ফেনীতে ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ফেনীতে মাসুদা বেগম নামে ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ফেনী সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের পিঠাপাশারী এলাকার মোস্তফা ভূঁঞা বাড়ির সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী। গত ৮ বছর ধরে তিনি সাবেক পৌর কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা গোলাম ফারুকের বাড়ির গৃহপরিচারিকা ছিলেন।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে ফেনী পৌরসভার ফলেশ্বর এলাকায় সাবেক পৌর কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা গোলাম ফারুকের ভাই গোলাম কিবরিয়া বকুলের বাসা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, সাবেক পৌর কাউন্সিলর গোলাম ফারুকের ভাই গোলাম কিবরিয়া বকুলের ঘরে কাজ করার জন্য মাসুদা বেগমকে ডাকা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির লোকজন বকুলের ঘরের সোফার নিচে গলাকাটা অবস্থায় ওই নারীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার শুরু করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসে মরদেহ উদ্ধার করেন।

ওই ভবনে থাকা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রাত ৯টা ১৩ মিনিটে কালো প্যান্ট ও সাদা চেক শার্ট পরিহিত অজ্ঞাত এক যুবক ভবনে প্রবেশ করছে। আবার ৯টা ১৭ মিনিটে ওই যুবক ভবন থেকে দৌড়ে বের হয়ে যায়।

বিজ্ঞাপন

নিহত মাসুদার পুত্রবধূ রাহেনা আক্তার বলেন, গত ১৭ বছর ধরে আমার শাশুড়ি ওই এলাকার বিভিন্ন বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করে আসছেন। রাতে ফারুক কমিশনারের স্ত্রী মোবাইল ফোনে ১০ মিনিটের মধ্যে তাদের বাড়িতে যেতে বলেন। বারবার কারণ জিজ্ঞেস করলেও তারা আমাদের কিছু বলেনি। পরে এখানে এসে দেখি গোলাম কিবরিয়া বকুলের ঘরের সোফার নিচে আমার শাশুড়ির রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে আছে। সন্ধ্যার দিকেও ওই বাড়ির সামনে তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। তিনি শুক্রবার বাড়িতে যাবেন বলেছিলেন।

নিহতের মেয়ে শাহেনা আক্তার রুনা বলেন, আমার মাকে আমার কাছে আনি দেন। তারা আমার মা কে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। বাড়ির সকল লোকজন থাকা অবস্থায় আমার মাকে কিভাবে এমন নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।

সাবেক কাউন্সিলর ফারুকের ভাই গোলাম কিবরিয়া বকুলের স্ত্রী সোনিয়া আক্তার বলেন, আমরা তৃতীয় তলার বাসায় ছিলাম। আওয়াজ শুনে নিচে এসে দেখি দ্বিতীয় তলার দরজা বন্ধ। তাকে (মাসুদা) ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে চোর-ডাকাত সন্দেহে বাড়ির অন্যদের জানানোর জন্য উপরে উঠতেই দরজা খুলে দৌড়ে এক লোক চলে যায়।

এ বিষয়ে ফেনী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর গোলাম ফারুক বলেন, চিৎকার ও আওয়াজ শুনে আমার ছোট ভাইয়ের বউ আমাকে কল করে বলে, ভাইয়া তাড়াতাড়ি বাড়িতে আসেন, বাড়িতে চোর-ডাকাত ঢুকেছে। তখন আমিসহ আরও কয়েকজন দৌড়ে বাড়িতে এসে দোতলার ঘরের দরজা খুলে দেখি রক্তাক্ত অবস্থায় মরদেহ পড়ে আছে। এরপর পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে আলামত সংগ্রহ করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন কাজ শুরু করে।

এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মর্ম সিংহ ত্রিপুরা বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক আমরা ঘটনাস্থলে এসে ভবনের দোতলার সামনের কক্ষে মরদেহ দেখতে পেয়েছি। পরে পিবিআই ও সিআইডি ঘটনাস্থলে এসে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ ও তদন্তের কাজ শুরু করেছে। সিসিটিভি ফুটেজে অজ্ঞাত এক যুবককে ডুকতে ও বের হতে দেখা গেছে, তাকে শনাক্তের কাজ চলছে। এ বিষয়ে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।