জলবায়ু পরিবর্তন: হাতে সময় মোটে ৫ বছর!



বার্তা২৪ স্পেশাল রিপোর্ট
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গলছে বরফ

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গলছে বরফ

  • Font increase
  • Font Decrease

কথা নয়, কাজে বিশ্বাসী, এই আপ্তবাক্যটি আর যেখানেই খাটুক না কেন, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুটির সঙ্গে আর খাটবে না। গোটা বিশ্ব জানে, গত অন্তত তিনটি দশক এ নিয়ে কথাই বেশি হয়েছে। কাজ হয়েছে খুবই সামান্য।

আর তার পরিপ্রেক্ষিতে ব্রহ্মাণ্ড এখন যে পরিস্থিতিতে পৌঁছে গেছে, বিশেষত কার্বন নিঃসরণের যে পরিসংখ্যান আজ দেখানো হচ্ছে, তাতে বলা হচ্ছে, বায়ুমণ্ডলে এতটা কার্বনের উপস্থিতি ১২ মিলিয়ন বছর আগেও ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয় গেল মাসের মাঝামাঝিতে অনুষ্ঠিত এক জলবায়ু সম্মেলনে কথাটি স্পষ্ট করে উচ্চারণ করলেন এক হার্ভার্ড বিজ্ঞানী। তিনি সাফ সাফ বলে দিলেন, এই গতিতে চললে ব্রহ্মাণ্ডকে ৩৩ মিলিয়ন বছর আগের সেই ইয়োসিন যুগে (প্রস্তর যুগের দ্বিতীয় ভাগ যা ৬৬ মিলিয়ন থেকে ২৩ মিলিয়ন বছর আগের সময়টিকেই নির্দেশ করে) নিয়ে যাবে। আর সে অবস্থা থেকে পরিত্রাণে হাতে সময় রয়েছে মোটে পাঁচ বছর।

কথায় কথায় একটি কথাতো খুব বলা হয়, বেশি দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই যা করার তা করতে হবে। কিন্তু হার্ভার্ড বিজ্ঞানীর কথায় মনে হচ্ছে, দেরি বুঝি হয়েই গেল। ফোর্বস ম্যাগাজিন হার্ভার্ড অধ্যাপক জেমস এন্ডারসনের কথাগুলোকে খুব গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছে। তাতে এন্ডারসনকে উদ্ধৃত করা হয়েছে এভাবে- ‘প্রকৃত অবস্থা কী তা নিয়ে আমাদের কাছে এখন পাক্কা তথ্য, তত্ত্ব আর উপাত্ত রয়েছে। আমরা মিলিয়ন মিলিয়ন বছর আগের সেই প্রস্তর যুগের আবহাওয়া মণ্ডলেই ফেরত যাচ্ছি, যেখানে দুই মেরুর কোথাও কোনো বরফের অস্তিত্ব থাকবে না। আর বিষুবরেখা ও মেরুরেখার আবহাওয়ায় থাকবে না কোনো ভিন্নতা।’

ক্লোরো-ফ্লোরো-কার্বনে ওজন স্তর ছিদ্র হয়ে অকেজো হয়ে পড়ছে- এমন তত্ত্ব এনে এবং তা প্রমাণ করে অনেক আগেই বিশ্বজুড়ে নাম কুঁড়িয়েছেন এই বায়ুমণ্ডলীয় রসায়নবিদ। ফোর্বস ম্যাগাজিন লিখেছে, গত ১৩ জুন শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই আলোচনায় জেমস এন্ডারসন আরও বলেন, ‘ঠিক আজ যতটুকু, তার চেয়ে ১০ সেন্টিগ্রেড উষ্ণতায় বইবে সমুদ্রের পানি। সমুদ্র তলদেশের পানির তাপমাত্রায়ও থাকবে না এমন কিছু ভিন্নতা। আর বাতাসে জলীয়বাষ্প যে হারে বেড়ে যাবে, তাতে ঝড়-ঝঞ্ঝা হয়ে উঠবে এক অনিবার্য পরিণতি। পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে জলীয়বাষ্পে যে গ্যাসের সৃষ্টি হয়, তা ঝড়-ঝঞ্ঝার পুরো প্রক্রিয়াটিকে প্রভাবিত করবে।’

এন্ডারসন বলেন, ‘স্রেফ কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আমরা এই পরিণতি থেকে রেহাই পেয়ে যাব- এমন এক ভ্রান্ত ধারণা মানুষের মধ্যে কাজ করছে। তবে পরিত্রাণ যে একেবারেই অসম্ভব, তা নয়। সে জন্য আমাদের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী শিল্পবিপ্লবের মতোই কিছু একটা করতে হবে। কার্বন দূষণ বন্ধতো করতেই হবে, একই সঙ্গে বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন সরিয়ে ফেলতে হবে। তাতে যদি ওজন স্তর কিছুটা রক্ষা পায়, আর সূর্যের নীল রশ্মিগুলো সেই স্তরের ওপর পড়ে আবার মহাকাশমণ্ডলেই ফিরে যেতে পারে। আর সে জন্য আমাদের হাতে রয়েছে মোটে পাঁচটি বছর।’

আরও যেসব ভয়াবহ তথ্য অধ্যাপক জেমস এন্ডারসন দিলেন, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ২০২২ সাল নাগাদ আর্কটিকে আর একটিও স্থায়ী বরফখণ্ডের অস্তিত্ব থাকবে না। গেল ৩৫ বছরে এই অঞ্চলের ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ স্থায়ী বরফখণ্ড গলে যেতে শুরু করেছে।

আমরা যদি ভেবে থাকি, ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ স্থায়ী বরফ গলতে শুরু করার পরেও আমাদের পরিণতি ভালো কিছু হবে, তা হলে কী আমরা সঠিক ভাবছি? প্রশ্ন ছিল জেমন এন্ডারসনের। আর উত্তরটিও তিনি নিজেই দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, না।

এই বড় ‘না’ কথাটি আবার প্রধান দু’টি কারণে। প্রথমটির নাম বিজ্ঞানীরা দিয়েছেন পুনঃপ্রত্যবর্তন। আসলে এই বিশ্ব উষ্ণায়নে আমাদের ধরিত্রী নিজেই এক ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখাতে প্রস্তুত। যার অন্যতম হচ্ছে-স্থায়ী বরফাচ্ছন্ন অংশের এবং সমুদ্র তলদেশে যে ভয়াবহ মিথাইন গ্যাস জমাট বেঁধে আছে সেগুলো যে কোনও সময় ছিঁটকে বেরিয়ে আসবে। এতে উষ্ণায়ন তরান্বিতই হবে। অন্যটি হচ্ছে, গ্রিনল্যান্ডের বিপুলকায় বরফখণ্ডটি। যা বেশ আগে থেকেই ভেঙ্গে পড়ি পড়ি করছে। কিন্তু এখনো ভাঙ্গেনি। একবার ভেঙ্গে পড়লে সমুদ্রে পানির স্তর যে বেড়ে যাবে সে কথা বলাই বাহুল্য। অধ্যাপক এন্ডারসন জানাচ্ছিলেন, শুধু বাড়বে বললে কম বলা হবে। কারণ তখন অন্তত সাত মিটার উচ্চতায় বইবে সমুদ্রের পানি। ফুটের হিসাবে যা ২৩ ফুট।

এই যে সমুদ্রের পানির স্তর বেড়ে যাবে বলে পই পই করে বলা হচ্ছে, মানুষ আসলে তার ভয়াবহতা কতটুকু অনুধাবন করতে পারছে? সে প্রশ্নটিই করলেন হার্ভার্ড অধ্যাপক। তিনি অবশ্য কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী। আর সে কারণে একটু সপ্রমাণ উপাত্ত হাজির করলেন তার আলোচনায়। একটি ম্যাপ ডিসপ্লে করে দেখিয়ে দিলেন, এই যে ১০ বিলিয়ন ডলারে নির্মিত হার্ভার্ড ক্যাম্পাসে বসে আমরা কথা বলছি, সেটি সমুদ্র পৃষ্ঠের মোটে তিন মিটার উপরে। ফলে সাত মিটার উচ্চতায় সমুদ্র স্তর এর কি পরিণতি ঘটাবে তা বলাই বাহুল্য। ওদিকে ম্যানহাটান ততক্ষণে পানির দখলে চলে যাবে, আর ফ্লোরিডার দক্ষিণাংশ পুরোপুরি অস্তিত্ব হারাবে।

এখানে জানিয়ে রাখি, আমাদের ঢাকার উচ্চতা সমুদ্র থেকে চার মিটার উপরে। দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল মাত্র ১.২ মিটার উপরে।

‘এসব তথ্য উপাত্ত নিয়ে আপনি যখন কাজ করবেন, তখন রাতে ঘুমাতে পারবেন না। তখন আপনার মগজে এসে হানা দেবে নৈতিক দায়িত্ববোধ,’ বলেন অধ্যাপক জেমস এন্ডারসন। ১৯৮৭ সালে এই কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে এনে ওজন স্তরের ধ্বংস ঠেকানোর যে মন্ট্রিয়ল প্রোটোকল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, তা সম্ভব করে তুলতে এই হার্ভার্ড অধ্যাপকের বড় ভূমিকা ছিল। সে জন্য ২০১৬ সালে শিকাগোয় তিনি বেনটন মেডাল ফর ডিস্টিংগুইশড পাবলিক সার্ভিস পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

তবে পুরস্কারই শেষ কথা নয়। এন্ডারসন বলেন, ‘এখন পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকাতে বিষয়টি আমাদের পদার্থবিজ্ঞানীদের সেভাবে দায়িত্ব নিতে হবে, ঠিক যেভাবে আমাদের জীববিজ্ঞানীরা ক্যান্সার প্রতিরোধে লড়ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পদার্থবিদ্যার শিক্ষায় জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সরকারের নীতি কৌশল, জননীতি ও অন্যান্য বিষয়গুলো সম্পৃক্ত করতে হবে।’

শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের সে আয়োজনে সেদিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও একচোট নিলেন এই অধ্যাপক। বললেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধে রাজি নয়। রাজনৈতিক নেতারা তো যখন তখন এর পক্ষে সাফাই গেয়ে চলেছেন। জীবাশ্ম জ্বালানির বেনিয়ারা তো নানাভাবেই তা চালু রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আর সাংবাদিকরাও তাদের বক্তব্য ভুল প্রমাণে যথার্থ তথ্য-উপাত্ত হাজির করতে পারছে না।’

‘আমি বুঝি না এই লোকগুলো তাদের শিশুদের পাশে নিয়ে রাতের খাবার খেতে বসেন কীভাবে, উদ্বেগ ঝরে এন্ডারসনের কণ্ঠে। ‘লোকগুলো তো অশিক্ষিত কিংবা নির্বোধ নয়,’ বলেন তিনি।

   

লোভের ফাঁদে ফেলে গ্রাহকের ২৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ, গ্রেফতার ২



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগরীর অক্সিজেন এলাকায় একটি ভবনের ৫ম তলায় ‘আস্থা মাল্টিপারপাস সার্ভিস লিমিটেড’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) অফিস চালু করে কয়েকজন মিলে। সেই এনজিওতে সদস্য হয়ে ঋণ নিতে বিভিন্ন প্রলোভন দেখানো হয় অসহায়-নিরীহ নারীদের। গত ১ মাস ধরে এভাবেই বিভিন্ন প্রলোভনে জামানত ও সঞ্চয়ের নাম করে সদস্যদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয় ২৬ লাখ টাকারও বেশি। পরে ঋণ না পেয়ে ওই অফিসের দুইজনকে আটক করে পুলিশে দিলে বেরিয়ে আসে প্রতারণার ছক।

শনিবার (১৮ মে) বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন অক্সিজেন কুয়াইশ রোড এলাকার তারেক বিল্ডিংয়ের ৫ম তলা থেকে তাদের আটক করে ভুক্তভোগীরা। পরে তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

গ্রেফতারকৃত দুইজন হলেন, মেহেদী হাসান সবুজ (৩৫) এবং মো. জাফরুল হাসান খান (২৮)। এরমধ্যে সবুজ বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জের হাওলাদার বাড়ির হালিম হাওলাদারের ছেলে। বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেডে বন্দর টিলা এলাকায় থাকেন তিনি। আর জাফরুল বাগেরহাট জেলার সরণখোলার চালিতাবুনিয়ার খান বাড়ির মো. আসলাম হোসেন খানের ছেলে। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামীর অক্সিজেন কাঁচাবাজার এলাকায় থাকেন।

পুলিশ জানায়, গত ১৯ এপ্রিল নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন অক্সিজেন কুয়াইশ রোড এলাকায় ‘আস্থা মাল্টিপারপাস সার্ভিস লিমিটেড’ নামে একটি বেসরকারি এনজিওর অফিস খুলে অভিযুক্তরা। গত এক মাস ধরে ওই এলাকার শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে গিয়ে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে এনজিও’র সদস্য হওয়ার প্রস্তাব দেয়। একইসঙ্গে তাদের আরো কয়েকজনকে সদস্য করার কথা বলে। পরে সদস্য হওয়ার জন্য ভুক্তভোগীরা অফিসে গেলে অভিযুক্তরা তাদের জানায়, এককালীন ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় দিলে সপ্তাহের মধ্যে ১ লাখ টাকা এবং ২০ হাজার সঞ্চয় দিলে ২ লাখ টাকা ঋণ দিবে। এছাড়াও সদস্যদের পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে তাদের চিবিৎসা ভাতাসহ নানান সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। অভিযুক্তদের কথা বিশ্বাস করে ভুক্তভোগীরা প্রত্যেকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে সদস্যপদ নেয়। ভুক্তভোগীরা প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা জামানত দেয়। পরে তাদের একটি সঞ্চয় ও ঋণ পাস বই দেয় অভিযুক্তরা। এসময় অভিযুক্তরা সদস্যদের সঞ্চয় ও ঋণ পাশ বইতে কাজ আছে বলে নিয়ে যায় এবং জানায় ১৮ মে তাদের ঋণ দেওয়া হবে।

সেই প্রেক্ষিতে গতকাল ১৮ মে (শনিবার) সকালে ওই এনজিও অফিসে গেলে তালাবদ্ধ দেখতে পায়। পরে ভুক্তভোগীরা জানতে পারেন, অভিযুক্তরা ঋণ দিবে বলে এ রকম অনেকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়া ঋণের টাকা না দেওয়ায় মেহেদী হাসান সবুজ এবং মো. জাফরুল হাসান খানকে আটক করে ভুক্তভোগীরা থানায় নিয়ে গেছে। তবে এ ঘটনায় আরো দুই অভিযুক্ত পলাতক রয়েছেন।

পরে এ ঘটনায় বায়েজিদ থানায় ভুক্তভোগীদের মধ্যে একজন সদস্য তাদের বিরুদ্ধে বায়েজিদ থানায় মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার প্রেক্ষিতে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ জনের কাছ থেকে সদস্য ফিসহ বিভিন্ন কারণে জামানত হিসাবে টাকা নেয়। পরে আটককৃতদের দেখানো মতে অফিস থেকে ১২৭টি সঞ্চয় ও ঋণ পাশ বই এবং ৫৭৬টি সদস্য আবেদন ফরম জব্দ করা হয়।

বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় কুমার সিনহা বলেন, ‘প্রথমে অসহায়-নিরীহ মানুষের কাছে গিয়ে আর্থিকভাবে স্বচ্ছলতার প্রলোভনসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার কথা জানিয়ে বিশ্বাস অর্জন করতো তারা (অভিযুক্ত)। পরে ঋণ দিবে বলে সদস্যদের কাছ থেকে জামানত নিতো। এভাবে তারা বাদী ও বাদীর পরিচিত সদস্যদের কাছ থেকে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা এবং আরো বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের কাছ থেকে জামানত ও সঞ্চয়ের নামে ২৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল ওই এনজিওর সদস্যদের ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। তবে সদস্যরা অফিসে গিয়ে জানতে পারেন তাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। পরে সদস্যরা ওই এনজিও’র সঙ্গে জড়িত দুইজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এক সদস্য বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। সেই মামলায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। মামলায় চারজনকে আসামি করা হয়েছে। আরও দুইজন পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

;

ত্রুটিপূর্ণ মোটরযান চলাচল বন্ধে বিআরটিএ'র জরুরি বিজ্ঞপ্তি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ত্রুটিপূর্ণ মোটরযান চলাচল বন্ধে বিআরটিএ'র জরুরি বিজ্ঞপ্তি

ত্রুটিপূর্ণ মোটরযান চলাচল বন্ধে বিআরটিএ'র জরুরি বিজ্ঞপ্তি

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা মহাসড়কে ত্রুটিপূর্ণ মোটরযান চালনা বন্ধ কারণে জরুরি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।

রোববার (১৯ মে) বিআরটিএ সদর কার্যালয় থেকে জরুরি এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

ঢাকাসহ মহাসড়কে লাইট ভাঙ্গা, সিট ভাঙ্গা মোটরযান চলাচলের কারণে প্রায়শঃ সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে বলা হয়, বাংলাদেশ বর্তমানে একটি উন্নয়নশীল দেশ। ফলে ঢাকা মহানগরে চলাচলরত গণপরিবহনের সৌন্দর্যের উপর নগরের সৌন্দর্য ও দেশের ভাবমূর্তি অনেকাংশে নির্ভর করে। সড়ক দুর্ঘটনা পরিস্থিতি উন্নতির লক্ষে এ ধরনের ত্রুটিপূর্ণ মোটরযান চলাচল বন্ধ করা প্রয়োজন।


মোটরযান চালক, যাত্রী, পথচারীসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ১ জুলাই -এর মধ্যে এ ধরনের ত্রুটিপূর্ণ মোটরযানকে ত্রুটিমুক্ত ও দৃষ্টিনন্দন করার জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায়, আগামী ১ জুলাই থেকে ত্রুটিপূর্ণ মোটরযানের বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইন এবং বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

;

কর আাদয়ের সক্ষমতার হিসাব না করেই টার্গেট নির্ধারণ: রহমাতুল মুনিম



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় বাজেটে কর আহরণ সংক্রান্ত লক্ষ্য নির্ধারণের সময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এবিআর) অসহায়ত্ব প্রকাশ পেয়ে থাকে বলে মন্তব্য করেছেন সরকারের কর সংক্রান্ত সংস্থাটির চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

তিনি বলেছেন, আাদয়ের সক্ষমতার হিসাব না করেই অর্থমন্ত্রনালয় থেকে বড় একটা টার্গেট নির্ধারণ করে দেয়া হয়। এই টার্গেট তাড়া করতে গিয়ে ইনোভেটিভ কোন কর্মপরিকল্পনা বা রিফর্মের কোন চিন্তা করারও সুযোগ থাকে না।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) আয়োজনে "বাংলাদেশে কর ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশন: পরবর্তী করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে সম্মানীয় অতিথি বক্তব্যে রোববার (১৯ মে) তিনি এ সব কথা বলেন।

রাজধানীর একটি হোটেলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সিপিডির এই যৌথ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থপ্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংস্থাটির ডিশটিংগুইশড ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ ছাড়াও সরকারের পলিসি মেকার, রাজনীতিবিদ, ব্যক্তিখাতের প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য রাখেন।

স্বচ্ছতার সাথে গুনমান নিশ্চিত করে সরকারি অর্থ ব্যয় হলে কর আদায় বাড়তে পারে মন্তব্য করে সংলাপে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, গণপরিবহণ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও নিরাপত্তাসহ সরকারি সেবার উন্নতির সম্ভাবনা থাকলে নাগরিকদের কর প্রদানে উৎসাহ বাড়ে।

এক্ষেত্রে শুধুমাত্র কর আহরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন না করে ব্যযের ক্ষেত্রেও আধুনিকায়নের তাগিদ দেন তিনি।

এ অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর বাস্তবায়ন পর্যালোচনায় কত টাকা বরাদ্দের বিপরীতে কত ব্যয় হেয়েছে সেই হিসাব হয়ে থাকে। সরকারি ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন কাজের ভৌত অগ্রগতি, গুনগত অগ্রগতি ও প্রভাবমূল্যায়ন নিশ্চিত করার তাগিদ দেন।

কর ফাঁকিতে সংশ্লিষ্টদের প্রভাবশালী আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, যারা কর দেয় না, দেশ থেকে টাকা পাচার করে, তারা রাজনৈতিকভাবে এবং আর্থিকভাবে আনেক শক্তিশালী। তাদের কাছ রেথকে কর আদায় করতে গিয়ে এনবিআর কর্মকর্তারা ঝুকির মধ্যে পরেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এনবিআর কর্মীদের অসহায় আখ্যায়িত করে তাদের রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে সুরক্ষা দিয়ে কর আদায়ে সমর্থন দিতে তিনি সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান।
বাজেটে রাজস্ব আদাযের টার্গেট নির্ধারণের সময় এনবিআর এর অসহায়ত্ব উঠে আসে মন্তব্য করে সংস্থাটির চেয়ারম্যান বলেন, ”তার্গেট একটা দিয়ে দেয়া হল। সক্ষমতা কতটা আছে? এবং তার্গেটটা অলৌকিক।”

তিনি বলেন, সক্ষমতা হিসাব না করেই টার্গেট দেয়া হয়। আবার টার্গেটের সঙ্গে মিল রেখে সরকারের ব্যযের খাত চূড়ান্ত করায় আদাযে তাদিও দেয়া হয়।
এ সময় তিনি আরও বলেন, আগের অর্থবছরের মোট আদায়ের সঙ্গে একটা প্রবৃদ্ধি ধরে নতুন অর্থবছরের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলে এই লক্ষ্য পূরণের কিছুটা সম্ভাবনা থাকে।

তবে বাস্তবতা হচ্ছে, আগের বছরের লক্ষ্যের সঙ্গে তুলনা করে পরের বছরের রাজস্বের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।

”এই টার্গেটের বোঝা থাকার কারণে অনেক সময় ইনোভেটিভ আইডিয়া ও রিফর্মের বিষয়ে চিন্তা করার সুযোগ থাকে না,” বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, চলতি বাজেটে শতভাগ লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে করার শর্তে করপোরেট করে বেশ কিছু ছাড় ঘোষণা করা হলেও ব্যবসায়ীরা এই সুযোগ নিতে পারেননি।

তিনি বলেন, বড় ব্যবসায়ীরাই লেনদেনে নগদ টাকাকে প্রাধান্য দিলে ক্যাশলেস সোসাইটি গড়ে তুলা কঠিন হবে।

সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান, অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে কর-জিডিপির অনুপাত বাংলাদেশে সর্বনিম্ন। এর ফলে জিডিপির তুলনায় সরকারি ব্যয়ের হারেও বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। শতভাগ ই ফাইলিং নিশ্চিত করে করের হার জিডিপির পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত বা্ড়ানো সম্ভব বলে অনুষ্ঠানে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি আরও বলেন, শতভাগ ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে অন্যান্য পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলেও ২০৩০ সালের মধ্যে কর আহরণ ১৬৭ বিলিয়ন ডলারে উঠবে।

আর প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে না পারলে ওই সময়ে কর আহরণ হবে সর্বোচ্চ ৯০ বিলিয়ন ডলার। এ হিসাবে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার কর আহরণ প্রায় ৮৬% বাড়াতে সহায়তা করবে।

কর বাড়াতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের অভাব রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এখানে ২৫ পয়সা বিনিয়োগ করলে সরকারের আয় বাড়ে ১০০ টাকা। অন্যান্য দেশে একই পরিমাণে রাজস্ব আদায় বাড়াতে বাংলাদেশের তুলনায় তিন গুন বিনিয়োগ করতে হয়,” মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিনিয়োগের জন্য কর আহরণ খাতের তুলনায় লাভজনক কোন খাতই থাকতে পারে না।

;

হাতিয়ায় ৩০ কেজি হরিণের মাংস জব্দ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
হাতিয়ায় ৩০ কেজি হরিণের মাংস জব্দ

হাতিয়ায় ৩০ কেজি হরিণের মাংস জব্দ

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীর দ্বীপাঞ্চল উপজেলা হাতিয়া থেকে ৩০ কেজি হরিণের মাংস জব্দ করা হয়েছে। এ সময় হরিণের ১টি চামড়া, ১টি মাথা ও চারটি পা উদ্ধার করা হয়।  

রোববার (১৯ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার মেঘনা নদী সংলগ্ন ঢালচর গ্রামে অভিযান চালিয়ে কোস্ট গার্ড এ মাংস জব্দ করে। তবে এ সময় কাউকে আটক করতে পারেনি কোস্টগার্ড।  

এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন, কোস্ট গার্ড দক্ষিণ জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট বিএন এইচ এম এম হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার মেঘনা নদী সংলগ্ন ঢালচর গ্রামে অভিযান চালিয়ে ৩০ কেজি হরিণের মাংস উদ্ধার করা হয়েছে। তবে কোস্ট গার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে শিকারিরা পালিয়ে যায়। পরে জব্দকৃত মাংস হাতিয়া বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়।  

;