‘শেখ হাসিনা সরকার নিজের স্বার্থে বিডিআর সদস্যদের কোরবানি দিয়েছে’
দেশের প্রখ্যাত আলোকচিত্রী ও সাংবাদিক শহিদুল আলম বলেছেন, শেখ হাসিনা সরকার নিজ ও দলের স্বার্থে বিডিআরের নির্দোষ সদস্যদের কোরবানি দিয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে কারা নির্যাতিত পরিবারের সদস্যদের আয়োজনে পিলখানা হত্যাকাণ্ড মামলায় পুন:তদন্ত কমিশনের প্রজ্ঞাপনে (ঙ) নম্বর ধারা বাতিল ও সুষ্ঠু বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত এবং চাকরিচ্যুতদের পুনঃবহালের দাবিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
পিলখানা হত্যা মামলায় গঠিত কমিশনের প্রজ্ঞাপনের (ঙ) নম্বরে বলা হয়েছে, হত্যাকাণ্ডসহ সংঘটিত অপরাপর অপরাধে ইতোমধ্যে দায়েরকৃত মামলা এবং সংশ্লিষ্ট মামলায় অভিযুক্তগণের দায়/অপরাধ অক্ষুন্ন রেখে যাদের সংশ্লিষ্ট মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি এমন প্রকৃত অপরাধীদেরকে তদন্ত প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্তকরণ। ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি এই ধারার মাধ্যমে যারা দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে রয়েছে তাদের প্রতি অন্যায় করা হবে। কারণ কারাগারে থাকা বিডিআর সদস্যরা নিরাপরাধ ও নির্দোষ হওয়ার পরেও তারা কারা নির্যাতিত হচ্ছেন। এই ধারা থাকলে কমিশন কখনোই সঠিক ও সুষ্ঠু তদন্ত করতে পারবে না।
শহিদুল আলম বলেন, আমি কারাগারে থাকা অবস্থায় নিয়মিত বিডিআর সদস্যদের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। বিষয়টি আমার পরিবার ও বন্ধুরা জানতে পারার পরে আমাকে তারা নিষেধ করেছেন। বিডিআর সদস্যদের সাক্ষাতের অনেক নোট আমার কাছে আছে। সেই সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতেই আমি কথা বলছি। যেই নিপীড়ক সরকারকে আমরা কষ্ট করে হটিয়েছি। এই নিপীড়ক সরকার তার ব্যক্তি ও দলের স্বার্থে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের ক্ষতি করে পার্শ্ববর্তী দেশকে সুযোগ দেওয়ার জন্য, প্রতিদ্বন্দ্বীদের দুর্বল ও আমাদের দেশে বলিষ্ঠ সেনাবাহিনী-বিডিআরকে দুর্বল করতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
তিনি বলেন, কারাগারে আমার অনেকের সঙ্গে কথা হয়েছে। অনেকের নাম আমি বলতে পারবো। ছোট করে যদি বলি হবিগঞ্জের বিডিআর সদস্য রিয়াজ হোসেন চৌধুরী। তিনি মামলার ৩১২ নম্বর আসামি। তিনি মেজর শফিকুল ইসলামের বডিগার্ড ছিলেন। বিদ্রোহের সময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শফিকুল ইসলামের স্ত্রীকে পালাতে সহযোগিতা করেন। যাতে তিনি নিরাপদে বের হতে পারেন। শুধু রিয়াজ না তাদের মতো শত শত বিডিআর সদস্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। এই সব নিরীহ মানুষগুলো দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে বন্দী রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি আরও কিছু বিষয় বলতে চাই। কারা এসেছিলো, কারা এই হত্যায় জড়িত সবই আমাদের জানা রয়েছে। আমি নিজে ভুক্তভোগী কি ভাবে নিপীড়ন করা হয়েছে। কি ভাবে মিথ্যা কথা বলা ও আদালতে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয়েছে। বিচারক নিজেই বলেছেন মামলায় যে কথা বলা হয়েছে একটারও কোনো প্রমাণ নেই। বিডিআরের ক্ষেত্রে যা যা বলা হয়েছে তার একটারও কোনো প্রমাণ নেই।