ক্যাটাগরি পদ্ধতি বাতিলসহ জুলাই আন্দোলনে আহতদের পুনর্বাসন, দ্রুত সময়ের মধ্যে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে রাজধানীর শিশুমেলা সড়কে অবস্থান নিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতরা। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে উভয় পাশের সড়কে যান চলাচল।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার পর শিশুমেলা সড়কের অবস্থান নিয়ে দাবি আদায়ে আন্দোলন শুরু করেন জুলাই আন্দোলনে আহত পঙ্গু হাসপাতাল ও চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা। শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম আজম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, শ্যামলী পঙ্গু হাসপাতালের সামনে পুরো রাস্তা ব্লক করে আন্দোলন করছে চিকিৎসারত জুলাই আন্দোলনে আহতরা। এখন পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে।
আন্দোলনকারীদের দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে জুলাই আন্দোলনে আহতদের পুনর্বাসন করা ও আহতদের সেবা দিতে যে চারটি ক্যাটাগরি করা হয়েছে সেই ক্যাটাগরি বাদ দেওয়া সহ বিভিন্ন দাবি জানান আন্দোলনকারীরা। তাদের ভাষ্য, এই ক্যাটাগরির মাধ্যমে আহতদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। এছাড়াও অসুস্থদের দ্রুত সময়ের মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠানোর দাবি জানানো হয়।
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় কাভার্ড ভ্যান ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে নিজাম উদ্দিন (৪৫) নামের এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। এ সময় অটোরিকশায় থাকা আরও তিনজন আহত হয়েছে। আহতরা নিহত ব্যবসায়ীর স্ত্রী ও দুই সন্তান।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সোনাগাজীর পুরাতন রাস্তার মাথা লক্ষ্মীপুর নামক সড়কে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নিজাম উদ্দিন সোনাগাজী উপজেলার মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ মঙ্গলকান্দি গ্রামের মৃত নুরুল হক সর্দারের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে ফেনী সোনাগাজী সড়কের পুরাতন রাস্তার মাথা লক্ষ্মীপুর সড়কে সিএনজি অটোরিকশাটি পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি কাভার্ড ভ্যান সেটিকে চাপা দেয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে সিএনজিতে থাকা ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন নিহত হয়। অটোরিকশায় থাকা তার স্ত্রী ও দুই সন্তানও গুরুতর আহত হন। আহতদের তাৎক্ষণিক উদ্ধার করে ফেনী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য নেয়া হয়। নিহতের মরদেহ হাসপাতাল মর্গে রাখা আছে।
নিহতের শ্যালক নজরুল ইসলাম রাজু জানান, নিজাম উদ্দিন কাজী এলাকায় মুদি ব্যবসায় করতেন। দুই দিন আগে চট্টগ্রাম থেকে সোনাগাজীতে অসুস্থ শ্বশুরকে দেখতে এসেছিলেন। সকালে পরিবার নিয়ে চট্টগ্রাম যাওয়ার উদ্দেশ্যে সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে লালপুল যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তার এমন মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কেউ এ মৃত্যু মেনে নিতে পারছেনা।
এ বিষয়ে সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বায়েজিদ আকন্দ বলেন, দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা দিতে ফেনী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
কুমিল্লায় প্রস্তুতি চলছে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজার। পূজার উপকরণ ও প্রসাদ বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন বিদ্যাপীঠে সাদা কাপড় প্রস্তুত করা হয়েছে মণ্ডপ গুলোতে। শহরের রাজেশ্বরী কালী মন্দিরে বসেছে প্রতিমা বিক্রির হাট। এছাড়াও কুমিল্লা নগরজুড়ে ৪-৫ টি স্থানে প্রতিমা বিক্রি হচ্ছে। ছোট প্রতিমার মুল্য দুইশত টাকা বড় সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা।
কাল ও পরশু সরস্বতী পুজার আয়োজন হবে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজ রাজেশ্বরী কালী মন্দির, কুমিল্লা সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন মন্দির ও বাড়িতে প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছে। বিভিন্ন মন্দিরের মোড়ে মুড়ি, বাতাসা, জিলাপি, খই, নানা ধরনের ফল বিক্রি হচ্ছে। এসব খাদ্য পূজার প্রসাদ।
কুমিল্লা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী শুক্লা মল্লিক বাবার সঙ্গে প্রতিমা বিক্রির হাটে আসে। পছন্দের প্রতিমা পাওয়ায় হাসিখুশি তে ভরপুর সে।বাবার সাথে হেলাতলা মোড়ে এসে নানা ধরনের প্রসাদ কিনেছে। কাল সকালে দুর্গা দেবীর সামনে শ্রদ্ধা নিবেদন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
শিক্ষার্থী শুক্লা মল্লিক বলেন, গত জুলাই বিপ্লবের মধ্যদিয়ে আমরা বৈষম্যহীন ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার এক মহান প্রত্যয় গ্রহণ করেছি। এবারের সরস্বতী পূজা তাই এক ভিন্ন আঙ্গিকে আয়োজিত হতে চলেছে। দুদিনব্যাপী এ আয়োজনের মধ্যে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, প্রসাদ বিতরণ, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা, রক্তদান কর্মসূচি ইত্যাদি রয়েছে। এছাড়াও অভ্যন্তরে চিত্তবিনোদন উপযোগী বেশ কিছু রাইড, খেলনা ও বিশুদ্ধ খাবার দোকানের থাকবে। আমরা সব সময় পূজাতে আনন্দ করি। পূজা আসলে আমার কাছে ভালো লাগে।
নিরাপত্তার বিষয়ে কুমিল্লা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরাফাতুল ইসলাম বলেন, পূজার আনন্দ যেন কোন অপশক্তি ম্লান করতে না পারে, সে জন্য পুলিশ সদস্যরা মাঠে সর্বোচ্চ নজরদারি চালাচ্ছেন। কোন মহল ষড়যন্ত্র করলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রায় সাড়ে ১০ ঘণ্টা পর স্বাভাবিক হয়েছে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের ফেরি চলাচল। এর আগে ঘন কুয়াশায় নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টা থেকে কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে গেলে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখে ঘাট কর্তৃপক্ষ।
তবে কুয়াশার ঘনত্ব কমে আসলে রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ফেরি চলাচল শুরু করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাট প্রান্তে পারাপারের অপেক্ষায় থাকা বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের সংখ্যা বাড়তে থাকে। তীব্র শীতে অপেক্ষায় থাকা এসব যানবাহনের শ্রমিক-যাত্রীসহ ঘাটসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নানা দুর্ভোগে পড়েছেন।
ঘাটসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই কুয়াশা বাড়তে থাকে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে গেলে ফেরির বিকন বাতির আলো অস্পষ্ট দেখা দিলে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। ফেরি বন্ধ থাকায় ঘাটে আটকে পড়া বাসের যাত্রীরা কনকনে শীতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন জানান, শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে চ্যানেলের মার্কিং বাতির আলো অস্পষ্ট হয়ে পড়ে। দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছিল।
তবে রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কুয়াশা কমে এলে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়।। ঘাটে অপেক্ষমান যানবাহনগুলো দ্রুত পারাপারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।