ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে পার্বত্য অঞ্চলের বন্যা



সেন্ট্রাল ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর

  • Font increase
  • Font Decrease

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে তিন পার্বত্য জেলায় বন্যা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে অনেক এলাকা। অনেক জায়গায় প্রবল বর্ষণ অব্যাহত আছে। এতে বাড়ছে স্থানীয় জলাশয়গুলোর পানি। এর মধ্যে শনিবার (১৩ জুলাই) পাহাড় ধসে মারা গেছেন ছয়জন। সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে পার্বত্যাঞ্চল। 

বান্দরবান

বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে বান্দরবানে। গত পাঁচ দিন ধরে জেলটি সারাদেশের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। ১৯৯৭ সালের পর বিগত ২২ বছরেও এমন বন্যা দেখেননি বলে দাবি স্থানীয়দের।

বন্যার পানিতে প্লাবিত এখন পর্যটনের শহর বান্দরবান পৌরসভার চারপাশ। শনিবার (১৩ জুলাই) দিনব্যাপী ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল। ফলে সাঙ্গু এবং মাতামুহুরী নদীর পানির সঙ্গে যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্লাবন।

Flood

বন্যা কবলিত রয়েছে ৩৩টি ইউনিয়ন এবং দু’টি পৌরসভায় পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি মানুষ। দুপুরের পর থেকে জেলা শহরে নতুন করে প্লাবিত হয় নোয়াপাড়া, জজকোর্ট এলাকা, ফায়ারসার্ভিস এলাকা, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউট এলাকা, বনবিভাগ এলাকা, ক্যাচিংঘাটা, হিলবার্ড এলাকা, হাফেজঘোনা, বালাঘাটা, কালাঘাটা, বাজার এলাকা ও সেনানিবাস এলাকা।

বান্দরবান-কেরানীহাট প্রধান সড়কের বাজালিয়া, দস্তিদারহাট এবং বরদুয়ারা তিনটি পয়েন্টে প্লাবিত সড়কে বন্যার পানি আরো কয়েকফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া জেলা শহরের বাসস্ট্যান্ড, কলেজরোড, সার্কিটহাউজ রোড, বালাঘাটা রোড, কালাঘাটা রোড, চিম্বুকরোড, কালেক্টরেড স্কুল রোড, আলফারুক ইনষ্টিটিউটরোড, পৌরসভার অভ্যন্তরিন সবগুলো সড়ক বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে বন্যা ও পাহাড় ধসে প্রাণহানি ঠেকাতে বান্দরবানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সাইক্লোন সেন্টারে খোলা হয়েছে ১৩১টি আশ্রয় কেন্দ্র। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এগুলোতে অবস্থান নিয়েছে শতশত পরিবার। বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে এখনো কোনো ত্রাণ দেওয়া হয়নি। শুধু আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে খিচুরি ও খাবার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।

Flood

বান্দরবান পৌরসভার মেয়র মো. ইসলাম বেবী বলেন, পৌর এলাকার নয়টি ওয়ার্ডের মানুষ বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বান্দরবান শহরটি বন্যার পানিতে ভাসবে। দূর্গত এলাকাগুলোতে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। নয়টি ওয়ার্ডের আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে খিচুরি ও খাবার পানি এবং শুকনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ।

জেলা প্রশাসক মো. দাউদুল ইসলাম বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করছে বান্দরবানে। দুর্যোগ মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে প্রশাসনের। পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে গুদামে। বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ায় আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যাও আরও পাঁচটি বাড়িয়ে ১৩১টি করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হবে। জেলা প্রশাসনে খোলা হয়েছে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম।

রাঙামাটি

টানা আট দিনের অব্যাহত বর্ষণের ফলে পার্বত্য জেলা রাঙামাটির বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। শনিবারের (১৩ জুলাই) এ ঘটনায় মারা গেছেন দুইজন। নিহতরা হলেন- অতুল বড়ুয়া ও সুজয় মং মারমা।

এ নিয়ে এক সপ্তাহে রাঙামাটির বিভিন্ন উপজেলায় মোট ছয় জনের মৃত্যু হলো।

কাপ্তাই হ্রদ ও কর্ণফূলী নদীর পানি বাড়ছে হু হু করে। তলিয়ে যাচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এরই মধ্যে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।

Flood

কাপ্তাই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফ আহম্মেদ রাসেল ও চন্দ্রঘোনা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আশরাফ উদ্দিন জানান, পুরো রাঙামাটিতে দুই শতাধিক অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র খুলেছে প্রশাসন। সব উপজেলায় অন্তত ১৫ হাজার মানুষ ভিটেমাটি ছেড়ে প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রাখা হয়েছে। বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে, কর্ণফুলী নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে উঠে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে রাঙামাটির সঙ্গে রাজস্থলী ও বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। কাপ্তাইয়ের ব্যঙছড়িতেও রাস্তার ওপর পাহাড় ধসে পড়ে কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

অপরদিকে রাঙামাটির কুতুকছড়ির খামারবাড়ি এলাকায় পাহাড় ধসে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। জেলার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর বর্তমানে বেহাল দশা। ইতোমধ্যেই এই রাঙামাটির সব সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে নোটিশ দিয়েছে সড়ক বিভাগ।

Flood

বর্ষণের ফলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বেড়ে অবনতি ঘটেছে বাঘাইছড়ি, লংগদু ও বরকল উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি। বাঘাইছড়িতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন অন্তত দেড় হাজার মানুষ। দুর্গত এলাকায় ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদ।

এদিকে নতুন করে দুর্ভোগে পড়েছেন রাঙামাটির বরকল উপজেলার নিন্মাঞ্চলের হাজারো মানুষ। গত দুইদিন ধরে অধিক হারে পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে আসতে থাকায় শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে।

ভুষনছড়া ইউনিয়নের অনেক রাস্তাঘাট ভেঙ্গে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে প্রাণ হারান ১২০ জন। পরের বছর মারা যান ১১ জন। এ বছর এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে দুই জনের।

Flood

এ ধরনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসনে প্রশাসনের কাছে সুপারিশ করে। কিন্তু আজও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন হয়নি।

খাগড়াছড়ি

বর্ষণ কিছুটা কমেছে খাগড়াছড়িতে। তবে চেঙ্গী, মাঈনী ও ফেনী নদীর পানি কমতে থাকায় বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে বহু স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়েভেছ, ঝুঁকিতে রয়েছে অসংখ্য স্থাপনা।

গত কয়েক দিনে দিঘীনালার মাঈনী, রামগড়ের ফেনী, পানছড়ি ও খাগড়ছড়ির চেঙ্গী নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। পানছড়ি উপজেলার দুধুকছড়া ফুট ব্রীজ, উপজেলার চেংগী ইউপি কার্যালয় নদীর গর্ভে বিলীন হতে বসেছে। বন্ধ হয়ে গেছে উপজেলার মুনিপুর-তারাবন সড়ক যোগাযোগ।

Flood

মাঈনী নদীর ভাঙ্গনে দিঘীনালার চোংড়াছড়ি, মেরুং, বোয়ালখালীর হাসিনশরপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। খাগড়ছড়িতে চেঙ্গী নদীর ভাঙনে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের রাবার কারখানা, পৌর বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়াও পাহাড়ের বিভিন্ন ছোট বড় ছড়া ও খালের ভাঙনও দেখা দিচ্ছে।

আরও পড়ুন: কাপ্তাইয়ে পাহাড় ধসে নিহত ২

আরও পড়ুন: দেশের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা

   

সুযোগ পেলেই ওরা সাপের মত ছোবল মারতে চায়: রাষ্ট্রপতি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বাধীনতা বিরোধীরা এখনো সক্রিয় বলে মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, সুযোগ পেলেই ওরা সাপের মত ছোবল মারতে চায়। একাত্তরের পরাজিত ঘাতক দালালদের বিরুদ্ধে ইস্পাত কঠিন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এজন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ৮ম জাতীয় সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ৭২'র সংবিধানে ফিরে যেতে সরকার ওয়াকিবহাল। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সংবিধানকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেভাবে চেয়েছিলেন সেটি করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। স্বাধীনতার মূল্যবোধকে ধরে রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর।

স্বাধীনতা বিরোধীরা মুক্তিযুদ্ধের সকল অর্জনকে ধ্বংস করতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা এখনো দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তারা আছে বলেই একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রয়োজন রয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের প্রতীকী ফাঁসি দিয়েছিল এই সংগঠন।

স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে পতাকা উঠলে আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, আমারা কি আর জীবিত থাকি প্রশ্ন রেখে রাষ্ট্রপতি বলেন, এখনো ওরা (স্বাধীনতা বিরোধী) স্লোগান দেয় পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার। স্বাধীনতা বিরোধীরা এখনো সক্রিয়। তাই একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রয়োজন রয়েছে। ওরা সুযোগ পেলেই সাপের মত ছোবল মারতে চায়।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ২০০১ সালে নির্বাচন পরবর্তী সংখ্যালঘু নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। তখন ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিশন গঠন করে সরকার। ওই কমিশনের আমি প্রধান ছিলাম। এই কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কৃপণতার সঙ্গে মাত্র ৫০ কপি প্রকাশ করেছিল। একটি সংগঠন সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিল। সংগঠনটির নাম বলতে চাই না। তাদের মূল এজেন্ডা ছিল আমার প্রতিবেদন। তারা বলেছিল, তারা ক্ষমতায় গেলে আমাকে ফাঁসি দেওয়া হবে। হয়তো তারা আমাকে ফাঁসি দিতে পারবে না। সেই সুযোগটা তারা পাবে না। কারণ আজকে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যেভাবে জেগে উঠেছে তারা আর আমাকে ফাঁসি দিতে পারবে না।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়ে তিনি আরও বলেন, নানা বাধা বিপত্তি পেরিয়ে নিজেদের অবস্থানে থেকেছেন। নিজেদের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়নি। এজন্য ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিকে অভিবাদন জানাই।

এ সম্মেলনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী দক্ষিণ এশীয় গণসম্মিলন সভাপতি বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও মানবাধিকার নেতা নির্মল রোজারিও, আদিবাসী মুক্তি মোর্চার সভাপতি অধ্যাপক যোগেন্দ্রনাথ সরেনসহ প্রমুখ।

;

নোয়াখালীতে পাওয়ার ট্রিলারের চাপায় শিশুর মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় পাওয়ার টিলারে চাপায় এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পরপরই ঘাতক চালক পলাতক রয়েছে।  

নিহত মো.রিফাত (৬) উপজেলার চর জুবলি ইউনিয়নের পূর্ব চরজব্বর গ্রামের রেজোয়ানুর রহমানের ছেলে। সে স্থানীয় পূর্ব চরজব্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

শনিবার (১৮ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এলাকার বাঁধের হাট বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেন সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাউছার আলম ভূঁইয়া।  

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাঁধের হাট এলাকা থেকে মাটি নিয়ে যাচ্ছিলো পাওয়ার টিলার । এ সময় রাস্তায় শিশুটি চলন্ত পাওয়ার টিলারে উঠতে চেষ্টা করে। ওই সময় পাওয়ার টিলারের নিচে শিশুটি চাপা পড়ে মাথা থেতলে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে।  

ওসি কাউছার আলম ভূঁইয়া আরও বলেন,নিহতের পরিবার এখনো কোনো অভিযোগ করেনি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পাওয়ার ট্রিলারটি জব্দ করে। পরবর্তীতে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

;

নির্বাচন ও বৌদ্ধ পূর্ণিমার ছুটিতে টানা ৫ দিন আমদানি-রফতানি বন্ধ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
লোকসভা নির্বাচন ও বৌদ্ধ পূর্নিমার ছুটিতে বেনাপোল বন্দর ৫ দিন বন্ধ

লোকসভা নির্বাচন ও বৌদ্ধ পূর্নিমার ছুটিতে বেনাপোল বন্দর ৫ দিন বন্ধ

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচন ও বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে আজ থেকে টানা ৫ দিন বন্ধের কবলে পড়েছে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। 

এদিকে আমদানি রফতানি বন্ধ থাকায় দুই পার বন্দরে আটকা পড়েছে সহস্রাধিক পণ্য বোঝায় ট্রাক।

বন্দর সূত্রে জানায়, ভারতের উত্তর ২৪ পরগনা ও পশ্চিমবঙ্গে আগামী ২০ মে অনুষ্ঠিত হবে লোকসভা নির্বাচন। নিরাপত্তার কারণে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা নির্বাচন অফিসার সাক্ষরিত চিঠিতে জানানো হয়েছে, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সব ধরনের আন্তর্জাতিক রুট সিল করা প্রয়োজন। এজন্য ১৭ মে সন্ধ্যা  টা থেকে ২০ মে ভোটগণণা শেষ না হওয়া পর্যন্ত শুধু মেডিকেল ভিসা ও ভারতীয় ভোটার পাসপোর্টধারীরা বেনাপোল-পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন ব্যবহার করতে পারবে। এ সময় বন্ধ থাকবে ট্যুরিস্ট ভিসায় যাতায়াত। এছাড়া বন্ধ রাখা হয়েছে ১৮ মে থেকে ২১ মে পর্যন্ত আমদানি-রফতানি বাণিজ্য এব্ং ২২ মে বৌদ্ধ পূর্ণিমার ছুটি।

এত আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকায় দুই বন্দরে আটকা পড়েছে সহস্রাধিক পণ্য বোঝায় ট্রাক। অন্যদিকে ঢুকতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন ট্যুরিস্ট, বিজনেস ও স্টুডেন্ট ভিসার পাসপোর্টধারীরা। তবে মেডিকেল ভিসার পাসপোর্টধারী ও ভারতীয় ভোটার- এমন নাগরিকদের যাতায়াতে কোন বাধা নেই।

পণ্য পরিবহনকারী ট্রাক চালক জমির উদ্দীন জানান, ৫ দিন বন্ধের কারণে বন্দরে আটকা পড়েছি। এতে তাদের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

বেনাপোল বন্দর আমদানি,রফতানি সমিতির সাধারণ সমবপাদক জিয়াউর রহমান জানান, ভারতে নির্বাচন ও বৌদ্ধ পূর্ণিমার ছুটিতে ৫দিন আমদানি-রফতানি বন্ধ রেখেছে ভারত সরকার। এতে তাদের অনেক পণ্যবাহী ট্রাক ওপারে আটকা পড়েছে।

বেনাপোল স্থলবন্দরের যাত্রী টার্মিনালের ইনচার্জ নাহিদুল ইসলাম নাহিদ জানান, ভারতীয় কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞায় ট্যুরিস্ট ভিসায় যাতাযাত বন্ধ আছে। তবে মেডিকেল ভিসা চালু আছে। আগামী ২১ মে থেকে সব ধরনের পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত স্বাভাবিক এবং ২৩ মে থেকে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য শুরু হবে।

;

আমে বাজার সয়লাব, কতটুকু নিরাপদ?



সোহেল মিয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চলছে মধুর মাস। জৈষ্ঠ মাসের আজ চারদিন। এরই মধ্যে বাজারে আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় ফল। দেশীয় ফলের পাশাপাশি রয়েছে বিদেশি ফলেরও সমাহার। তবে ক্রেতাদের চাহিদায় প্রথমেই রয়েছে দেশীয় ফলের কদর। আর এই কদর থাকায় একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী অপরিপক্ব ফলে ফরমালিন মিশিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

সরেজমিন রাজবাড়ীর বিভিন্ন উপজেলার বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ফলের দোকানেই বিদেশি ফলের পাশাপাশি সাজিয়ে রেখেছে দেশীয় ফল। দেশীয় আমের মধ্যে বাজার দখল করে নিয়েছে সাতক্ষীরা গোবিন্দভোগ। এ আমের পাশাপশি রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির আম। দেশীয় আমের সাথেই রয়েছে ভারত থেকে সংগ্রহ করা আম। যে আমগুলো রাজবাড়ীর বাজারে এসেছে আরো সপ্তাহ দুয়েক আগে।

এতো আগে বাজারে ভারতীয় আম আসায় ক্রেতাদের মনে প্রশ্ন উঠেছে- বাজারে সয়লাব আমগুলো কতটুকু নিরাপদ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিভিন্ন কর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তাদের ভাষ্য- যে কোন ফলই প্রথম দিকে বাজারে আসা ফল না কেনায় শ্রেয়। এতে অপরিপক্ব কিংবা ফরমালিন মিশ্রিত থাকার সম্ভাবনা থাকে অনেকটাই বেশি।

কথা হয় বালিয়াকান্দির মেছুয়া ঘাটার বাসিন্দা নজরুল মোল্লার সাথে। তিনি জানান, পরিবারের জন্য ফল কিনতে দোকানে এসেছিলেন। দোকানে  আম দেখে বেশ লোভ হয় তার। দোকানদারের কথার ওপর ভরসা করে তিনি চড়া দামে কিনে নেন সাতক্ষীরার আম। বাড়ীতে নিয়ে কেটে দেখেন আমের ভিতরের বীজটা অপরিপক্ব। আমের স্বাদ পানসে। কোন মিষ্টি নেই।  তখন তার মনে খটকা লাগে- আমের মধ্যে বীজটা অপরিপক্ব হলে আমের বাইরের দৃশ্য এতো চাকচিক্য কেন?

নজরুল মোল্লার এই প্রশ্নের উত্তর জানতে কথা বলি এক ফলের দোকানদারের সাথে। নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে তিনি বার্তা২৪.কমকে জানান, তারা আম সংগ্রহ করেন যশোর ও সাতক্ষীরা থেকে। পাইকারির আড়ৎ থেকে তারা যেভাবে সংগ্রহ করেন সেভাবেই সরাসরি ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন। যদি কিছু মিশিয়ে আমগুলো রঙিন করে তাহলে এর সকল দায়ভার আড়তদারদের।

এই সময়ে বাজারে থাকা আমগুলো কতটুকু নিরাপদ- এমন প্রশ্ন করলে রাজবাড়ী জেলার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের সহকারি পরিচালক কাজী রকিবুল হাসান বার্তা২৪.কমকে বলেন, যে কোন ফলই প্রথম দিকে বাজারে আসলে সেটা না কেনায় ভালো। কারণ প্রথম দিকে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অধিক লাভের আশায় অপরিপক্ব ফল বাজারে আমদানি করে। কিছু দিন পর কিনলে সেটাতে ঝুঁকি কম থাকে। এ বিষয়ে আপনার দপ্তরের ভূমিকা কি- এমন প্রশ্ন করলে এই কর্মকর্তা জানান, তারা নিয়মিত ক্রেতার সচেতন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

ভোক্তা অধিকারের পর যোগাযোগ করা হয় কৃষি বিপণন দপ্তরের সাথে। রাজবাড়ীর কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো: আকমল হোসেন বার্তা২৪.কমকে জানান, রাজবাড়ীতে উল্লেখযোগ্য তেমন আম উৎপাদন হয় না। চাপাই এবং সাতক্ষীরার আমই রাজবাড়ীতে বেশি পাওয়া যায়। এখন বাজারে যে আম পাওয়া যাচ্ছে সেটা কতটুকু নিরাপদ? জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু আপনি নিরাপদের প্রশ্নটা তুললেন সেহেতু বিষয়টি দেখে বলতে হবে। আমরা দ্রুতই বিষয়টি জেলা প্রশাসকের মহোদয়ের সাথে কথা বলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে বাজারে গিয়ে যাচাই করবো। এ বিষয়ে কৃষি বিপণী আইন-২০১৮ বিধিমালা-২০২১ একটি শক্তিশালী আইন রয়েছে। এই আইনের ধারা আমরা বাস্তবায়ন করবো।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গোপালভোগ, বোম্বাই, গোলাপখাস, বৈশাখীসহ স্থানীয় জাতের আম বাজারজাতকরণ করার তারিখ নির্ধারণ করেছেন ৯ মে, গোবিন্দভোগ- ১১ মে, হিমসাগর- ২২ মে, ল্যাংড়া-২৯ মে এবং আম্রপালীর বাজারজাতকরণের তারিখ নির্ধারণ করেছেন ১০ জুন।

;