জন্মদিনে কেক কাটাকে কেন্দ্র করে হামলায় প্রাণ গেলো যুবকের

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শ্যামলীতে কেক কাটাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের হামলায় আকবর হোসেন (২৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।

রোববার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শ্যামলী পার্ক মাঠের ভেতর এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা সবাই মোহাম্মদপুর থানা ২৯ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলো।

বিজ্ঞাপন

নিহত আকবর হোসেন (২৮) আনোয়ার হোসেনের ছেলে। তিনি পরিবারের সাথে রাজধানীর আদাবর এলাকায় বসবাস করতেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল (রোববার) দুপুর ২টায় শ্যামলী পার্ক মাঠের ভেতর বন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটতে যায় সজল নামে এক যুবক। সে সময় মাঠের ভেতরে ডেভিড রাসেল, রিয়াজ, খলিল, জলিল, রিপন ও রবি সহ কয়েকজন মাদকসেবন করতেছিলো। কেক কাটার সময় ডেভিড রাসেল ও রিয়াজসহ মাদকসেবীদের একটি দল সজলের ওপর আতর্কিত হামলা করে তাকে মারধর করে। মারধরের সময় বলে, কার অনুমতি নিয়ে মাঠে কেক কাটতে আসলি? আমরা এখানে বসে আছি দেখস না। মারধরের এক পর্যায়ে সজল ও তার বন্ধুরা মিলে মাঠ থেকে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। সন্ধ্যায় সজল ও বন্ধুরা মিলে মাঠের পাশ দিয়ে বাসায় যাওয়ার সময় আবারও মাদকসেবীরা মিলে তাদের আটক করে। এক পর্যায়ে তারা দেশিয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে এসে আকস্মিক হামলা করে। এ সময় আকবর নামে আরেক যুবক মারামারি থামাতে আসলে মাদকসেবীরা তার পেটের ভেতর ধারালো অস্ত্র ঢুকিয়ে দিলে ঘটনাস্থালে সে লুটিয়ে পড়ে। সাথে সাথে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে নিহত হয়।

বিজ্ঞাপন

আরও জানা যায়, হামলাকারী সবাই মোহাম্মদপুর থানা ২৯ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলো। সরকার পতনের পর তারা শ্যামলী পার্ক মাঠের ভেতর মাদক বিক্রি ও মাদক সেবন করতো। মাদক ও কিশোর গ্যাংয়ের সাথে যুক্ত থাকায় এদের কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না।

এ ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী রাসেল মিয়া জানান, গতকাল সন্ধ্যার পর শ্যামলী মাঠে পোড়া বস্তির রিয়াজ, দাগী, রাজা ও ডেভিড রাসেল সহ কয়েকজন মাদকসেবী ধারালো অস্ত্র নিয়ে এসে অতর্কিত গালাগালি শুরু করে। এ সময় তারা সবাই মাদক খাওয়া অবস্থায় ছিলো। সবার মুখ থেকে মাদকের দুর্গন্ধ আসতেছিলো। এদের মধ্যে রিয়াজ ও ডেভিড রাসেল বড় লম্বা ছুরি নিয়ে এসে আকবরের পেটের ভেতর ঢুকিয়ে দেয়। এরপর আমরা সবাই তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। তারা সবাই ছাত্রলীগ করতো। বর্তমানে শ্যামলী পার্ক মাঠের ভেতর মাদক বিক্রি ও বসে বসে মাদকসেবন করে।

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী মো.শরীফ জানান, গতকাল সন্ধ্যায় দেশিয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে এসে ছাত্রলীগের কয়েকজন আকস্মিকভাবে সজল এর ওপর হামলা করে। এ সময় আকবর দৌঁড়ে তাদের ছুটাতে গেলে তার পেটের ভিতর ছুরি ঢুকিয়ে দেয়। ওই সময় সে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানোর পর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। হামলাকারী সবাই এ মাঠে মাদক বিক্রি ও
সেবন করে। তারা আগে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলো।

নিহতের বাবা আনোয়ার হোসেন জানান, কে বা কারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে আমি কিছুই জানি না। আমি আমার ছেলেকে হত্যাকারীদের বিচাই চাই।

এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলী ইফতেখার জানান, এ ঘটনায় আমি থানা থেকে পুলিশ পাঠিয়েছি। তারা ঘটনাস্থল দেখে এসেছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলার প্রক্রিয়া চলমান।