'নিজের অপকর্ম ঢাকতে এবং রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে শ্রমিকলীগ নেতা খোরশেদ আলম চট্টগ্রাম নগর জামায়াত আমির শাহজাহান চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী মো. আরমান উদ্দিনকে মিথ্যা তথ্য ফাঁসানোর চেষ্টার করা হচ্ছে।'
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরীর লাভলেইনে মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব জানান আবদুল্লাহ মোহাম্মদ আদিল। নগর জামায়াতের আমির মুহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরীর ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) মো. আরমান উদ্দিন ও তাঁকে জড়িয়ে অভিযোগের প্রতিবাদ জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
লোহাগাড়া-সাতকানিয়া আসনের সাবেক এমপি নদভীর ইশারায় গতকাল সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে জানিয়ে বলেন, কিছু এজেন্টদের মাধ্যমে মহানগর আমিরের মান ক্ষুণ্ণ করার জন্য ওনার পিএস এর বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্র হয়েছে। আমার খোরশেদের সাথে কথাতো দূরের কথা, দেখাও হয়নি। ওনাদের পাশ দিয়ে হাঁটতে একটু ঊনিশ-বিশ হলেও মামলা দিতো। খোরশেদের কাছে অনুরোধ আমি তার সাথে কথা বলেছি, এমন প্রমাণ থাকলে তিনি প্রকাশ করুক।
সংবাদ সম্মেলনে আদিল বলেন, ব্যবসায়ী খোরশেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে লুট হওয়া টাকা উদ্ধারে চুক্তি, হাত-পা বেঁধে নির্যাতন কিংবা প্রাণে মারার হুমকির বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। গত ৫ আগস্ট তার (খোরশেদ) দোকানপাট লুট এবং আগুন ধরিয়ে হয়েছে বলে তিনি সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন। কিন্তু গত ৮ আগস্ট মহানগর আমিরের পিএস (আরমান) কারামুক্ত হন। কারাগার থেকে কিভাবে তিনি লুটপাটে নেতৃত্ব দিলেন?।
তিনি বলেন, লোহাগাড়ার সাবেক ওসি ও দুদকের মামলার আসামি শাহজাহানের সাথে তার অবৈধ সম্পদের সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়াও ছাত্র-জনতার আন্দোলনে করা হামলায় তার সরাসরি অংশগ্রহণ ছিল। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের করা মানিলন্ডারিংকারীদের তালিকায় লোহাগাড়া থেকে সে এক নম্বরে রয়েছে। খোরশেদ গরীব অসহায় মানুষদের জায়গা-জমি বিভিন্নভাবে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে।
উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের প্রবীণ একজন ইটভাটা ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে তার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ২৫ লাখ টাকার শেয়ার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে ইটভাটা দখলের অভিযোগও করেছেন খোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে। তার দাবি- এতে তাকে সাহায্য করে আরেক যুবলীগ নেতা বাদশাহ খালেদ।
এর আগে, গতকাল (২৫ ডিসেম্বর) লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া গ্রামের রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম নগরীর একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেছেন, হাসিনা সরকারের পতনের পর তার দুই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ৩৬ লাখ টাকা লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে এবং পরে ক্যাশবক্সে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় মামলা করার প্রায় তিন দিন পর চট্টগ্রাম নগর জামায়াতের আমিরের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) মো. আরমান উদ্দিন তার সঙ্গে দেখা করতে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ আদিলের মাধ্যমে ফোন করেন। দোকান খুলে ব্যবসা করা এবং লুট করা মালামাল উদ্ধার করতে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।
খোরশেদ আলম আরও অভিযোগ করেছেন, ৮ লাখ টাকা ‘চুক্তি’ সম্পন্ন না হওয়ায় তাকে অপহরণ করে বেধড়ক পিটুনি দেওয়া হয় এবং হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয় এবং জেলে পাঠানো হয়। জামিনে বের হলেও এখনও তিনি বিভিন্ন ধরনের হুমকির মুখে রয়েছেন।
এ বিষয়ে নগর জামায়াতের আমিরের পিএস মো. আরমান উদ্দিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমি চাঁদা দাবি করেছি বা চেক নিয়েছি-এমন কোনো প্রমাণ থাকলে দেখানোর জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। আমি ৮ আগস্ট জেল থেকে বের হয়েছি। খোরশেদ আলম বর্তমানে স্থানীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি এবং অনেকের জমি, দোকানপাট দখলে রেখেছেন। তিনি আরও দখল রাখতে চান বলে দাবি করেছেন।