সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৩ জন। তবে আজ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যায়নি।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
এতে বলা হয়েছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ লাখ ৭৬৪ জন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন ৯৯ হাজার ৪২৫ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৫৩ জনের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে ১২ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি কর্পোরেশনের বাইরে) ৮ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১৮ জন এবং দক্ষিণ সিটিতে সাতজন, খুলনা, ময়মনসিংহ ও রাজশাহী বিভাগে ২ জন এবং রংপুর ও সিলেট বিভাগে ১ জন করে রোগী রয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যায়ান। চলতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ৫৬৩ জন মারা গেছেন।
সংযোগ সড়ক না থাকায় ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের সোহাগী ইউনিয়নের বগাপুতা খালের ওপর নির্মিত সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সেতুটি কোন কাজে আসছে না। যানবাহন চলাচল না করায় ধান মাড়াই ও শুকানো সহ সেতু ব্যবহার করা হচ্ছে পারিবারিক কাজে।
স্থানীয়রা জানান, ঈশ্বরগঞ্জ-আঠারবাড়ি আঞ্চলিক সড়কের ১৫ কিলোমিটার ঝকঝকে। কিন্ত ওই সড়কের দুঃখ হল বগাপুতা খালের ওপর নির্মিত সেতুটি। দুইপাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি জনগণের কোন কাজে আসছে না। বাধ্য হয়েই পাশের পুরোনো নড়বড়ে সেতু দিয়ে যানবাহন ও পথচারীরা চলাচল করছে। এতে যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথ কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ২০২১ সালে ১১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ঈশ্বরগঞ্জ- আঠারবাড়ি ১৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে ২০২২ সালের শুরুতেই সোহাগী এলাকার বগাপুতা খালের ওপর নির্মিত হয় ৩১.৮২৮ মিটার এই সেতুটি। যার ব্যয় ধরা হয় ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তাহের এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠানটি এই সেতুর কাজ করেন।
দরপত্র অনুযায়ী যথা সময়ে কাজ শেষ করা হলেও সময় বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৬ সাল পর্যন্ত। কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল জানান, দুই বছর আগেই সড়কসহ সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতায় ঠিকাদার সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়ক করতে পারছে না। সেতুর অবকাঠামো নির্মাণ শতভাগ শেষ হলেও ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ আটকে আছে।
জমি ও স্থাপনার মালিকরা বলছেন, প্রায় দুই বছর ধরে ক্ষতিপূরনের টাকা পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারবার ধন্না দিয়েও কাজ হচ্ছে না।
জমির মালিক আব্দুল গফুর, মিরাস উদ্দিন ও মজিবুর রহমান জানান, তাদেরকে জমি অধিগ্রহণের নোটিশ দিয়ে জমি নিলেও পরে আর কোনো খবর নেয়নি। এই জন্য তারা ক্ষতিপূরনের টাকা না পেয়ে এক ধরনের ভোগান্তিতে পড়েছেন। যার কারণে টাকা না পাওয়া পর্যন্ত এখন আর কাজ করতে দেওয়া হবে না।
বগাপুতা গ্রামের জমির মালিক হেলিম মিয়া জানান, সেতু নির্মাণ ও প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা এবং অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো হলেও ভূমি অধিগ্রহণ আর স্থাপনার ক্ষতিপূরনের টাকা দুই বছরেও বুঝে পাননি। ক্ষতি পূরনের টাকা না পাওয়ায় কাজে বাধা দিয়েছেন। তারপরও কর্তৃপক্ষের কোনো টনক নড়ছে না।
সেতুর কাজটির তদারকির দায়িত্বে আছেন কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী বিজয় বসাক বলেন, আমরা জমি অধিগ্রহণের জন্য ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখা হয়েছে। এখন সেখান থেকে ইস্টিমেট অনুযায়ী ভূমির মালিকদের টাকা বুঝিয়ে দিলেই আমরা কাজ শুরু করতে পারবো।
রাজধানীর উত্তরখান থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চোরাই অটোরিকশা উদ্ধারসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির উত্তরখান থানা পুলিশ। গতকাল শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) উত্তরখানের পুরানপাড়ার আটিপাড়া এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ।
এসময় তাদের হেফাজত থেকে তিনটি চোরাই অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস্ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলো: মো.আব্দুল জলিল (৪০) ও হালিম ফকির (২৪)।
থানা সূত্রের বরাত দিয়ে তালেবুর রহমান বলেন, অটোরিকশা চালক মো. আব্দুল জলিল গত ২৬ ডিসেম্বর উত্তরখানের বড়বাগ ট্রান্সমিটারে মোড়ের পূর্ব পাশের গাড়ির গ্যারেজ থেকে অটোরিকশা নিয়ে চালানোর জন্য বের হয়। নিয়ম অনুযায়ী রাতে অটোরিকশা ফেরত দেওয়ার কথা থাকলে আব্দুল জলিল তা করেনি। এ ঘটনায় ২৭ ডিসেম্বর অটোরিকশার মালিক মো. আছলাম হোসেন জনির অভিযোগের প্রেক্ষিতে উত্তরখান থানায় জলিলসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি চুরির মামলা রুজু হয়।
থানা সূত্রের বরাতে তিনি আরও বলেন, তদন্তাধীন এই মামলায় গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে আব্দুল জলিলকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তী সময়ে জলিলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উত্তরখানের পুরানপাড়ার আটিপাড়ার আব্দুল্লাহ অটো এন্টারপ্রাইজ থেকে চোরাই অটোরিকশা ক্রয়কারি হালিম ফকিরকে গ্রেফতার করা হয় ও তার হেফাজত থেকে চুরি হওয়া অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়। এ সময় তার হেফাজত থেকে আরো দুটি চোরাই অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়, যার কোন বৈধ কাগজপত্র হালিম দেখাতে পারে নাই। উদ্ধারকৃত চোরাই অটোরিকশা তিনটির আনুমানিক মূল্য তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন এবং মামলার সুষ্ঠু তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, বর্তমান সময়ে এসে কেউ জমি দখলে ব্যস্ত, কেউ ক্ষমতায় যাবার জন্য ব্যস্ত, কেউ পদ-পদবি পেতে ব্যস্ত, কেউ নিজস্ব লোক পুনর্বাসনে ব্যস্ত, কিন্তু খুনিদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য, খুনিদের বিচারের জন্য আমাদের ওপর যে পরিমাণ চাপ প্রয়োজন ছিলো সেদিকে আপনারা ফোকাস করেননি।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে সংস্কার নিয়ে জাতীয় সংলাপে তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা আমলের গুম-খুন ও জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচারের চ্যালেঞ্জ নিয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে এই সংলাপ।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আপনারা যত বেশি চাপে রাখবেন, আমরা তত বেশি এই বিষয়টাকে (বিচার) সামনের দিকে এগিয়ে নিতে দৃঢ় চেষ্ট থাকবো। আপনারা যত বেশি অতন্দ্র প্রহরীর মত দায়িত্ব পালন করবেন আমরা রাষ্ট্রকে এবং জনগণের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ততবেশি এজেন্ডাভিত্তিক সাহসিকতা নিয়ে এগিয়ে যাবো।
ঐক্যের প্রয়োজন, ঐক্য ছাড়া সংস্কার সম্ভব নয় জানিয়ে তিনি বলেন, সংস্কার ছাড়া যৌক্তিক কোন বাংলাদেশ উপহার দেওয়া সম্ভব নয়। ঐক্য ছাড়া, সংস্কার ছাড়া এই বিচার প্রক্রিয়া দ্রুততম সময়ের মধ্যে করাটা কঠিন এবং দুরুহ।
বিচারের চ্যালেঞ্জ বিষয়ে আলোচনা কম হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে রাষ্ট্রের প্রধান এই আইন কর্মকর্তা বলেন, আমাদের প্রত্যাশা ছিলো চ্যালেঞ্জের জায়গাটা কি সেটা আমাদের বলবেন। আমরা যেনো যৌক্তিক সমাধানের জায়গায় যেতে পারি সেটা সুনির্দিষ্টভাবে আমরা পাইনি।
তিনি বলেন, আমার কাছে চ্যালেঞ্জের প্রধান জায়গাটা হলো, জুলাই বিপ্লবের শহীদদের রক্তের বিনিময়ে যে চেতনায় উদ্ভুদ্ধ হয়ে আমরা রাস্তায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছিলাম, সেই লক্ষ, সেই ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা, সেই ঐক্যটাতে যে ফাটল ধরেছে সেই ফাটলটাই প্রধান চ্যালেঞ্জ।
আগামী ১৬ ডিসেম্বরের আগে জুলাই গণহত্যার বিচার শেষ করা হবে জানিয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বিচার সম্পন্ন করে বিজয় উদযাপন করা হবে।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে সংস্কার নিয়ে জাতীয় সংলাপে তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা আমলের গুম-খুন ও জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচারের চ্যালেঞ্জ নিয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে এই সংলাপ।
আসিফ নজরুল বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ড ও হেফাজতের হত্যাকাণ্ডসহ ধারাবাহিকভাবে গুম-খুনের সঙ্গে জড়িতদেরও বিচার করা হবে। এসব বিচার করবে আইন বিভাগ। কোনো গাফিলতি হবে না।
তিনি বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী হাসান মাহমুদ, ওবায়দুল কাদেরের মত বদমাশরা কেন পালিয়ে গেলো স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সেই প্রশ্ন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাবলিক প্রসিকিউটররাও (পিপি) পালিয়ে গেছে। ৫১ জেলা থেকে পিপিরা গায়েবি মামলার তথ্য পাঠিয়েছে।
আলোচনার শুরুতেই কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা। গত ১৬ বছরে দেশে ঘটা সব হত্যা, বিডিআর হত্যাকাণ্ডসহ সব গুমের বিচার দাবি করা হয়। এসময় ইসলামি বিশ্বিবদ্যালয়ের দুই ছাত্র গুমের মধ্য দিয়ে হাসিনা সরকারের গুমের সংস্কৃতি শুরু বলে অভিযোগ করেন ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাধারণ সম্পাদক।