ভবদহ জলাবদ্ধ এলাকার পানিবন্দি মানুষের পাশে রশীদ বিন ওয়াক্কাস
মণিরামপুরের হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা কুলটিয়া ইউনিয়নের মশিহাটি ও হাটগাছাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার পানিবন্দি মানুষের কষ্ট লাঘবে তাদের পাশে থাকার ঘোষণা করেছেন মণিরামপুরের গণমানুষের নেতা মাওলানা রশীদ বিন ওয়াক্কাস।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) পানিবন্দি এলাকা পরিদর্শন ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের হাতে সহায়তা তুলে দেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা রশীদ বিন ওয়াক্কাস।
পানিবন্দি এলাকা পরিদর্শনের সময় জমিয়তের শতাধিক নেতাকর্মী তার সঙ্গে ছিলেন। এ সময় তিনি পানিতে নেমে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে খোঁজ-খবর নেন ও সর্বাবস্থায় তাদের পাশে থাকার ঘোষণা দেন। পরে মশিহাটি বাজারে কুলটিয়া ইউনিয়নের ৯ ওয়ার্ডের তিন শতাধিক পানিবন্দি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে নগদ অর্থ সহায়তা বিতরণ করেন।
কুলটিয়া ইউনিয়নের আপামর জনতা বিশেষত হিন্দু নারী ও পুরুষেরা মাওলানা রশীদ বিন ওয়াক্কাসকে কাছে পেয়ে যারপরনাই খুশি প্রকাশ করেন এবং প্রয়াত নেতা মণিরামপুরবাসীর আস্থার প্রতীক মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস সম্পর্কে তাদের ভক্তি, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন।
মাওলানা রশীদ বিন ওয়াক্কাস ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্দেশ্যে বলেন, মুসলমান যেমন এদেশের নাগরিক তদ্রুপ হিন্দুরাও এদেশের নাগরিক। সুতরাং তাদেরকে সংখ্যালঘু বলে ছোট করাও বৈষম্যের শামিল।
তিনি বলেন, বিগত সরকারের আমলে মহা লুটপাট হয়েছে। এলাকার মানুষের উল্লেখযোগ্য কোনো উপকার হয়েছে বলে আমার জানা নেই। বছরের পর বছর ভবদহ পানি সমস্যা জিইয়ে রেখে সরকারি বরাদ্দ হরিলুট করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমার বাবা মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে কিভাবে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে হয়; তা বাস্তবে দেখিয়ে গেছেন। আমরা তার আদর্শের ওপর অটল অবিচল আছি। আল্লাহ যদি আমাদের সুযোগ দান করেন, তাহলে ভবদহ অভিশাপ থেকে জনগণকে মুক্তির সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো- ইনশাআল্লাহ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন যুব জমিয়ত বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মুফতি কামরুজ্জামান কাসেমী, সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হাসান আল মামুন।জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ মণিরামপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আজিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আজহারুল ইসলাম, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মাওলানা আশরাফ ইয়াছিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আমজাদ হোসেন। প্রচার সম্পাদক হাফেজ রফিকুল ইসলাম। ছাত্রনেতা এস এম মারুফ, মুহাম্মদ উল্লাহ, মারুফ খান প্রমুখ ও স্থানীয় একাধিক জনপ্রতিনিধি।
উল্লেখ্য, যশোর জেলার দক্ষিণ-পূর্ব অংশে অভয়নগর, মনিরামপুর, কেশবপুর, ডুমুরিয়া ও ফুলতলার কিছু অংশ নিয়ে ভবদহের অবস্থান। চার দশক ধরে এখানকার ৩৩০ কিলোমিটার এলাকার ৩ লাখ মানুষ জলাবদ্ধতায় ভুগছেন। গত দুই বছর কিছুটা কমলেও চলতি মৌসুমি ভারী বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতার বিস্তৃতি আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে।
অভয়নগর, মনিরামপুর, কেশবপুর অঞ্চলের ৩৫টি গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে গেছে। হাজার হাজার কৃষকের ২৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।