ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলায় ৯টি ও রাজাপুর উপজেলায় ১টি অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে ১৪ লাখ টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদফতর।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) ও সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) এই দু’দিনে অভিযান চালিয়ে এসব জরিমানা করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন পরিবেশ অধিদফতরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট শাখার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়জুন্নেছা আক্তার।
বিজ্ঞাপন
এসময় উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদফতরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক জহিরুল ইসলাম তালুকদার ও ঝালকাঠি জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আনজুমান নেছা।
পরিবেশ অধিদফতর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, কুলকাঠি ইউনিয়নের প্রতাপ ও সরই এলাকায় ‘মেসার্স রিয়াজ ব্রিকসের’ দু’টি ইটভাটার কিলন ও কাঁচা ইট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভৈরবপাশা ইউনিয়নের আমিরাবাদ এলাকার ‘এম বি এল ব্রিকসকে’ ১ লাখ, সারদল এলাকার ‘এস আর বি ব্রিকসকে’ ২ লাখ, ‘এম এম আর ব্রিকসকে’ ২ লাখ, উত্তর গৌরিপাশা এলাকার ‘রিয়াজ ব্রিকসকে’ ১ লাখ, সরমহল এলাকার সরদার ব্রিকসকে ২ লাখ, ফয়রা এলাকায় মেসার্স থ্রি স্টার ব্রিকসকে ৫ লাখ, গোদন্ডা এলাকায় মেসার্স শুকতারা ব্রিকসকে ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং রাজাপুর উপজেলার কানুদাসকাঠি এলাকার মেসার্স সেভেন স্টার ব্রিকসটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
পরিবেশ অধিদফতরের বরিশাল বিভাগের উপ-পরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, তার বিভাগের অধীন বিভিন্ন জেলায় যেসব অবৈধ ইটভাটা রয়েছে, তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অব্যাহত থাকবে।
নদীর বুকে চর, সেই চরই এখন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। গড়ে উঠেছে ডিসি ইকোপার্ক। পার্কের মধ্যেই চোখজুড়ানো লেক। তৈরি করা হয়েছে বিশ্রামাগার। শিশুদের চিত্ত বিনোদনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ঝালকাঠির কাঠালিয়ার বিষখালী নদীর তীরে জেগে ওঠা এই চরটি ‘ছৈলার চর’ নামে পরিচিত। পর্যটকদের মনে এটি একখণ্ড বাগান।
নয়নাভিরাম এই চরটিকে ঘিরে দেখা দিয়েছে পর্যাটনের বিপুল সম্ভাবনা। পর্যটকরাও আসছেন নিয়মিত। ছইলার চরকে পর্যটন করপোরেশেনের আওতায় নিয়ে স্থানটির উন্নয়ন করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বঙ্গোপসাগর থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার দূরে ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার হেতালবুনিয়া গ্রামে বিষখালী নদীতে এক যুগ আগে ৪১ একর জমি নিয়ে জেগে ওঠে বিশাল চর। যা এখন ৬১টি একরে পরিণত হয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো ছইলা গাছ থেকে চরটি পরিচিতি পেয়েছে ‘ছৈলার চর’ নামে। ছৈলা ছাড়াও এখানে কেয়া, হোগল, রানা, এলি, মাদার, আরগুজিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। ছৈলা একটি লবণ সহিষ্ণু বন্য প্রজাতির বৃক্ষ।
উপকূলীয় নদী তীরবর্তী চরে প্রকৃতিগতভাবে জন্মে ছৈলার গাছ। ছৈলা গাছের শেকড় মাটির অনেক গভীর অবধি যায় তাই সহসা ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ভেঙে কিংবা উপড়ে পড়ে না। ফলে উপকূলীয় এলাকায় প্রকৃতিবান্ধব গাছ হিসেবে ছৈলা বনবিভাগের সংরক্ষিত বৃক্ষ। এই গাছের টক জাতীয় ফল কাঁচা, পাকা ও রান্না করা অবস্থায় খাওয়া যায়।
ছৈলা গাছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বিশেষ করে শালিক, ডাহুক আর বকের বসবাস। এখানে কোনো হিংস্র প্রাণী না থাকায় এবং সহজ ও অপেক্ষাকৃত নিরাপদ যোগাযোগ ব্যাবস্থার কারণে সারা বছর ধরেই ভ্রমণ পিপাসুদের ভিড় থাকে। পর্যটকদের কাছে চরটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে রোপণ করা হচ্ছে নানা প্রজাতির গাছ। একইসঙ্গে তৈরি করা হয়েছে বিশ্রামাগার, শিশুদের চিত্ত বিনোদনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ২০১৫ সালে ছৈলার চর স্থানটি পর্যটন স্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
চরের একদিকে ২০ একর জায়গাজুড়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ডিসি ইকোপার্ক। এ পার্কের মধ্যে রয়েছে একটি নয়নাভিরাম লেক। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ভ্রমণ পিপাসুদের নদীর দৃশ্য উপভোগ করার জন্য করেছে বিভিন্ন ব্যবস্থা। ইতোমধ্যে ছৈলার চরে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দুইটি রেস্ট হাউজ।
প্রত্যেক শীত মৌসুম শুরু হলেই বিভিন্ন এলাকা থেকে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী পিকনিক করতে আসেন ছৈলার চরে। এছাড়া, পরিবার-পরিজন নিয়েও প্রতিবছর চরটিতে পিকনিক করতে আসেন অসংখ্য মানুষ। এ চরকে কেন্দ্র করে কয়েক’শ বেকার মানুষের কর্মসংস্থানও তৈরি হচ্ছে। তবে, এই চরকে কেন্দ্র করে সম্পূর্ণ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে প্রয়োজন পর্যটন করপোরেশনের সহযোগিতা।
কিভাবে যাবেন: ঝালকাঠি জেলা শহর থেকে কাঠালিয়া উপজেলায় যেতে পারি দিতে হবে ৩৫ কিলোমিটার পথ। সেখান থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার পরেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা ছৈলার চর। যেকোন যানবাহনে ছৈলার চর যাওয়া যাবে। সড়ক ও নৌ পথে প্রতিদিনই শত শত মানুষ যাচ্ছে ছৈলার চরের নৈসর্গ দেখতে।
চরে বেড়াতে আসা পর্যটক নুরনবী তালুকদার বলেন, ছৈলার চরে প্রায়ই ঘুরতে আসি। এখানে রয়েছে মৌমাছির মৌচাক ও ছৈলার বাগান। নদীর মনোরম পরিবেশ দেখে মনটা ভরে যায়। রয়েছে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা ছৈলার বাগান। এখন আর সুন্দরবন যেতে হবে না। আমাদের একখণ্ড সুন্দরবন হচ্ছে ছৈলার চর।
বনের মধ্যে ঘুরছিলেন শিক্ষক মো. রবিউল ইসলাম, তার সঙ্গে ছিলেন আরও কয়েকজন। রবিউল বলেন, কাঠালিয়া উপজেলার মধ্যে এতো সুন্দর একটি স্থান রয়েছে, এটা আগে জানতাম না। এখানে এসে ভালোই লাগলো। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা ছৈলার চরের চারপাশে নদী ও খাল রয়েছে। নদীও দেখা যায় বনের সৌন্দর্যও উপভোগ করা যায় একসঙ্গে। এখানে বন থাকলেও হিংস্র কোনো প্রাণী নেই। নান্দনিক এই স্থানটিতে বেশি করে পর্যটকদের আসার আহ্বান জানাচ্ছি।
ঝালকাঠির পাশ্ববর্তী বরগুনা জেলার বাসিন্দা প্রবাসী মিজানুর রহমান বলেন, আমি বিদেশে বসে ছৈলার চরের বিষয়ে জানতে পেরেছি। তখন থেকেই এখানে ঘুরতে আসার ইচ্ছা ছিল। দেশে এসে পরিবার নিয়ে এখানে বেড়াতে এসেছি। অনেক ভালো লাগলো। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় কাটিয়ে গেলাম।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ কাঠালিয়া সদর ফাজিল মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষক মো. নুর-ই- আলম ছিদ্দিকী বলেন, এখানে দেশি ও বিদেশি পর্যটক ঘুরতে আসে, নদীর বুকে জেগে ওঠা চরকে এতো সুন্দর করে সাজানোর জন্য প্রশাসনকে ধন্যবাদ। নতুন নতুন প্রকল্প নিয়ে কাজ করলে এখানে অনেক পর্যটক আসবে বলে আমার ধারণা।
ছৈলার চর এলাকার বাসিন্দা মো. মনির খান বলেন, একসময় অবহেলিত একটি জায়গা ছিল এটি। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ডিসি লেক, একাধিক গোলঘরসহ অনেক স্থাপনা ইতোমধ্যে নির্মিত হয়েছে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে আমরা সুন্দর একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ছৈলার চরকে দেখতে পাবো। আমরা এলাকাবাসী পর্যটকদের সেবায় সব সময় নিয়োজিত আছি।
ছৈলার চরের স্থানীয় দোকানদার মো. হেমায়েত আকন বলেন, এখানে আগে তেমন কিছু ছিল না, এখন বসার জন্য বেঞ্চ, দোলনা, টয়লেট, খাবার বিশুদ্ধ পানি রয়েছে। আমি এখানে সব সময় থাকি। এখানের যাবতীয় কাজ করি ও ফুলের গাছে নিয়মিত পানি দেই। ইউএনও স্যার ছৈলার চরে ‘আশার আলো যুব সমাজ কল্যাণ সমবায় সমিতি’ করে দিয়েছেন। যেখানে স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া ছাত্ররা এই সংগঠনের সদস্য। তারাও চরটিকে সংরক্ষণের চেষ্টা করেন। সাধারণ মানুষ বা কোনো পর্যটক আসলে তাদের গাইড হিসেবে কাজ করে এবং তাদের সহযোগিতা করে। প্রতিদিন এখানে ৩০০-৪০০ মানুষ ঘুরতে আসেন।
কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ছৈলার চরকে আকর্ষণীয় করতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় লোকজন ছাড়াও আশেপাশের অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন ছৈলার চরে বেড়াতে আসেন। তাদের নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। এই ছৈলার চর এক সময় দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে বলে আমি মনে করি।
জুলাই বিপ্লবের ঘোষণা প্রদানের লক্ষ্যে গণমানুষের কাছে ছুটে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানিয়েছেন তিনি।
এসময় হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে জুলাই প্রক্লেমেশন ঘোষণার দাবি জানিয়েছি। এই অভ্যুত্থানে যেমন দেশের প্রত্যেক মানুষের অংশগ্রহণ ছিল। আমরা মনে করি এই ঘোষণাপত্রে জনমানুষের আকাঙক্ষার প্রতিফল ঘটবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা মানুষের কাছে ছুটে যেতে চাই। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, সব পেশাজীবী মানুষের মাঝে জনসংযোগ চালাবো। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি যৌথভাবে এই কাজটি করবে।
সাতক্ষীরার দেবহাটায় অভিযান চালিয়ে তিনটি বিদেশী পিস্তল, ছয়টি ম্যাগজিন ও ছয় রাউন্ড গুলিসহ মোঃ আসাদুল গাজী (৩২) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকালে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, বৃহস্পতিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দেবহাটা উপজেলার কুলপুকুর মোড়ে অভিযান চালিয়ে একই উপজেলার কালাবাড়িয়া গ্রামের জাফর গাজীর ছেলে আসাদুল গাজীকে তিনটি বিদেশী পিস্তল, ছয়টি ম্যাগজিন ও ছয় রাউন্ড গুলিসহ হাতে নাতে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার মোঃ আসাদুল গাজীর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
জুলাই প্রক্লেমেশন বা জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের বিষয়ে মানুষের প্রত্যাশা জানতে আগামী ৬ জানুয়ারি থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারাদেশে লিফলেট বিতরণ, সমাবেশ, জনসংযোগ করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) রাজধানীর বাংলামোটরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
হাসনাত বলেন, আমরা ১৫ জানুয়ারির মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে জুলাই প্রক্লেমেশন ঘোষণার দাবি জানিয়েছি। এই অভ্যুত্থানে যেমন দেশের প্রত্যেক মানুষের অংশগ্রহণ ছিল, আমরা মনে করি এই ঘোষণাপত্রে জনমানুষের আকাঙক্ষার প্রতিফল ঘটবে।
তিনি বলেন, আমরা মানুষের কাছে ছুটে যেতে চাই। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, সব পেশাজীবী মানুষের মাঝে জনসংযোগ চালাবো। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি যৌথভাবে এই কাজটি করবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র নিয়ে সরকারের কার্যক্রম এখনো দৃশ্যমান নয়। এ বিষয়ে দ্রুত কোনো পদক্ষেপ না নিলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা করা হবে। আমাদের আহ্বান থাকবে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সরকার শিগগির কাজ শুরু করবে। আমরা চাই, সরকারকে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।