এরশাদবিহীন রংপুরে লাঙ্গলে অস্বস্তি



ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রংপুর
ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নেই। আছে তার প্রতিষ্ঠিত দল জাতীয় পার্টি (জাপা)। আছে দলীয় প্রতীক লাঙ্গল। কিন্তু তারপরও এরশাদের দুর্গখ্যাত রংপুরে এখন লাঙ্গল যেন অস্বস্তির প্রতীক। রংপুর-৩ আসনে উপ-নির্বাচনকে ঘিরে দিন দিন গৃহদাহে পোড়া এরশাদবিহীন জাতীয় পার্টির প্রতি সাধারণ মানুষের আবেগ, ভালোবাসা ও আগ্রহ কমছে। এতে চরম বিপর্যয়ের সম্মুখে দলটি।

দীর্ঘ ২৮ বছর রংপুরে একচেটিয়া জনসমর্থনে জাতীয় পার্টি ও এরশাদ সর্বোচ্চ মূল্যায়ন পেয়েছে। কিন্তু তার মৃত্যুতে শূন্য এ আসনে এবার ছাড় না দিতে নড়ে চড়ে বসেছেন অন্য দলের নেতারা। মনোনয়ন বঞ্চিত নিজ দলের তৃণমূলের নেতারাও বেশ চটে আছেন।

আর বরাবরের মতো এবারো কাউন্টার অ্যাটাক দিতে প্রস্তুত এরশাদের অভিমানী ভাতিজা সাবেক সংসদ সদস্য আসিফ শাহরিয়ার। এই পরিস্থিতিতে রওশনের ছেলে রাহগীর আল মাহি সাদের কাঁধে লাঙ্গল তুলে দিয়ে বিপাকে আছেন জাপার কেন্দ্রীয় নেতারা। যদিও মহাজোটের উপর ভর করে অচেনা সাদের জয় নিশ্চিত করতে মরিয়া তারা।

এদিকে সাদ এরশাদের পক্ষে রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টি নীরব থাকলেও মাঠে সরব রয়েছে জেলা কমিটির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ থেকে শুরু করে জমা দেয়া ও যাচাই-বাছাইয়ে হাতে গোনা নেতাদের দেখা গেছে। তাদের দাবি শেষ পর্যন্ত সাদের পক্ষে মাঠে নামবে সবাই। আর নৌকার প্রার্থী সরে দাঁড়ালে সাদ এরশাদের জয় নিশ্চিত।

অন্যদিকে জাপার অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সরানোর প্রচেষ্টায় লাভ খুঁজছে বিএনপি। তাই তাদের তৃণমূলেও চলছে এক হয়ে ভোটযুদ্ধে জয় ছিনিয়ে আনার পরিকল্পনা। এই তিন দলের প্রত্যাশা পূরণ না হলে হিসাব নিকাশ বদলে দিতে পারে আসিফ শাহরিয়ারের ভোট ব্যাংক। কারণ দিন যতই যাচ্ছে ততই লাঙ্গলে অস্বস্তি বাড়ছে সাধারণ ভোটারসহ সচেতন মহলে।

রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী আব্দুর রাজ্জাক বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘দু-একদিনের মধ্যেই সব বিভেদ কেটে যাবে। সবাই একসঙ্গে সাদ এরশাদের পক্ষে লাঙ্গলের বিজয় নিশ্চিত করতে মাঠে থাকবে। অনেকেই তো মনোনয়ন চেয়েছেন, দলতো সবাইকে চূড়ান্ত করতে পারে না। সবকিছু বিবেচনা করেই দলের চেয়ারম্যান ও মহাসচিব সাদ এরশাদকে মনোনয়ন দিয়েছেন।’

এদিকে মনোনয়ন বঞ্চিত রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব এসএম ইয়াসির বলেন, ‘আমাদের মহানগর কমিটির সভাপতি ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার দেয়া সিদ্ধান্তের সঙ্গে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সবাই আমরা সহমত দিয়েছি। এখানে স্থানীয় প্রার্থী ছাড়া বহিরাগত কারো পক্ষে কাজ করবে না দলের হাজার হাজার নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা।’

সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির এক নেতা নাম না প্রকাশের শর্তে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘মানুষ তো এরশাদ স্যারকে ভালোবেসে ভোট দিতেন। তার প্রতি সব দলের মতের মানুষের আবেগ ভালোবাসা ছিল। সেই ভালোবাসাতো সাদ এরশাদের প্রতি নেই। তবে স্থানীয় কাউকে প্রার্থী করা হলে আমরা লাঙ্গলের হয়ে কাজ করতে স্বস্তি পেতাম। এখন লাঙ্গল আমাদের গলার কাটা। কারণ এই দলে তৃণমূলের নেতাদের কোনো মূল্যায়ন নেই।’

জাতীয় পার্টির এমন কাদা ছোড়াছুড়িতে আওয়ামী লীগ নতুবা বিএনপির প্রার্থী লাভবান হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় বিশ্লেষকরা। প্রবীণ রাজনীতিক নজরুল ইসলাম কালু বলেন, ‘পরনির্ভরশীল রাজনীতি ও তৃণমূল নেতাদের মূল্যায়নে পিছিয়ে পড়া জাতীয় পার্টির জন্য এই নির্বাচন বড় চ্যালেঞ্জের। সাদ এরশাদকে আওয়ামী লীগ সমর্থন দিলেও ভোটাররা যদি কেন্দ্র বিমুখ হন, তবে এরশাদবিহীন জাপার নতুন ইতিহাস রচিত হবে। এতে লাভের বোঝা হয় বিএনপির ঘরে যাবে, নয়তো এরশাদের ভাতিজা আসিফ শাহরিয়ার জিতবে।’

উল্লেখ্য, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শূন্য ঘোষিত রংপুর-৩ আসনে উপ-নির্বাচনের জন্য গত ১ সেপ্টেম্বর তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, এই নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া যাবে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, তা বাছাই হবে ১১ সেপ্টেম্বর, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৬ সেপ্টেম্বর। তার ১৮ দিন পর ৫ অক্টোবর হবে ভোটগ্রহণ।

রংপুর সদর উপজেলা ও সিটি করপোরেশন নিয়ে গঠিত এ আসনের মোট ভোটার রয়েছে ৪ লাখ ৪২ হাজার ৭২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ২১ হাজার ৩১০ জন এবং ২ লাখ ২০ হাজার ৭৬২ জন নারী ভোটার। ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে ইভিএমে ভোট অনুষ্ঠিত হয়।

সেই ভোটে ১ লাখ ৪২ হাজার ৯২৬ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী রিটা রহমান পেয়েছিলেন ৫৩ হাজার ৮৯ ভোট। এবারো ইভিএমে ভোট হবে। এবারো ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন রিটা রহমান।

   

মিঠাপুকুরে জাল ভোট দিতে গিয়ে আটক ২



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরের মিঠাপুকুরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জাল ভোট দেয়ার সময় হাতেনাতে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২১ মে) দুপুরে ১২টায় মিঠাপুকুর উপজেলার শঠিবাড়ি মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে হেলিকপ্টার প্রতীকে জাল ভোট দেয়ার সময় আটক করে পুলিশ।
জানা যায়, আটককৃতরা হলেন- রুমান মিয়া (২৭) উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের এমদাদ মিয়ার পুত্র ও একই গ্রামের সুলতান মিয়ার পুত্র রাশেদ মিয়া (২৮)।

এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, জাল ভোট দেয়ার সময় দুইজনকে শঠিবাড়ি মহাবিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, মিঠাপুকুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হেলিকপ্টার প্রতীক নিয়ে উপজেলা আওয়ামী যুব লীগের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান কামরু ও মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন মন্ডল মাওলা লড়ছেন। একই সঙ্গে সাবেক এমপি শাহ্ আলম ফকির এর পুত্র আনারস প্রতীক নিয়ে ইঞ্জিনিয়ার শা্হ সাদমান ইশরাক হোসেন। ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দুজনই সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আ. হালিম মন্ডল (উড়োজাহাজ প্রতীক) নিয়ে ও বাবু নিরঞ্জন মহন্ত (তালা প্রতীক) নিয়ে। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শামীমা আক্তার জেসমিন ( কলস মার্কা)। অপর দিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন প্রজাপতি প্রতীক নিয়ে দেলোয়ারা আফরোজ।

মিঠাপুকুর উপজেলায় সর্বমোট ভোটার সংখ‍্যা ৪৪৬৩৯৬জন। মোট পুরুষ ভোটার সংখ্যা ২২২১৪৭ জন, মহিলা ভোটার ২২৪২৪৫জন, তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ০৪ জন।

;

জামালপুরে ভোট কেন্দ্রে ছবি তুলতে সাংবাদিকদের এসিল্যান্ডের বাধা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, জামালপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

জামালপুরের বকশিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একটি ভোট কেন্দ্রে সাংবাদিকদের ভিডিও ধারণ ও ছবি তুলতে বাধা এবং অসদাচরণ করার অভিযোগ উঠেছে এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (২১ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বকশিগঞ্জের নিলাখিয়া ইউনিয়নের নিলাখিয়া পাবলিক কলেজ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। পরে সাংবাদিকেরা বিষয়টি নিয়ে এসিল্যান্ডের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা না বলে তার সরকারি গাড়িতে উঠে চলে যান।

জানা গেছে, সকালে ওই ভোট কেন্দ্রের একটি কক্ষে ইভিএমে প্রতীক না আসার অভিযোগ তোলেন ভোটাররা। বিষয়টি নিয়ে জানতে গেলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসমা-উল হুসনা এনটিভি ও মাইটিভির জামালপুর জেলা প্রতিনিধিদের ছবি-ভিডিও করতে বাধা দেন।

এ সময় তাদের সঙ্গে অসদাচারণসহ ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন।

এরপর উপস্থিত সাংবাদিকেরা নিচে নেমে সিনিয়র সাংবাদিকদের জানান। সেখানে থাকা ১৫-২০ জন সাংবাদিক এসিল্যান্ডের সাথে কথা বলার জন্য আধাঘণ্টা অপেক্ষা করেন। পরে এসিল্যান্ড দোতলা ভবন থেকে নিচে নেমে এলে ঘটনার কারণ জানতে চান উপস্থিত সাংবাদিকেরা। কিন্তু এসিল্যান্ড কোনো উত্তর না দিয়ে তড়িঘড়ি করে পুলিশ বেষ্টনীর মধ্যে দিয়ে চলে যান।

এবিষয়ে এনটিভির জেলা প্রতিনিধি আসমাউল আসিফ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, এসিল্যান্ড হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে বলতে থাকে সাংবাদিকরা কোন ছবি ফুটেজ তুলতে পারবে না। তিনি ভোট কেন্দ্রের বাইরে থেকে ছবি তুলতে ও ফুটেজ নিতে বলেন। তখন আমি বলি সাংবাদিকরা কোথায় ফুটেজ নিতে পারবে, আর কোথায় ফুটেজ নিতে পারবে না সেটা আমরা জানি।

এসময় এসিল্যান্ড উত্তেজিত হয়ে আমাদের কেন্দ্র থেকে বের হয়ে যেতে বলেন এবং আইন প্রয়োগ করার হুমকি দেন।

এ বিষয়ে বকশীগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসমাউল-উল-হুসনা সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নাই।

এদিকে এ নিয়ে জানার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শীতেষ চন্দ্র সরকারের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শানিয়াজ্জামান তালুকদার বার্তা২৪.কম-কে বলেন, গোপন বুথের ভিডিও ও ছবি তোলা যাবে না। সাংবাদিকদের কাজে বাধা দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নাই। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখার কথা জানান তিনি।

;

হাসপাতাল নয়, যেন কোনো বাজার!



রাকিব হাসান-গুলশান জাহান সারিকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীতে সরকারি মালিকানাধীন যে কয়েকটি হাসপাতাল রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম শের-ই-বাংলা নগরে অবস্থিত শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। প্রতিদিন দেশের নানা প্রান্ত থেকে হাজার হাজার রোগী চিকিৎসার জন্যে আসেন এই হাসপাতালে।

১৯৬৩ সালে ৮৭৫টি বেড নিয়ে প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালটির ভালো চিকিৎসার জন্যে যেমন অনেক সুনাম রয়েছে, তেমনি হাসপাতালটির দায়িত্বে থাকা আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠানের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীদের নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার জন্যে দিন দিন সাধারণ মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

হাসপাতালের সামনে অবৈধ দোকানের সারি

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান সড়ক থেকে হাসপাতালে প্রবেশ করতে গিয়ে ভাসমান দোকানের কারণে অ্যাম্বুলেন্সসহ রোগী নিয়ে আসা অন্য গাড়িগুলোকে বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। দুপাশে সারিবদ্ধভাবে চায়ের দোকান, ফলমূল, প্লাস্টিকের পণ্যসহ নানা রকমের দোকানের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন দোকানিরা। পাশেই দাঁড়িয়ে সিগারেটের ধোঁয়া ছড়াচ্ছেন কিশোর থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধরা। দেখে মনে হবে যেন এটি হাসপাতাল নায়, কোনো বাজার!

এছাড়াও হাসপাতালের অভ্যন্তরে বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, ওয়ার্ডের ভেতর ভাসমান হকারদের উৎপাত। চা, কফি, বিস্কুট থেকে শুরু করে কাপড়ের ব্যাগ, এমনকি ভিক্ষুকরাও প্রবেশ করছে ভিক্ষা করতে। এতে রোগীরা যেমন নিজেদের মালামালের সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত, তেমনি দায়িত্ব পালন করা জুনিয়র চিকিৎসকরাও বিব্রতবোধ করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জুনিয়র চিকিৎসক বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা যারা এখানে চিকিৎসক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি অনেক সময় নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যাই। যে কেউ চাইলেই ওয়ার্ডে চলে আসে। এতে রোগী ও চিকিৎসকদের মালামাল হারানোর একটা ভয় থাকে। এদের আচার-আচরণও তেমন ভালো না। যতটা জানি স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় তারা হাসপাতালের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে।

দোকানের কারণে অ্যাম্বুলেন্সসহ রোগী নিয়ে আসা গাড়িগুলো বিড়ম্বনার শিকার

চাঁদপুর থেকে মায়ের চিকিৎসা করাতে আসা সুমন বার্তা২৪.কমকে বলেন, মা ব্রেন স্ট্রোক করছেন। প্রথমে বুঝিনি। তারপর মাকে নিয়ে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলাম, সেখান থেকে ঢাকার নিউরো সাইন্স হাসপাতালে। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বেড খালি না থাকার অজুহাতে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠায়। এখানে এসেও পদে পদে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। কাউকে কোন প্রশ্ন করলে উত্তর দিতে চায় না। প্রথমেই গেটের দুই পাশে দোকান ও মানুষের ভিড়ে অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করতে নানা রকমের সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে। তারপর শুরু হলো ট্রলি আর হুইল চেয়ার নিয়ে টানাটানি। দুইশত টাকার নিচে খুশি না স্ট্রেচারকর্মীরা।

হাসপাতালের অভ্যন্তরে ভাসমান দোকান ও হকারদের উৎপাতের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ডা. মো. শফিউর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, হাসপাতালের অভ্যন্তরে ভাসমান হকার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। তবে এটাও সত্যি যে আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। অনেক কিছু আমাদের নজরে আসে না। লোকবলের অভাব। তবে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।

হাসপাতালের সামনের সড়কে ভাসমান দোকানের সারি

সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা মাঝেমধ্যে আমাদের তথ্য দিয়ে সহায়তা করলে, আমরা যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে আরও উদ্যোগী হবো।

অভিযোগ আছে আউটসোর্সিংয়ের কর্মচারী ও আনসার সদস্যদের যোগসাজশ এবং রাজনৈতিক দলের নেতাদের যোগসাজশে হকার উচ্ছেদ সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিটি দোকান থেকে কমপক্ষে প্রতিদিন ১০০ থেকে ৩০০ টাকা চাঁদা তোলা হয়। যার একটা অংশ স্থানীয় কতিপয় রাজনৈতিক নেতাদের পকেটে যায়। এছাড়া হাসপাতালের অভ্যন্তরে ভাসমান হকার প্রবেশেও গুণতে হয় ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কোন হকার মুখ খুলতে রাজি হয়নি।

;

পরিবহনে চাঁদাবাজি, মূলহোতাসহ গ্রেফতার ১৩



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

আন্তঃজেলা ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লরী ও সিএনজিসহ বিভিন্ন পরিবহন হতে অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলনকালে চাঁদাবাজ চক্রের অন্যতম মূলহোতা ইউসুফ ও সাব্বিরসহ মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১০)। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও কোতয়ালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

মঙ্গলবার (২১ মে) র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১০ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সহকারী পুলিশ সুপার এম. জে. সোহেল এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, যাত্রাবাড়ী এলাকার চাঁদাবাজ চক্রের অন্যতম মূলহোতা মো. ইউসুফ গাজী (২৮), মোহাম্মদ ইউসুফ (৫৭), মো. পিন্টু মিয়া (৪০), মো. ডালিম (১৯), মো. পাভেল (১৯) ও মোহাম্মদ আলী (২৫।

এসময় তাদের নিকট থেকে আদায়কৃত চাঁদা নগদ ৮ হাজার ৪১০ টাকা ও ৬টি কাঠের লাঠি উদ্ধার করা হয়।

এছাড়া বাবুবাজার এলাকায় অপর একটি অভিযান পরিচালনা করে চাঁদাবাজ চক্র সাব্বির গ্রপের অন্যতম মূলহোতা মো. সাব্বির (৬০), নাজির হোসেন (৪৮), মো. কামাল উদ্দিন (৫০), মো. বিল্লাল হোসেন (৪৫), মো. বিল্লাল হোসেন (২৮), মো. নাজির উদ্দিন ভূঁইয়া (৪৪), এবং মো. রনি হোসেন (৪০) কে গ্রেফতার করা হয়।
এসময় তাদের নিকট থেকে আদায়কৃত চাঁদা নগদ ৭ হাজার ৩৫০ টাকা, ৬টি লাঠি ও ১টি প্লাস্টিকের পাইপ উদ্ধার করা হয়।


র‍্যাবের সহকারী পুলিশ সুপার এম. জে. সোহেল বলেন, অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলনকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও কোতয়ালী এলাকা হতে চাঁদাবাজ চক্রের অন্যতম মূলহোতা ইউসুফ ও সাব্বিরসহ মোট ১৩ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

তিনি বলেন, গতকাল ২০ মে র‌্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানাধীন দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে আন্তঃজেলা ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লরী ও সিএনজিসহ বিভিন্ন পরিবহন হতে অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলনকালে চাঁদাবাজ চক্রের অন্যতম মূলহোতা ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

এছাড়া গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার কোতয়ালী থানাধীন বাবুবাজার এলাকায় অপর একটি অভিযান পরিচালনা করে আন্তঃজেলা ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লরী ও সিএনজিসহ বিভিন্ন পরিবহন হতে অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলনকালে চাঁদাবাজ চক্র সাব্বির গ্রপের অন্যতম মূলহোতা মো. সাব্বিরসহ ৭ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা বেশ কিছুদিন যাবৎ রাজধানীর কোতয়ালী, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা ও দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় আন্তঃজেলা ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লরী ও সিএনজিসহ বিভিন্ন পরিবহনের ড্রাইভার ও হেলপারদের সাথে অশোভন আচরণের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে অবৈধভাবে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে আসছিল।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।

;