চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) জেএমএস ও ম্যারিমো নামে দুটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অর্ধশতাধিক শ্রমিক আহত হয়েছেন।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পর কারখানা দুটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
বিজ্ঞাপন
আহত শ্রমিকদের বরাতে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করছিলেন জেএমএস ও ম্যারিমো কারখানার শ্রমিকরা। এর মধ্যে জেএমএস কর্তৃপক্ষ তাদের শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয় এবং তারা শনিবার থেকে কাজে যোগ দেন।
তবে ম্যারিমো কারখানার শ্রমিকরা তখনও আন্দোলনে ছিলেন। শনিবার সকালেই তারা জেএমএস কারখানায় ঢুকে ভাঙচুর ও এলোপাতাড়ি হামলা চালান। এতে অর্ধশতাধিক শ্রমিক আহত হন।
বিজ্ঞাপন
আহতদের মধ্যে বেশিরভাগই জেএমএস কারখানার শ্রমিক। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংঘর্ষের পরপরই সেনাবাহিনী, পুলিশ ও শিল্প পুলিশের একাধিক দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা।
শিল্পপুলিশ চট্টগ্রাম বন্দর জোনের পরিদর্শক গোলাম নবী বলেন, শ্রমিক অসন্তোষের জেরে দুই কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি সামাল দিতে জেএমএস ও ম্যারিমো কারখানার কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে।
বান্দরবানের আলিকদম উপজেলা সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকালে ৫৮ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ সময় দালাল চক্রের পাঁচ সদস্যকেও আটক করা হয়।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) উপজেলার নয়াপাড়া ইউনিয়নের বুচি তং এলাকায় অনুপ্রবেশের সময় ১২ পুরুষ, ১০ নারী, ৩৭ শিশুসহ মিয়ানমারের ৫৮ রোহিঙ্গা নাগরিক ও অনুপ্রবেশে সহায়তাকারী পাঁচ বাংলাদেশিকে আটক করে বিজিবি।
আটক বাংলাদেশিরা হলেন, উপজেলার দক্ষিণ নয়াপাড়া এলাকার মো. আরিফুল ইসলাম (২৫), জালাল উদ্দীন (২৭), বাজারপাড়া এলাকার মো. নজুরুল ইসলাম (৪০), চৈক্ষ্যং ইউপির আলী মেম্বারপাড়ার মো. আবু হুজাইফা (৩২) ও খুইল্যা চেয়ারম্যানপাড়া এলাকার মো. খোরশেদ আলম (৫৭)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বাংলাদেশি কয়েকজনের সহায়তায় মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বেশ কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার ৩ নম্বর নয়াপাড়া ইউনিয়নের বুচি তং এলাকায় অভিযান চালান বিজিবির সদস্যরা।
পরে বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের সময় ৫৮ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। এ সময় পাঁচ দালালকেও আটক করা হয়। একই সঙ্গে তাদের ব্যবহৃত একটি ডাম্প ট্রাক, একটি প্রাইভেট কার ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা জহির উদ্দিন জানান, আটক মিয়ানমার নাগরিকদের পুশবেক করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাঁচ দিন পর দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে চারজনের মৃত্যু হলো।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ডেঙ্গুতে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ব্যক্তি ময়মনসিংহ বিভাগের হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এর আগে গত ৬ জানুয়ারি দুই জনের প্রাণ যায়।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৫ জন। এ নিয়ে নতুন বছরে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা দাঁড়াল ৫৭৩ জনে।
ভর্তি রোগীদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ২৬ জন, ঢাকা বিভাগে সাতজন, ময়মনসিংহ বিভাগে একজন, চট্টগ্রাম বিভাগে চারজন, খুলনা বিভাগে একজন, রাজশাহী বিভাগে পাঁচজন এবং বরিশাল বিভাগের হাসপাতালে একজন ভর্তি হয়েছেন।
ডেঙ্গু নিয়ে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৩২০ জন। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ১৭২ জন, ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে রয়েছেন ১৪৮ জন।
শখের বসে ছোটবেলায় পাখি পালন শুরু করেন। ২০০৭ সালে তার বাবা বিদেশি পাখি কিনে দেন তাকে। বাসার ভেতর লালন পালন শুরু করেন। ধীরে ধীরে সেই পরিসর বড় হতে থাকে। ২০১৮ সালে অনেকটা বড় পরিসরে চলে যায় তার শখের এই পাখি পালন। ৫ হাজার থেকে শুরু করে ৬০ হাজার টাকা দামের পাখি রয়েছে তার খামারে।
পাখি পালনে স্বপ্ন বুনছেন তরুণ উদ্যোক্তা টাঙ্গাইল শহরের কান্দিলা এলাকার অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ুয়া ছাত্র সোহান খান। সোহান খান ওই এলাকার মৃত মাহবুবুর রহমান খানের ছেলে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লাভবার্ড, ককাটেল, কুনুর, লরিকেট, মং পেরাকিট ও ভার্জিনাসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৬০ জোড়া বিদেশি পাখি রয়েছে তার খামারে। পাখি দেখতে অনেকেই ছুটে আসছেন তাঁর পাখির খামারে। ২০২৫ সালেই পুরোপুরি বাণিজ্যিকভাবে বাজারে ছাড়বেন এসব পাখি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে তিনি ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছেন এসব পাখি নিয়ে।
জানা যায়, টাঙ্গাইলে ব্যাপক সম্ভাবনার ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে পাখি পালনে। জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বিদেশি পাখি পালন। এ পেশায় এগিয়ে আসছেন তরুণ উদ্যোক্তারা। কেউ কেউ ব্যাপক পরিসরে পাখি পালন করতে যাচ্ছেন। দেশেই উৎপাদন করা হচ্ছে লাখ লাখ টাকা দামের পাখি।
পাখির খামার দেখতে আসা হাবিবুল্লাহ শেফুল বলেন, কলেজ পড়ুয়া ছাত্র সোহানের পাখির খামার দেখে ভালো লেগেছে। আমি খুব উদ্ভুদ্ধ হয়েছি। আশা করছি যে যত বেকার সমাজ আছে তারা সোহানের মতো পাখি পালন করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে। আমিও ভবিষ্যৎতে পাখির খামার করবো।
পাখির খামার দেখতে আসা নাহিন বলেন, সোহান ভাইয়ের বাড়ির পাশাপাশি আমার বাড়ি।আমি মাঝে মাঝে খামার দেখতে আসি। আমারও ইচ্ছে আছে সোহান ভাইয়ের পরামর্শ নিয়ে পাখি পালন করার।
পাখি খামার দেখতে আসা আরিফ বলেন, আমি বিভিন্ন জায়গায় দেখতে যেতাম পাখি দেখতে। পাখি দেখতে দেখতে পাখির প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়ে গেছে। আমি নিজেও পাখি পালন করি।
তরুণ উদ্যোক্তা সোহান খান বলেন, আমি ছোটবেলা থেকে পাখি পালন করতেছি। ২০১৮ সালে অনেকটা বড় পরিসরে পাখি পালন শুরু করি।যখন আমার এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হয়। তখন আমি ভাবতে ছিলাম কিছু একটা করা দরকার। পাখি পালনে আমার ছোটবেলার অভিজ্ঞতা ছিল। তাই পাখি পালনকে বেছে নেই। তখন থেকেই পাখি পালন শুরু করি।
তিনি বলেন,বাংলাদেশে পাখির খুব চাহিদা আছে। পাখি পালন যদি কেউ বাণিজ্যিক ভাবে করতে পারে খুবই ভালো। আমি এখন বাণিজ্যিক ভাবে শুরু করতেছি। আমার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভালো অবস্থান রয়েছে। আমার কাছে মানুষ প্রচুর পাখি চায়। আমি মানুষের চাহিদা পূরণ করতে পারি না। বাংলাদেশে প্রচুর পাখি আমদানি হয়। দেশে থেকে যদি পাখির চাহিদা পূরণ করা যায় তাহলে খুবই ভালো। আমাদের দেশে নতুন অনেক পাখির খামার হচ্ছে।
সোহান আরও বলেন, আমি আমার খামারে পাখি বাড়াচ্ছি। আমার খামারে অনেক পাখির জন্ম নিয়েছে। আমার খামারে পাঁচ হাজার টাকা থেকে ষাট হাজার টাকা দামের পাখি রয়েছে। আমার পরিকল্পনা পাখি আরও বাড়ানো। কেউ বেকার বসে আছে। কেউ কাজ পাচ্ছে না। তারা কিন্তু পাখি পালন শুরু করতে পারে। অবশ্যই জেনে পাখি পালন শুরু করতে পারে। কেউ না বুঝে শুরু করলে সমস্যা হবে। ভালো ভাবে জেনে শুরু করলে সফল হবে। তার আর মনে হয় না চাকুরী করার দরকার আছে।
টাঙ্গাইল প্রকৃতি ও জীবন ক্লাবের উপদেষ্টা হারুন অর রশিদ বলেন, পাখির খামার করে বাংলাদেশে তরুণরা সফলতা অর্জন করছে। লাভবার্ড বা বিদেশী যে পাখি এই পাখি গুলো যখন বাংলাদেশে আমদানি করে থাকি। তখন দেখা যায় যে ডলার সংকট। যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সেখানে আঘাত লাগে। সেখানে যদি আমরা বাংলাদেশে বেকার যুবক যারা রয়েছে। যারা তরুণ উদ্যোক্তা রয়েছে তাদেরকে যদি আমরা অনুপ্রাণিত করতে পারি। তাহলে তারা পাখির খামার করে সফলতা অর্জন করতে পারবে। বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।
গণঅধিকার পরিষদের দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামান বলেছেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটি অলিখিত অঙ্গরাজ্য হিসেবে তৈরি করেছিল। ভারতীয় বিএসএফ দ্বারা সীমান্তে বাংলাদেশ নাগরিকদের নির্বিকার গুলি করত এবং হাসিনার আমলে সীমান্ত প্রতিনিয়ত কাঁটা তারে লাশ ঝুলন্ত। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা তখন কিন্তু কোনো প্রতিবাদ করতে পারেনি। ভাতীয় দ্বারা সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে আমরা বিভিন্ন সময়ে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবসহ রাজপথগুলো অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড চত্বরে আয়োজিত উপজেলা ছাত্রঅধিকার পরিষদের পরিচিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শাকিল উজ্জামান বলেন, দলীয় লেজুরভিত্তি ছাত্র রাজনীতি থেকে বের হতে হলে বর্তমানে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই এবং ছাত্র সংসদ নির্বাচনটা এই অন্তবর্তীকালীন সরকার আমলেই হতে হবে ও তাদের মাধ্যমেই দিতে হবে। আপনারা দেখেছেন যারাই ক্ষমতায় আসে, তারা ছাত্র সংসদ নির্বাচনের কথা শুধু মুখেই বলে কিন্তু তারপর আর নির্বাচন দেয় না। তাই আমরা বলতে চাই অবিলম্বে সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনটা দ্রুত দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, যেকোন দলীয় লেজুরভিত্তি ছাত্র রাজনীতির কারণে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে রাজনৈতিকগুণগত মান থাকে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যে অধিকার তারা সেই কাজগুলো না করে তারা দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে হয়ে কাজ করে। শুধু জেলা বিশ্ববিদ্যালয়ই না, উপজেলার বিভিন্ন স্কুলেও ছাত্র রাজনীতর নামে দলীয় ক্যাডার বাহিনী তৈরি করে। তারা ক্ষমতায় থাকার জন্য তাদের ব্যবহার করে।
উপজেলা ছাত্রঅধিকার পরিষদের সভাপতি আলামিন ইসলামের সভাপতিত্বে ও রাজনৈতিক পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল হামিদের সঞ্চালনায় জেলা গণঅধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি রুবেল খান, যুগ্ম সাধারণ সস্পাদক জাহিদুল ইসলাম তরুণ, জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি ফাহাদুল ইসলাম ফাহাদ, সহ-সভাপতি সজীব হোসেন, সাধারণ সম্পাদক নবাব আলী, গোবিন্দাসী ইউনিয়ন গণঅধিকার পরিষদের আহবায়ক আব্দুল খালেক মন্ডলসহ জেলা-উপজেলার গণঅধিকার পরিষদ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।