মহাখালী অবরোধ করে রিকশাচালকদের বিক্ষোভ, ভোগান্তিতে জনসাধারণ
রাজধানীর মহাখালী সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে চলছে রিকশাচালকদের বিক্ষোভ। এতে তীব্র যানজটে ভোগান্তিতে পড়েছেন চলাচলকারী সাধারণ মানুষ।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকাল ৮টায় মহাখালী সড়ক অবরোধ করে এই আন্দোলন শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনের এক পর্যায়ে বন্ধ করে দেয় রেললাইনও।
সরেজমিনে দেখা যায়, আন্দোলনের ফলে সকাল থেকেই বন্ধ হয়ে যায় মহাখালী হয়ে যাতায়াতকারী বিভিন্ন সড়ক। তেজগাঁও থেকে উত্তরা ও গুলশানগামী সড়কটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে ফার্মগেট থেকে উত্তরাগামী সড়কটি বন্ধ হয়ে গেলেও ফ্লাইওভার দিয়ে যান চলাচলে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাতায়াতকারীরা।
এসময় অনেককেই গাড়ি থেমে নেমে বাধ্য হয়ে হেঁটে রাস্তা পার হতে দেখা যায়। অনেকেই আবার ছোট বাচ্চা ও ব্যাগ হাতে নিয়ে পার হচ্ছেন রাস্তা। এর মধ্যে ছিলো বৃদ্ধ-সহ অনেক অসুস্থ মানুষও।
গাজীপুর থেকে মোহাম্মদপুর যাচ্ছিলেন প্রবীণ পথচারী ফজিলাতুন্নেসা। প্রায় নব্বইয়োর্ধ্ব এই মহিলার সঙ্গে ছিলেন তার ছেলে। অনেকটা অসহায়ত্ব প্রকাশ করে তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, দেশ তো এখন আন্দোলনকারীদের। মা কে নিয়ে গাজীপুর থেকে মোহাম্মদপুর বোনের বাসায় যাচ্ছিলাম। অটোরিকশা চালকদের আন্দোলনের জন্য গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বাস থেকে নেমে এখন রাস্তা পার হচ্ছি। দেখি ঐ পাশে গিয়ে কিছু পাওয়া যায় কি না।
মহাখালী জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে বিপাকে পড়েছেন তৌহিদুর রহমান। ডাক্তার দেখানো শেষে চলে যেতে চাইলেও গাড়ি না থাকায় আটকে আছেন এখানে। তৌহিদ বলেন, আমার বাসা আজিমপুর, মহাখালী আসছি ডাক্তার দেখাতে। কিন্তু এখন বাসায় যাওয়ার জন্য কোন গাড়ি পাচ্ছিনা। যার ফলে ভোগান্তিতে পড়ছি।
আন্দোলনকারী অটোরিকশা চালকদের কাছে মানুষের ভোগান্তি নিয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, আন্দোলন প্রতিদিনই হচ্ছে। এই রিকশা দিয়ে আমার পরিবার চালানো লাগে। এখন যদি হঠাৎ করে বন্ধ করে দেয় তাহলে আমরা কোথায় যাবো? মানুষের কষ্ট হচ্ছে কিন্তু আমাদের কষ্টও বুঝতে হবে। আমাদের রাস্তায় নামা ছাড়া আর কোন উপায় ছিলো না। আমাদের রিকশা বৈধ করে দেয়ার ঘোষণা দিক, আমরা চলে যাবো।
গুলশান জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) তারেক ঘটনাস্থলে এসে সাংবাদিকদের জানান, আমরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলছি, তাদের বুঝানোর চেষ্টা করছি। আপাতত একটা লেন যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দিতে। আমরা তাদের বলছি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা কথা বলছি, সমাধানের চেষ্টা করছি। আপনারা একপাশে থেকে আরেকপাশ ছেড়ে দিন। রাস্তা বন্ধ থাকায় জনগণের কষ্ট হচ্ছে।