লালমনিরহাটে কমলা চাষে শিক্ষক দম্পতির সাফল্য
সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে থোকায় থোকায় ঝুলছে হলুদ রঙের কমলা। প্রতিটি গাছে প্রচুর পরিমাণ কমলায় ডাল গুলো নুয়ে পড়েছে মাটিতে। এক অন্যরকম দৃশ্য! নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় চায়না জাতের কমলার বাগান করেছেন এক শিক্ষক দম্পতি। এই দৃশ্য দেখতে তার বাড়িতে ভিড় করছেন মানুষ। কয়েক বছর থেকে কমলা চাষ করে বেশ পরিচিতি লাভ করেছেন এই শিক্ষক।
শিক্ষক দম্পতি খলিলুর রহমান ও ফাতেমা খাতুন মজুমদারের বাড়ি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পশ্চিম সারডুবী গ্রামে। খলিলুর রহমান পেশায় মোজাম্মেল হোসেন আহম্মেদ উচ্চ বিদ্যালয়ের উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও তার স্ত্রী ফাতেমা খাতুন মজুমদার পশ্চিম সারডুবি পূর্ব পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী সহকারী শিক্ষক। বাগানে চায়না জাতের কমলার পাশাপাশি নাগপুরি, দার্জিলিং চায়না থ্রি জাতের কমলার গাছও রয়েছে। শিক্ষকতার পাশাপাশি কমলা চাষে তার সাফল্য ঐ এলাকার মানুষদের অণুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। ফলে, তার কমলা বাগান দেখে অনেকেই কমলা চাষের আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
শনিবার(৪ জানুয়ারি) তার এই বাগান ঘুরে দেখেন প্রতিবেদক। বাগানের মালিক জানান, ২০১১ সালে এক বিঘা জমিতে দার্জিলিং জাতের কমলা চারার বাগান দিয়ে যাত্রা শুরু। ৪ বছর পর ১৫২টি গাছে ফল আসে। এর পর ২০২০ সালে প্রায় একর জমিতে চায়না জাতের ৪০০ কমলা গাছের বাগান তৈরি করেন। তিন বছর পর ২০২৪ সালের শেষের দিকে প্রতিটি গাছে আশানুরূপ ফল এসেছে। বর্তমানে কমলার রং হলুদ আকার ধারণ করেছে। এ পর্যন্ত বাজারে প্রায় লক্ষাধিক টাকার কমলা বিক্রি করেছেন তিনি। কমলা চাষে জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছেন তারা।
খলিলুর রহমান বলেন,কমলা বাগান করার তিন বছর পর প্রচুর পরিমাণে কমলা ধরেছে। নিজ পেশার পাশাপাশি কমলা বাগান করলে ফলের চাহিদা পূরণ হবে। পাশাপাশি আর্থিকভাবেও লাভবান হওয়া যাবে। আপনারা বাগান দেখতে আসুন, ফল খান, আপনারও বাগান করুন।
ফাতেমা খাতুন মজুমদার বলেন, শখের বসে শিক্ষকতার পাশাপাশি কমলা চাষ করছি। ২০১১ সালে কমলা বাগান করার পর থেকে কৃষি বিভাগের সহযোগিতা পেয়েছি। তাদের সহযোগিতায় কমলা বাগানে সফলতা আসে। জাতীয় কৃষি পুরস্কার পাওয়ার পর কমলা চাষে আরো আগ্রহ বেড়ে যায়।
প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন বলেন, এই এলাকায় এত ভালো কমলা হবে আগে জানা ছিলোনা। আমাদের এলাকার কমলা বাগান আমাদেরকে গর্বিত করেছে। এতো সুন্দর একটি কমলা বাগান। এটি দেখে এলাকার অনেকেই বাগান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার কৃষি অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, কমলা বাগানটি আমরা পরিদর্শন করেছি। বাগানে প্রচুর পরিমাণে কমলার ফলন হয়েছে। আমাদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ ও সহযোগিতা করে আসছি।