রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ
রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শেখ মোহাম্মদ আব্দুল হান্নানের অপরাসণের দাবিতে জেলা সদর হাসপাতাল ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ১১টা থেকে দুপুর পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন।
বিক্ষোভটি রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতাল থেকে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।
বিক্ষোভ থেকে গত মঙ্গলবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী তানভীর শেখের অবহেলা জনিত কারণে মৃত্যুর অভিযোগ তোলেন শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া জেলা সদর হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা, খাবারের নিম্নমান, ওষুধ জালিয়াতি, চিকিৎসকদের কর্মস্থলে সময়মতো উপস্থিত না থাকা, হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে দিয়ে চিকিৎসাসেবা প্রদানসহ অল্প অসুস্থতায় হাসাপাতাল থেকে রেফার্ড করার বিষয় তুলে ধরা হয়।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে হাসপাতাল থেকে সটকে পড়েন তত্ত্বাবধায়ক ডা. শেখ মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান ।
বিক্ষোভ শেষে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি তুলে ধরেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থী সাঈদুর জামান সাকিব ও মিরাজুল মাজীদ তুর্য।
সিভিল সার্জন ডা. ইব্রাহিম টিটন বলেন, রাজবাড়ীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আমার কার্যালয়ের এসেছিলেন। জেলা সদর হাসপাতাল নিয়ে শিক্ষার্থীরা বেশ কিছু অভিযোগ করেছেন। আমি বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে সাথে কথা বলেছি।
সিভিল সার্জনের দফতর থেকে শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অবস্থান গ্রহণ করেন। এ সময় রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞায় কাছে জেলা সদর হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী তানভীরের হত্যার বিষয়টি তুলে ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী মো. সাঈদুর জ্জামান সাকিব বলেন, আমাদের বন্ধু তানভীর আমাদের সাথে কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি অত্যন্ত ভালো ছাত্র ছিলেন। ডা. আবুল হোসেন কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তাকে সন্ত্রাসীরা হত্যার উদ্দেশে গুরুতর আহত করা হয়। আহত অবস্থায় জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ভালোমতো চিকিৎসাসেবা দেয়নি।
তরিঘড়ি করে ফরিদপুরে রেফার্ড করেন। সেখানে যেতে নূন্যতম ৪০ মিনিট সময় লাগে। রাজবাড়ী থেকে এক ব্যাগ রক্ত দিয়ে ফরিদপুর পাঠালে তানভীর হয়তো প্রাণে বেঁচে যেতেন। সেটা জেলা সদর হাসপাতাল থেকে করা হয়নি।
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতাল নিয়ে অভিযোগ আমি শুনেছি। আমি রাজবাড়ীতে যোগদানের পর হাসপাতাল পরিদর্শন করেছি। জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার মান উন্নয়নে কাজ করব।
জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শেখ মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান বলেন, কর্তৃপক্ষ যদি মনে করেন আমার থেকে যোগ্য লোক এখানে আসলে হাসপাতাল ভালো চলবে তাহলে আমি এখান থেকে চলে যাবো।