম্পার ফলন হলে পটুয়াখালীর কৃষকরা ফসল বিক্রির মাধ্যমে আর্থিক সচ্ছলতা ফিরে পাবেন। একই সঙ্গে জাতীয় খাদ্যশস্য মজুদ বৃদ্ধিতে এই উৎপাদন সহায়ক হবে, যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।