ষষ্ঠ দিনে মাদরাসা শিক্ষকদের অবস্থান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন মাদরাসা শিক্ষকরা / ছবি: বার্তা২৪

অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন মাদরাসা শিক্ষকরা / ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত সকল স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণের দাবিতে ষষ্ঠ দিনের মতো অবস্থান ধর্মঘট পালন করছেন শিক্ষকরা। একই সঙ্গে সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছেন তারা।

শনিবার (৬ এপ্রিল) সকাল থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটি এ ধর্মঘটের আয়োজন করেছে। ১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচিতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা কয়েক শত শিক্ষক-কর্মচারী অংশ নেন।

দুপুরে লিখিত বক্তব্যে সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাওলানা হাফেজ ফয়েজুর রহমান জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ১৬ দিন তারা অবস্থান ও অনশন কর্মসূচি পালন করেন। তখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শিক্ষাসচিব শিক্ষকদের দাবি পূরণে আশ্বস্ত করেন। যা এখনো বাস্তবায়ন করা হয়নি।

তিনি বলেন, ‘১৯৯৪ সালে এক পরিপত্রে রেজিস্ট্রার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষকদের বেতন ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। তবে ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি বর্তমান মহাজোট সরকার ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক স্কুল জাতীয়করণ করে।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/06/1554546496151.jpg

ফয়েজুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মতো ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকরা সব কিছুই করছে, অথচ মাস শেষে স্কুলের শিক্ষকরা ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পায় কিন্তু ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকরা তেমন কোনো বেতন পায় না। তবুও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নেয় শিক্ষকতা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। দেশে মোট ১ হাজার ৫১৯টি মাদরাসা শিক্ষকদের মধ্যে প্রধান শিক্ষক ২ হাজার ৫০০ টাকা, সহকারী শিক্ষক ২ হাজার ৩০০ টাকা ভাতা পান। আর বাকি প্রায় ৮ হাজার ৫০০টি মাদরাসার শিক্ষকরা প্রায় ৩৪ বছর যাবত বেতন-ভাতাই পান না।’

অবস্থান ধর্মঘটে শিক্ষকরা কিছু দাবিও তুলে ধরেছেন, যার অন্যতম দাবিগুলো হলো- প্রাথমিকে বিদ্যালয়ের ন্যায় মাদরাসা বোর্ড কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত সকল স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণ করতে হবে, কোডহীন মাদরাসাগুলোকে মাদরাসা বোর্ড কর্তৃক কোড নাম্বারে অন্তর্ভুক্তকরণ, প্রাথমিকে বিদ্যালয়ের ন্যায় প্রতিটি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসায় অফিস সহায়ক নিয়োগ দেওয়া, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষকদের পিটিআই ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ, মাদরাসাগুলোর আসবাবপত্রসহ ভবন নির্মাণ, পূর্বের ন্যায় এইচএসসি মানবিক শিক্ষকদের নীতিমালা অন্তর্ভুক্তকরণ এবং স্থায়ী রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থা করা।

   

অবৈধ সম্পদ অর্জন

৬ জুন বেনজীরকে দুদকে তলব



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদকে আগামী ৬ জুন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (২৮ মে) বিকেলে দুদক সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে। এছাড়া আগামী ৯ জুন বেনজীর আহমেদের স্ত্রী ও দুই সন্তানকে তলব করা হয়েছে

দুদক সূত্র জানিয়েছে, সাবেক আইজিপি তার আয়কর ফাইলে অনেক সম্পদ দেখালেও এসব সম্পদের বৈধ উৎস দেখবে দুদক। ট্যাক্স ফাইলে উঠালেও সম্পদ উপার্জনের বৈধ খাত খতিয়ে দেখা হবে।

সূত্র জানায়, বেনজীরের স্ত্রী এবং সন্তানদের আয়ের খাত হিসেবে দেখিয়েছেন মাছের ব্যবসা। এটাও খতিয়ে দেখা হবে।

দুদক সূত্র বলছে, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ দেশের বাইরে বেনজীর পরিবারের কোনো সম্পদ আছে কী না তা জানতে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট- বিএফআইইউতে চিঠি দিয়েছে দুদক।

সংস্থাটি বলছে, অনুসন্ধান শুরু করার পর ধেকে প্রতিনিয়তই গোয়েন্দা মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বেনজীর পরিবারের সম্পদের বিস্তর তথ্য পাচ্ছে দুদক।

এদিকে, গত রোববার বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও তিন সন্তানের আরও ১১৯টি স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, সাবেক আইজিপি

বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও তিন সন্তানের নামে থাকা আরও ১১৩টি দলিলের সম্পদ ও গুলশানের চারটি ফ্ল্যাট ক্রোক এবং অনেকগুলো কোম্পানিতে তাদের নামে থাকা শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

গত বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত বেনজীর আহমেদের ৮৩টি দলিলের সম্পদ জব্দের এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে তার স্ত্রী ও মেয়ের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবগুলোও অবরুদ্ধ করতে আদালত আদেশ দেন।

এর আগে, গত মাসের ২২ এপ্রিল বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালা উদ্দিন রিগ্যান হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।

প্রসঙ্গত, বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি দেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ৩৪ বছর ৭ মাস চাকরি করে গত ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ সালে অবসরে যান। অবসর গ্রহণের পর দেখা যায়, বেনজীর আহমেদের স্ত্রী ও কন্যাদের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে, যা তার আয়ের তুলনায় অসম।

সম্প্রতি প্রকাশিত এক জাতীয় দৈনিকের দাবি, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলেছে। এরপর থেকেই বেশ আলোচনায় পুলিশের সাবেক এই আইজিপি।

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে গত শনিবার (২০ এপ্রিল) ‘আমার কিছু কথা’ শিরোনামে এক ভিডিও বার্তায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বেনজীর আহমেদ বলেন, মিথ্যা ও কল্পনাপ্রসূত তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।

বেনজীর আহমেদের দাবি, কিছু তথ্য ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তিলকে তাল বানিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে।

;

ডয়েচে ভেলেকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রমাণের আহ্বান প্রতিমন্ত্রীর



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজায় গণহত্যা নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র তৈরি ও প্রচারের মাধ্যমে জার্মানির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আন্তর্জাতিক সম্প্রচার সংস্থা ডয়েচে ভেলেকে মানবাধিকারের প্রতি তার অঙ্গীকার এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রমাণের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

মঙ্গলবার (২৮ মে) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে তথ্য কমিশন বাংলাদেশের সম্মেলন কক্ষে 'অনগ্রসর, প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত নাগরিকের তথ্য অধিকার' বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

তথ্য কমিশন বাংলাদেশ, ইউএস এইড, দি কার্টার সেন্টার যৌথভাবে এ কর্মশালা আয়োজন করে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, নিকট অতীতে ডয়েচে ভেলে মানবাধিকার নিয়ে একটি রিপোর্ট করেছে, যেখানে শ্রীলংকা, যে দেশ কিছু দিন আগেও গৃহযুদ্ধ মোকাবিলা করেছে তার সাথে বাংলাদেশকে তুলনা করা হয়েছে। আমি এটির সমালোচনা করবো না। মানবাধিকার নিয়ে যে কোনো সংস্থার অঙ্গীকারের আমি প্রশংসা করি। শুধু আমি আহ্বান জানাবো ডয়েচে ভেলের যদি মানবাধিকারের প্রতি এত অঙ্গীকার থাকে সেটার প্রমাণ তারা দিক। গাজাতে মানবাধিকারের যে লঙ্ঘন হচ্ছে, গণহত্যা হচ্ছে সেটার ওপর আরেকটি প্রামাণ্যচিত্র তারা বানিয়ে দিক। তার মাধ্যমে মানবাধিকারের প্রতি তাদের অঙ্গীকার প্রমাণ করুক এবং একইসাথে তাদের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কতটুকু আছে সেটাও তারা প্রমাণ করুক। আর যদি সেটা তারা করতে না পারে তাহলে আমরা ধরে নেবো ডয়েচে ভেলের প্রামাণ্যচিত্র একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রামাণ্যচিত্র হয়েছে। একটা বিশেষ মহল বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এটি করেছে। যারা প্রকৃত অর্থে আমাদের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনের সমস্যা এবং তাদের উন্নয়ন নিয়ে কথা বলে না। বাংলাদেশকে পৃথিবীর সামনে খাটো করে দেখানোর যে অপচেষ্টা করে, তার অংশ হিসেবে এই প্রামাণ্যচিত্র হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ দেশের মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকার অবিশ্বাস্য। বঙ্গবন্ধু কন্যার শক্ত নেতৃত্বে আমরা যখন এগিয়ে যাচ্ছি, আমরা যখন বিশ্বমঞ্চে আমাদের অবস্থান বদলানোর চেষ্টা করছি, তখন এক ধরণের আন্তর্জাতিক ও দেশীয় ষড়যন্ত্র আমরা লক্ষ্য করি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের হতদরিদ্র মানুষদের জন্য, বিশেষ করে ভূমিহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প করে তাদের আশ্রয়ণের ব্যবস্থা করেছেন। তাদের মানবাধিকারের ব্যবস্থা করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের যে বাংলাদেশ, সেখানে ধর্ম, বর্ণ এবং লিঙ্গ নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকার থাকবে। সেটি সংবিধানে নিশ্চিত করা আছে, আইনগতভাবে করা আছে, এখন রাজনৈতিকভাবেও সেটি নিশ্চিত করা আছে। সামাজিকভাবেও তার বাস্তবায়ন আমরা সব জায়গায় দেখতে চাই। এজন্যই তথ্য অধিকার আইন করা হয়েছে।

বেদে সম্প্রদায়ের মানুষদেরও প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ন প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করেছেন, তাদের ভোটাধিকারের ব্যবস্থা করেছেন- বলেন প্রতিমন্ত্রী।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, সবচেয়ে অবহেলিত জনগোষ্ঠীর, ভূমিহীনদের মানবাধিকার সংরক্ষণ, তাদের ভোটাধিকার সংরক্ষণ এবং ভোট প্রদানের মাধ্যমে তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা সংরক্ষণ করায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার কাজ করছে। তবে এই বিষয়গুলো রাজনৈতিক ফোরামে উঠে আসে না। অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর মানবাধিকারের সুরক্ষা এক সময় অবহেলিত হয়েছিল, সব সময় তাদের বঞ্চনা ছিল। বঙ্গবন্ধু কন্যা সেগুলোর সমাধান করেছেন।

তিনি বলেন, ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তথ্য অধিকার আইন পাশ হয়। এ আইন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, সুশাসন ও গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকার প্রমাণ করে। এ আইনের দুইটি পক্ষ আছে। একটি পক্ষ হচ্ছে যারা তথ্য দেবেন, আরেকটি পক্ষ হচ্ছে যারা তথ্য নেবেন। তথ্য কমিশন দুপক্ষকেই তথ্য অধিকার আইনের বিষয়টি বোঝানোর জন্য নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। যারা সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করছেন তাদের একটা জিনিস বুঝতে হবে যে তথ্যের মালিক জনগণ। জনগণের তথ্য চাওয়ার অধিকার এ আইন নিশ্চিত করেছে। জনগণের পক্ষ থেকে যদি গণমাধ্যম তথ্য চায়, সেই তথ্য দিতে হবে। যারা তথ্য দেবেন তাদের এ বোধের জায়গাটা তৈরি হওয়া দরকার। একইসাথে যারা তথ্য নেবেন তারা অনেক সময় এ তথ্যের যথাযথ ব্যবহার করে না। তথ্য অধিকার আইন ব্যবহার করে অধিকার চর্চা করতে গিয়ে অনেক সময় অনধিকার চর্চা হয়ে যায়।

তথ্যকে শক্তি উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তথ্যের দুটি দিক আছে। তথ্য যদি সঠিক হয় তাহলে সেটি শক্তিশালী। এটি যদি সঠিক না হয়, তাহলে ধ্বংসাত্মক হতে পারে। সামাজিকভাবে যে অপতথ্যগুলো আমাদের দেশের সাধারণ মানুষকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে, সেগুলো নিয়ে আমরা অনেকে চিন্তা করি না, কথা বলি না। শুধু রাজনৈতিক অপতথ্য না, সামগ্রিকভাবেই অপতথ্য ধ্বংস ডেকে আনে।‌ আর সঠিক তথ্য মানুষকে ক্ষমতায়িত করে। এ কারণে সঠিক তথ্য পাওয়া নিশ্চিত করার সাথে সাথে অপতথ্য রোধে আমাদের কাজ করা দরকার।

প্রধান তথ্য কমিশনার ডক্টর আবদুল মালেকের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত, ইউএস এইড এর অফিস পরিচালক অ্যালেনা তানসে, তথ্য কমিশনার শহীদুল আলম ঝিনুক এবং তথ্য কমিশনার মাসুদা ভাট্টি। কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য কমিশনের সচিব জুবাইদা নাসরীন। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন দি কার্টার সেন্টারের চিফ অব পার্টি সুমনা সুলতানা মাহমুদা। কর্মশালায় বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জোবাইদা নাসরিন।

;

সুন্দরবনের কটকায় ৩০ মৃত হরিণ উদ্ধার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনে মারা গেছে হরিণসহ অন্যান্য অনেক প্রাণী। এখন পর্যন্ত বনের শুধু কটকা এলাকা থেকে ৩০টি মৃত হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও ১৫টি আহত হরিণকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এখনও বনজুড়ে তল্লাশি চলছে, তাতে মৃত হরিণের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

মঙ্গলবার (২৮ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়ে মৃত হরিণগুলো উদ্ধার করে বনবিভাগ।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে বনের অভ্যন্তরে ২৫টি টহল ফাঁড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লবণ পানি ঢুকে নষ্ট হয়েছে অন্তত ৮০টি মিঠা পানির পুকুর।খুলনাঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, রোববার বিকেল থেকে একটানা ২০ ঘণ্টা ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডব ও জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের প্রাণপ্রকৃতির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছপালার ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি বন বিভাগের বিভিন্ন বন অফিসসহ টহল বোট, টিনের চালা, জানালা-দরজা, সোলার প্যানেল ও অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ সময় জলোচ্ছ্বাসের কবলে পড়ে কটকা অভয়ারণ্যে অফিস ঘাটের জেটি বঙ্গোপসাগরের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দুবলা, কটকা, কোচিখালি, বগিসহ বিভিন্ন বন অফিসসহ ২৫টি টহল ফাঁড়ির রান্নাঘরসহ অবকাঠামোর টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, এ পর্যন্ত বনের শুধু কটকা এলাকা থেকে ৩০টি মৃত হরিণ উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। মৃত বন্যপ্রাণীর সন্ধানে বন জুড়ে বনরক্ষীদের তল্লাশি চলছে। তল্লাশিতে আরও মৃত বন্যপ্রাণী উদ্ধারের সম্ভাবনা রয়েছে।

সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, সুন্দরবনের বন্য প্রাণীদের জন্য পর্যাপ্ত উঁচু টিলা ও শেল্টার রাখা জরুরি। তাহলে এ ধরনের ক্ষয় ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব। মিঠা পানির পুকুরের পাড় ও অনেক উঁচু করতে হবে যাতে বন্যার পানি প্রবেশ করতে না পারে।

;

ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’: মা ও নবজাতকের ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি, বাস্তবের নয়



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’। ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহতায় লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ঘরবাড়ি হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন হাজারও মানুষ।

‘রিমাল’-এ বিধ্বস্ত ঘরবাড়ির ও মানুষের পাশাপাশি মঙ্গলবার (২৮ মে) সকাল থেকে মা ও নবজাতকের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

ছবিটিতে দেখা যায়, কর্দমাক্ত স্থানে মা তার সন্তানকে জড়িয়ে শুয়ে আছেন। এই ছবিটিকে বাস্তব দৃশ্য দাবি করে সোমবার (২৭ মে) ভোলার চরফ্যাশন থেকে আপলোড করা হয়। এটি বাস্তব কোনো ঘটনার নয়। এটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশের ফ্যাক্ট চেক প্রতিষ্ঠান ‘রিউমার স্ক্যানার’ জানিয়েছে, মা ও তার সন্তানকে আগলে রাখার এই ছবিটি সঠিক নয়। এটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেলে এ তথ্য বার্তা২৪.কমকে জানান প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা হেড অব অপারেশন সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডব চলে যাওয়ার পরেই মা ও নবজাতকের যে ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, সেটি কোনো বাস্তব ছবি নয়। এটি এআই দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এর আগেও চলতি বছরের মার্চ মাসেও ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছবিটি ছড়িয়ে পড়েছিল।

রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’-এর তাণ্ডবে ভোলার চরফ্যাশনে কর্দমাক্ত স্থানে মা ও সন্তানের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ছবিটি বাস্তব নয় বরং অন্তত গত মার্চ মাস থেকেই ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে ছবিটি যা এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি।

রিউমার স্ক্যানার জানাচ্ছে, রিমাল-এর ক্ষতিগ্রস্ত ঘরে মা তার সন্তানকে আগে ধরে শুয়ে আছেন ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি,বাস্তবের নয়

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে তায়েফ রাব্বানী নামে বাংলাদেশি এক ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্টে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। তবে ছবির ক্যাপশনে ছবিটির বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।

আরো অনুসন্ধান করে গত ৩ থেকে ৭ মার্চ ইউটিউব, এক্স, ফেসবুকসহ একাধিক অ্যাকাউন্টে ছবিটি পোস্ট হতে দেখেছে রিউমার স্ক্যানার। এসব পোস্টে ছবিটির বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া না হলেও এটা নিশ্চিত যে, ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

সাজ্জাদ হোসেন আরো বলেন, ছবিটি ভালোভাবে লক্ষ করলে এতে কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়ে। যেমন, কাদার মধ্যে শুয়ে থাকা নারীর হাতের আঙুল অস্বাভাবিক লম্বা। পায়ে ছয়টি আঙুল। এসব দেখে প্রাথমিক অবস্থায় ছবিটি এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরির বিষয়টি স্পষ্ট।

ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানারের এই সমন্বয়ক আরো বলেন, ছবিটি বাস্তব কি না সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি ছবি শনাক্তকরণ ওয়েবসাইটের সহায়তা নেওয়া হয়। ওয়েবসাইটটি থেকে জানা যায়, ছবিটি বাস্তব নয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি। ছবিটি যে বাস্তব নয়, সেই বিষয়টি মার্চ মাসে জানিয়েছিল ভারতীয় ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান ‘নিউজমোবাইল’।

রিউমার স্ক্যানার ফ্যাক্ট চেকিংয়ে চেক করে দেখা হয়, ফেসবুকে আপলোড হওয়া ছবিটি বাস্তবের নয়

তিনি জানান, রিউমার স্ক্যানার টিম যাচাই করে দেখেছে, এই ছবিটি অন্তত আড়াই মাস আগে থেকেই ইন্টারনেটে রয়েছে। গত মার্চ থেকে প্রচার হওয়া ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি। সুতরাং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি পুরনো একটি ছবিকে ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’-এ মা ও সন্তানের বাস্তব ছবি দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

এছাড়াও ঘূর্ণিঝড় রিমালের দৃশ্যের দাবিতে সামাজিকমাধ্যমে একটি ভিডিও আপলোড করা হয়েছে।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বন্যার পানি থেকে বাঁচতে কয়েকজন শিশু একটি নারকেল গাছে আশ্রয় নিয়েছে। এই ভিডিওটিও বাংলাদেশের নয়।

রিউমার স্ক্যানার টিম অনুসন্ধান চালিয়ে দেখেছে, বন্যা থেকে বাঁচতে শিশুদের নারকেল গাছে আশ্রয় নেওয়ার ভিডিওটি ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’-এর নয় বরং অন্তত ২০২২ সাল থেকে এই ভিডিওটি ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে। ভিডিওটির কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চ করে একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ১৮ জুলাই প্রচারিত একই ভিডিও পাওয়া যায়।

ভিডিওটির স্থিরচিত্র সার্চ করে একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ১৮ জুলাই প্রচারিত একই ভিডিও পাওয়া যায়

একই পদ্ধতি ব্যবহার করে ২০২২ সালের ২ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানভিত্তিক একটি ফেসবুক পেজে এই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ২০২৩ সালে মিয়ানমার এবং চলতি বছর আরব আমিরাতের দুবাইয়ের বন্যার দাবিতে ভিডিওটি প্রচারিত হয়। ভিডিওটি একাধিক দেশের দুর্যোগকালীন সে দেশের ভিডিও হিসেবে ইন্টারনেটে প্রচারিত হয়েছে।

রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে ভিডিওটির মূল পটভূমি বা এটি কোন দেশের, তা নিশ্চিত করা সম্ভব না হলেও এটি নিশ্চিত করা গেছে যে, ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ও ভারতে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় রিমালের নয়।

;