নরসিংদীতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ট্রেনের নিচে যুবক
স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে চট্টগ্রামগামী তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে কাটা পড়েছেন মো. সাইদুর রহমান রহিদ (৩৬) নামে এক যুবক।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করে নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ।
নিহত মো. সাইদুর রহমান রহিদ ঢাকা দক্ষিণ কাফরুল এলাকার মো. ইসলাম শেখের ছেলে। নিহত সাইদুর রহমান রাহিদ বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে আইটি প্রোভাইডার হিসেবে চাকরি করেতেন।
স্থানীরা জানায়, প্রায় সাত বছর আগে সদর উপজেলার ঘোড়াদিয়া সোনাতলা এলাকার রহমান মুন্সীর মেয়ে তহুরা খাতুনকে বিয়ে করেন সাইদুর রহমান রহিদ। দাম্পত্য জীবনে তাদের সংসারে রয়েছে একটি কন্যা সন্তান। সম্প্রতি স্ত্রী তহুরা স্থায়ীভাবে বাবার বাড়িতে থাকা নিয়ে তার স্বামীর সাথে ঝগড়া হয় একাধিকবার।
এর জের ধরেই গতকাল রাতে নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় স্বামী সাইদুর রহমান। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের পুরানপাড়া এলাকায় চট্টগ্রামগামী তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে কাটা পড়েন তিনি। পরে মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠায় পুলিশ।
মারা যাওয়ার আগে সাইদুর রহমান ফেসবুকে লিখে যান, প্রতিটি ছেলের জীবনেই প্রথম প্রেম তার মা, দ্বিতীয়জন সহধর্মিণী আর তৃতীয় তার সন্তান। আমার পারসেপশন ছোটবেলা থেকেই এমন। কিন্তু বিবাহিত জীবনে এসে আমি দুটোকে ব্যালেন্স করতে পারলাম না। সবকিছু ঠিকঠাক ছিল, মাজখানে তাহুরা ও তার পরিবার দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে গেল। আজ ৪ মাস ২৩ দিন আমরা সেপারেশনে আছি। আমি অনেক আকুতি-মিনতি করেছি, বাঁচতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারলাম না। আজকেও তুমি নিজে আমাকে ডেকে এনে আমার বাচ্চাকে দুচোখ ভরে দেখতে দিলে না। আমি তোমাকে ছাড়া এক মুহূর্তেও ভাবতে পারি না; সেই তুমি প্রতারণা করলে। তোরা আমাকে অনেক অপমান করেছিস। ভালো থাকিস তোরা সবাই। এই পৃথিবীতে আমার সফর এই পর্যন্তই ছিল। পৃথিবী আমাকে অনেক কিছুই দিয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। বিদায় আলবিদা।
নিহতের পরিবারের সদস্যদের দাবি, স্ত্রীর সাথে পারিবারিক কলহের জেরে আত্মহত্যা করেছে সাইদুর। মারা যাওয়ার আগে নিজের ফেসবুকে সবই লিখে গেছে সে। শেষবারের মতো তার সন্তানের মুখটিও দেখতে দেয়নি তার স্ত্রী। ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আমরা বিচার দাবি করছি।
নরসিংদীর রেলওয়ে ইনচার্জ মো. শহিদুল্লাহ জানান, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।