চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, আমাদের দেশে এখনো এডভান্স ট্রাফিক সিস্টেম কেন মানা হচ্ছে না আমি বুঝতে পারছি না। আমি ট্রাফিক বিভাগের সাথে বসব। এডভান্স ট্রাফিক সিস্টেম আবার চালু করার চিন্তা-ভাবনা আছে।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণ-পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ডা. শাহাদাত হোসেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হওয়ায় তাকে এই সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণ-পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোরশেদুল আলম কাদেরীর সভাপতিত্বে এবং চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী ও যুগ্ম সম্পাদক মো. শাহজাহানের পরিচালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আসফিকুজ্জামান আক্তার।
গণপরিবহনের চালকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো জরুরি জানিয়ে মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, অতীতে এমন কিছু আইন করা হয়েছে যে ভালো ভালো চালকরা এই পেশা থেকে সরে যাচ্ছে তাদের পরিবারের সিকিউরিটির জন্য। দুর্ঘটনার মত যে সমস্যাগুলো হয়, যারা গাড়ি চালান তাদের যদি আমরা কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষার মধ্যে আনতে পারি তাহলে ওই চালক এবং গণপরিবহনের যাত্রীরাও নিরাপদবোধ করবেন।
শৃঙ্খলার মধ্যে গণপরিবহনের সাথে তাল মিলিয়ে পরিবহনবান্ধব শহর করার কথা তুলে ধরে চসিক মেয়র বলেন, একটা শহরকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে হলে গণপরিবহনের সাথে তাল মিলিয়ে একটা পরিবহনবান্ধব শহর করা জরুরি। এখানে যে বাস টার্মিনালগুলো আছে সেগুলো অপরিকল্পিতভাবে হয়েছে। সেই কারণে কিছু ডিসপ্লেনের অভাব আছে, সমস্যা আছে। টার্মিনালে বখাটে আছে, কিছু মাদক ব্যবসায়ী আছে, এগুলোর ব্যাপারেও সিরিয়াসলি অ্যাকশনে যেতে হবে। আর সেখানে রাতে অনেক সময় লাইট থাকে না, সেগুলো আমরা দেখছি। যাতে করে পর্যাপ্ত পরিমাণে লাইট থাকে, মানুষের সিকিউরিটি থাকে। যারা বাইরে থেকে আসে, বিভিন্ন ধরনের পর্যটক, তাদের সিকিউরিটির বিষয়ে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব, ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরো বলেন, কুলগাঁও এলাকায় আমাদের একটা বাস টার্মিনাল হচ্ছে, যেটি বড় বাস টার্মিনাল। আরেকটা বাস টার্মিনাল কর্ণফুলী ব্রিজের পাশে। দক্ষিণ চট্টগ্রামে প্রবেশ করতে প্রচুর পরিমাণে যানজট হয়। আমি স্পট দেখে এসেছি। আশা করি, সেটা হয়ে গেলে ইনশাআল্লাহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের যানজট কমে আসবে।
‘আমি পরিবহণ মালিক-শ্রমিকদের সাথে বসব। আমি চাই সড়কে বাসগুলো যত্রতত্র যাতে না দাঁড়িয়ে একটি নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড়াক। দরকার হলে আমরা যাত্রীছাউনী করে দেব। ওখানে বাসগুলো ঠিকমত দাড়ালে যানযট আরও কমবে।’
জলবদ্ধতার কথা তুলে মেয়র বলেন, নালা পরিষ্কার করলাম, খাল পরিষ্কার করলাম। কিন্তু প্লাস্টিকের বোতল পলিথিন এগুলো বাইরে থ্রো করছি, এগুলো এরপর নালায় যাচ্ছে। পরে সেখান থেকে জলাবদ্ধতার কারণ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।
চট্টগ্রামবাসীকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম প্রাচ্যের রাণী। এখানে সৌন্দর্য অনেক কমে গিয়েছে। এরকম পাহাড় নদী ও সমুদ্রে ঘেরা শহর আর কোথাও নেই। এ শহরটা সবার শহর মনে যদি ভালোবাসতে পারি তাহলে একটি পরিচ্ছন্ন বাসযোগ্য ক্লিন সিটি গ্রীণ সিটি দেশের মানুষকে ও চট্টগ্রামবাসিকে উপহার দিতে পারব।
এতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা একরামুল করিম, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের পূর্বাঞ্চল কমিটির সভাপতি মৃণাল চৌধুরী, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, স্বাগত বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি অধ্যাপক কফিল উদ্দিন আহমেদ, বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণ-পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ মুছা, বিএনপি নেতা সাবেক কাউন্সিলর নাজিম উদ্দীন আহমেদ, মোহাম্মদ আজম, এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী পিপি, ইদ্রিছ মিয়া, পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মো. মহিউদ্দিন, আহসান চৌধুরী, সদস্য হাবিব চৌধুরী, ফারুক খান, অলি আহম্মদ, আজম চৌধুরী, জাফর আহমেদ, জহিরুল ইসলাম, জিয়াউদ্দীন শরিফ মিজান, অনু কাদের, অধ্যাপক এস এম তৈয়ব, রবিউল মওলা, জাফর উদ্দিন চৌধুরী, নুরুল ইসলাম, মোশাররফ হোসেন প্রমূখ।