‘রোহিঙ্গাদের মানবিক সংকট কথায় বর্ণনা করা সম্ভব নয়’



সেন্ট্রাল ডেস্ক ২

  • Font increase
  • Font Decrease
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ক্যাম্পগুলোর অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে, তা মানুষের স্বাস্থ্য তথা জীবনের জন্য হুমকি। আর রোহিঙ্গাদের যে অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্ট তা কথায় বর্ণনা করা সম্ভব নয়। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংকট পর্যবেক্ষণে কানাডা সরকারের নিয়োগ করা বিশেষ দূত বব রায়ে এমন কথাই বলেছেন। বৃহস্পতিবার তিনি তার অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন কানাডা সরকারের কাছে জমা দিয়েছেন। ওই প্রতিবেদনে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের এমন দুর্দশার কথাই বর্ণনা করা হয়েছে। গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনী দেশটির রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে। এরপর থেকে সাড়ে ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়েছে এসেছে। মারা গেছে ৯ হাজারের বেশি। এ ছাড়া আহত হয়েছে কয়েক হাজার। সিবিসি নিউজের খবরে বলা হয়েছে, এমন ভয়াবহ সামরিক অভিযানের, জাতিসংঘ যাকে জাতিগত নিধন বলে অভিহিত করেছে, বিরুদ্ধে বিশ্ব নেতারা যখন সোচ্চার হন তখন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বব রায়েকে মিয়ানমারে বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ দেন। এর আগে বব রায়ে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে বাংলাদেশ সফর করেন। এ সময় তিনি এই অঞ্চলের বিভিন্ন নেতা, কর্মকর্তা ও বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বব তার প্রতিবেদনে নারীদের দুঃখ-কষ্টের বিষয়টিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন। মিয়ানমার সেনাবাহিনী নারীদের ওপর যে বর্বর যৌন নির্যাতন চালিয়েছে তা তিনি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নারীদের কাছ থেকে শুনেছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, যৌন নির্যাতনকে এখানে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। যৌন নির্যাতনের যারা শিকার হয়েছেন তাদের অনেকের শরীরে তার স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। রায়ে বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবশ্যই এ বিষয়ে ভূমিকা রাখতে হবে এবং অতিরিক্ত সম্পদও দরকার। মানবতাবিরোধী অপরাধের যে অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সোচ্চার হতে হবে। সেইসঙ্গে যারা নির্যাতনের ফলে নানাভাবে আহত হয়েছেন তাদের পরবর্তী পদক্ষেপের প্রতিও গুরুত্ব দিতে হবে। রায়ে আরও বলেছেন, রাখাইন রাজ্যের তথ্য সংগ্রহ করতে সম্প্রতি জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন একটি প্রতিনিধি দল পাঠায়। কিন্তু মিয়ানমার সরকার সেই প্রতিনিধি দলকে রাখাইনে প্রবেশ করতে দেয়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে কী ঘটেছে তার একটা পুঙ্খানুপুঙ্খ ও নিয়মতান্ত্রিক তদন্ত অবশ্যই হওয়া দরকার এবং গত কয়েক বছরের তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করা দরকার। আর আন্তর্জাতিক এই গুরুত্বপূর্ণ কাজে কানাডা সরকারের সংশ্লিষ্টতা থাকবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগে গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ডক্টরস উইদআউট বর্ডারস বলেছে যে, তারা মাঠ পর্যায়ে গবেষণা করে দেখতে পেয়েছে, গত আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাঁড়াশি অভিযানে ৬ হাজার ৭০০ রোহিঙ্গা মুসলমান নিহত হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গ্রুপগুলোর অভিযোগ, সরকারি কর্মকর্তারা যে অনিয়ম করেছে তা তদন্ত করতে দিতে নারাজ মিয়ানমার সরকার ও দেশটির সেনাবাহিনী। আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থাগুলোকে সহায়তা করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বানও জানানো হয় মানবাধিকার গ্রুপগুলোর পক্ষ থেকে। বব রায়ে বলেছেন, নতুন বছরে তিনি আবারও বাংলাদেশে আসবেন এবং চূড়ান্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশ দেওয়ার আগে মিয়ানমার, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে কথা বলবেন।
   

গাইবান্ধায় পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা
গাইবান্ধায় পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু

গাইবান্ধায় পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু

  • Font increase
  • Font Decrease

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে পুকুরের পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (১৯ মে) বিকেলে উপজেলার নাকাই ইউনিয়নের ডুমুরগাছা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তিন বছর বয়সী শিশু সাদ বাবু ওই গ্রামের হাবিব-মৌসুমী দম্পতির একমাত্র ছেলে।

মৃত্যুর বিষয়টি রাত সাড়ে নয়টার দিকে মোবাইল ফোনে নিশ্চিত করেছেন উপজেলার নাকাই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য তহিদুল ইসলাম।

এ সময় স্থানীয়দের বরাতে তিনি জানান, শিশুটির মা ঘরের কাজে ব্যস্ত থাকায় খেলতে খেলতে কিছুক্ষণের মধ্যেই নিখোঁজ হয় শিশু সাদ্। পরে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে শিশুটির মা নিজেই তাদের বাড়ির পিছনে পুকুরের পানিতে ভাসতে দেখেন। পরে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথেই মৃত্যু হয়।

;

লোভের ফাঁদে ফেলে গ্রাহকের ২৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ, গ্রেফতার ২



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগরীর অক্সিজেন এলাকায় একটি ভবনের ৫ম তলায় ‘আস্থা মাল্টিপারপাস সার্ভিস লিমিটেড’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) অফিস চালু করে কয়েকজন মিলে। সেই এনজিওতে সদস্য হয়ে ঋণ নিতে বিভিন্ন প্রলোভন দেখানো হয় অসহায়-নিরীহ নারীদের। গত ১ মাস ধরে এভাবেই বিভিন্ন প্রলোভনে জামানত ও সঞ্চয়ের নাম করে সদস্যদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয় ২৬ লাখ টাকারও বেশি। পরে ঋণ না পেয়ে ওই অফিসের দুইজনকে আটক করে পুলিশে দিলে বেরিয়ে আসে প্রতারণার ছক।

শনিবার (১৮ মে) বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন অক্সিজেন কুয়াইশ রোড এলাকার তারেক বিল্ডিংয়ের ৫ম তলা থেকে তাদের আটক করে ভুক্তভোগীরা। পরে তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

গ্রেফতারকৃত দুইজন হলেন, মেহেদী হাসান সবুজ (৩৫) এবং মো. জাফরুল হাসান খান (২৮)। এরমধ্যে সবুজ বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জের হাওলাদার বাড়ির হালিম হাওলাদারের ছেলে। বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেডে বন্দর টিলা এলাকায় থাকেন তিনি। আর জাফরুল বাগেরহাট জেলার সরণখোলার চালিতাবুনিয়ার খান বাড়ির মো. আসলাম হোসেন খানের ছেলে। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামীর অক্সিজেন কাঁচাবাজার এলাকায় থাকেন।

পুলিশ জানায়, গত ১৯ এপ্রিল নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন অক্সিজেন কুয়াইশ রোড এলাকায় ‘আস্থা মাল্টিপারপাস সার্ভিস লিমিটেড’ নামে একটি বেসরকারি এনজিওর অফিস খুলে অভিযুক্তরা। গত এক মাস ধরে ওই এলাকার শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে গিয়ে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে এনজিও’র সদস্য হওয়ার প্রস্তাব দেয়। একইসঙ্গে তাদের আরো কয়েকজনকে সদস্য করার কথা বলে। পরে সদস্য হওয়ার জন্য ভুক্তভোগীরা অফিসে গেলে অভিযুক্তরা তাদের জানায়, এককালীন ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় দিলে সপ্তাহের মধ্যে ১ লাখ টাকা এবং ২০ হাজার সঞ্চয় দিলে ২ লাখ টাকা ঋণ দিবে। এছাড়াও সদস্যদের পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে তাদের চিবিৎসা ভাতাসহ নানান সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। অভিযুক্তদের কথা বিশ্বাস করে ভুক্তভোগীরা প্রত্যেকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে সদস্যপদ নেয়। ভুক্তভোগীরা প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা জামানত দেয়। পরে তাদের একটি সঞ্চয় ও ঋণ পাস বই দেয় অভিযুক্তরা। এসময় অভিযুক্তরা সদস্যদের সঞ্চয় ও ঋণ পাশ বইতে কাজ আছে বলে নিয়ে যায় এবং জানায় ১৮ মে তাদের ঋণ দেওয়া হবে।

সেই প্রেক্ষিতে গতকাল ১৮ মে (শনিবার) সকালে ওই এনজিও অফিসে গেলে তালাবদ্ধ দেখতে পায়। পরে ভুক্তভোগীরা জানতে পারেন, অভিযুক্তরা ঋণ দিবে বলে এ রকম অনেকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়া ঋণের টাকা না দেওয়ায় মেহেদী হাসান সবুজ এবং মো. জাফরুল হাসান খানকে আটক করে ভুক্তভোগীরা থানায় নিয়ে গেছে। তবে এ ঘটনায় আরো দুই অভিযুক্ত পলাতক রয়েছেন।

পরে এ ঘটনায় বায়েজিদ থানায় ভুক্তভোগীদের মধ্যে একজন সদস্য তাদের বিরুদ্ধে বায়েজিদ থানায় মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার প্রেক্ষিতে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ জনের কাছ থেকে সদস্য ফিসহ বিভিন্ন কারণে জামানত হিসাবে টাকা নেয়। পরে আটককৃতদের দেখানো মতে অফিস থেকে ১২৭টি সঞ্চয় ও ঋণ পাশ বই এবং ৫৭৬টি সদস্য আবেদন ফরম জব্দ করা হয়।

বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় কুমার সিনহা বলেন, ‘প্রথমে অসহায়-নিরীহ মানুষের কাছে গিয়ে আর্থিকভাবে স্বচ্ছলতার প্রলোভনসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার কথা জানিয়ে বিশ্বাস অর্জন করতো তারা (অভিযুক্ত)। পরে ঋণ দিবে বলে সদস্যদের কাছ থেকে জামানত নিতো। এভাবে তারা বাদী ও বাদীর পরিচিত সদস্যদের কাছ থেকে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা এবং আরো বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের কাছ থেকে জামানত ও সঞ্চয়ের নামে ২৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল ওই এনজিওর সদস্যদের ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। তবে সদস্যরা অফিসে গিয়ে জানতে পারেন তাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। পরে সদস্যরা ওই এনজিও’র সঙ্গে জড়িত দুইজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এক সদস্য বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। সেই মামলায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। মামলায় চারজনকে আসামি করা হয়েছে। আরও দুইজন পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

;

ত্রুটিপূর্ণ মোটরযান চলাচল বন্ধে বিআরটিএ'র জরুরি বিজ্ঞপ্তি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ত্রুটিপূর্ণ মোটরযান চলাচল বন্ধে বিআরটিএ'র জরুরি বিজ্ঞপ্তি

ত্রুটিপূর্ণ মোটরযান চলাচল বন্ধে বিআরটিএ'র জরুরি বিজ্ঞপ্তি

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা মহাসড়কে ত্রুটিপূর্ণ মোটরযান চালনা বন্ধ কারণে জরুরি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।

রোববার (১৯ মে) বিআরটিএ সদর কার্যালয় থেকে জরুরি এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

ঢাকাসহ মহাসড়কে লাইট ভাঙ্গা, সিট ভাঙ্গা মোটরযান চলাচলের কারণে প্রায়শঃ সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে বলা হয়, বাংলাদেশ বর্তমানে একটি উন্নয়নশীল দেশ। ফলে ঢাকা মহানগরে চলাচলরত গণপরিবহনের সৌন্দর্যের উপর নগরের সৌন্দর্য ও দেশের ভাবমূর্তি অনেকাংশে নির্ভর করে। সড়ক দুর্ঘটনা পরিস্থিতি উন্নতির লক্ষে এ ধরনের ত্রুটিপূর্ণ মোটরযান চলাচল বন্ধ করা প্রয়োজন।


মোটরযান চালক, যাত্রী, পথচারীসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ১ জুলাই -এর মধ্যে এ ধরনের ত্রুটিপূর্ণ মোটরযানকে ত্রুটিমুক্ত ও দৃষ্টিনন্দন করার জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায়, আগামী ১ জুলাই থেকে ত্রুটিপূর্ণ মোটরযানের বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইন এবং বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

;

কর আাদয়ের সক্ষমতার হিসাব না করেই টার্গেট নির্ধারণ: রহমাতুল মুনিম



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় বাজেটে কর আহরণ সংক্রান্ত লক্ষ্য নির্ধারণের সময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এবিআর) অসহায়ত্ব প্রকাশ পেয়ে থাকে বলে মন্তব্য করেছেন সরকারের কর সংক্রান্ত সংস্থাটির চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

তিনি বলেছেন, আাদয়ের সক্ষমতার হিসাব না করেই অর্থমন্ত্রনালয় থেকে বড় একটা টার্গেট নির্ধারণ করে দেয়া হয়। এই টার্গেট তাড়া করতে গিয়ে ইনোভেটিভ কোন কর্মপরিকল্পনা বা রিফর্মের কোন চিন্তা করারও সুযোগ থাকে না।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) আয়োজনে "বাংলাদেশে কর ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশন: পরবর্তী করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে সম্মানীয় অতিথি বক্তব্যে রোববার (১৯ মে) তিনি এ সব কথা বলেন।

রাজধানীর একটি হোটেলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সিপিডির এই যৌথ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থপ্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংস্থাটির ডিশটিংগুইশড ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ ছাড়াও সরকারের পলিসি মেকার, রাজনীতিবিদ, ব্যক্তিখাতের প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য রাখেন।

স্বচ্ছতার সাথে গুনমান নিশ্চিত করে সরকারি অর্থ ব্যয় হলে কর আদায় বাড়তে পারে মন্তব্য করে সংলাপে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, গণপরিবহণ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও নিরাপত্তাসহ সরকারি সেবার উন্নতির সম্ভাবনা থাকলে নাগরিকদের কর প্রদানে উৎসাহ বাড়ে।

এক্ষেত্রে শুধুমাত্র কর আহরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন না করে ব্যযের ক্ষেত্রেও আধুনিকায়নের তাগিদ দেন তিনি।

এ অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর বাস্তবায়ন পর্যালোচনায় কত টাকা বরাদ্দের বিপরীতে কত ব্যয় হেয়েছে সেই হিসাব হয়ে থাকে। সরকারি ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন কাজের ভৌত অগ্রগতি, গুনগত অগ্রগতি ও প্রভাবমূল্যায়ন নিশ্চিত করার তাগিদ দেন।

কর ফাঁকিতে সংশ্লিষ্টদের প্রভাবশালী আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, যারা কর দেয় না, দেশ থেকে টাকা পাচার করে, তারা রাজনৈতিকভাবে এবং আর্থিকভাবে আনেক শক্তিশালী। তাদের কাছ রেথকে কর আদায় করতে গিয়ে এনবিআর কর্মকর্তারা ঝুকির মধ্যে পরেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এনবিআর কর্মীদের অসহায় আখ্যায়িত করে তাদের রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে সুরক্ষা দিয়ে কর আদায়ে সমর্থন দিতে তিনি সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান।
বাজেটে রাজস্ব আদাযের টার্গেট নির্ধারণের সময় এনবিআর এর অসহায়ত্ব উঠে আসে মন্তব্য করে সংস্থাটির চেয়ারম্যান বলেন, ”তার্গেট একটা দিয়ে দেয়া হল। সক্ষমতা কতটা আছে? এবং তার্গেটটা অলৌকিক।”

তিনি বলেন, সক্ষমতা হিসাব না করেই টার্গেট দেয়া হয়। আবার টার্গেটের সঙ্গে মিল রেখে সরকারের ব্যযের খাত চূড়ান্ত করায় আদাযে তাদিও দেয়া হয়।
এ সময় তিনি আরও বলেন, আগের অর্থবছরের মোট আদায়ের সঙ্গে একটা প্রবৃদ্ধি ধরে নতুন অর্থবছরের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলে এই লক্ষ্য পূরণের কিছুটা সম্ভাবনা থাকে।

তবে বাস্তবতা হচ্ছে, আগের বছরের লক্ষ্যের সঙ্গে তুলনা করে পরের বছরের রাজস্বের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।

”এই টার্গেটের বোঝা থাকার কারণে অনেক সময় ইনোভেটিভ আইডিয়া ও রিফর্মের বিষয়ে চিন্তা করার সুযোগ থাকে না,” বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, চলতি বাজেটে শতভাগ লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে করার শর্তে করপোরেট করে বেশ কিছু ছাড় ঘোষণা করা হলেও ব্যবসায়ীরা এই সুযোগ নিতে পারেননি।

তিনি বলেন, বড় ব্যবসায়ীরাই লেনদেনে নগদ টাকাকে প্রাধান্য দিলে ক্যাশলেস সোসাইটি গড়ে তুলা কঠিন হবে।

সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান, অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে কর-জিডিপির অনুপাত বাংলাদেশে সর্বনিম্ন। এর ফলে জিডিপির তুলনায় সরকারি ব্যয়ের হারেও বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। শতভাগ ই ফাইলিং নিশ্চিত করে করের হার জিডিপির পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত বা্ড়ানো সম্ভব বলে অনুষ্ঠানে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি আরও বলেন, শতভাগ ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে অন্যান্য পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলেও ২০৩০ সালের মধ্যে কর আহরণ ১৬৭ বিলিয়ন ডলারে উঠবে।

আর প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে না পারলে ওই সময়ে কর আহরণ হবে সর্বোচ্চ ৯০ বিলিয়ন ডলার। এ হিসাবে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার কর আহরণ প্রায় ৮৬% বাড়াতে সহায়তা করবে।

কর বাড়াতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের অভাব রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এখানে ২৫ পয়সা বিনিয়োগ করলে সরকারের আয় বাড়ে ১০০ টাকা। অন্যান্য দেশে একই পরিমাণে রাজস্ব আদায় বাড়াতে বাংলাদেশের তুলনায় তিন গুন বিনিয়োগ করতে হয়,” মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিনিয়োগের জন্য কর আহরণ খাতের তুলনায় লাভজনক কোন খাতই থাকতে পারে না।

;