চলচ্চিত্র প্রযোজক ও ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের মালিকানাধীন গুলশান-২-এর ৫৭ নম্বর সড়কের ১১/এ বাড়িটির দুটি ফ্ল্যাটে ও ছাদে অভিযান পরিচালনা করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
অভিযানে বাড়িটির ছাদে একটি মিনি বার ও ক্যাসিনোর সন্ধান পাওয়া যায়। বাড়িটি থেকে বিপুল পরিমাণে বিদেশি নামি-দামী ব্র্যান্ডের মদ, গাঁজা, সীসার উপকরণ এবং ক্যাসিনো সামগ্রী জব্দ করা হয়। অভিযানের সময় নবীন ও পারভেজ নামে দুই কেয়ারটেকারকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
তবে ঘণ্টাব্যাপী এ অভিযান শেষে অবৈধ মিনি বার ও ক্যাসিনোর মালিক বা মূল হোতা কে তা জানাতে পারেননি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। এর সঙ্গে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের পরিবারের কেউ সংশ্লিষ্ট কিনা তাও নিশ্চিত করতে পারেননি তারা।
আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বাড়িতে অভিযান শেষে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ ফজলুর রহমান সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। রোববার (২৭ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টায় বাড়িটিতে অভিযান শুরু করেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বাড়িটিতে দুটি ভবন। একটি ভবনের চার তলার একটি ফ্ল্যাটে মদের গুদামের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেখান থেকে প্রচুর পরিমাণে বিদেশি মদ ও সীসা খাওয়ার সামগ্রী জব্দ করা হয়েছে। আরেক ভবনের চারতলা থেকে ১০ বোতল মদ এবং ভবনের ছাদে একটি মিনি বারের সন্ধান পাওয়া যায়। সেখানে সীসা সেবনসহ ক্যাসিনো খেলা হতো। এসব ফ্ল্যাট থেকে প্রচুর পরিমাণে বিদেশি মদ জব্দ হয়েছে, সেগুলো গণনা করা হচ্ছে। গণনা শেষে সঠিক সংখ্যা জানানো হবে।
তিনি আরও বলেন, মিনি মদের বারটির কোনো অনুমোদন ছিল না। এছাড়া এই বাড়িতে মদ সংরক্ষণ ও কেনাবেচারও কোনো অনুমোদন নেই। অভিযানে দুই জনকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী তারা মদ কেনাবেচা করতো। তবে বিস্তারিত জানার জন্য তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এসব অবৈধ মদ ও ক্যাসিনো খেলার সঙ্গে কারা সংশ্লিষ্ট এমন প্রশ্নের জবাবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা বলেন, আমাদের জানা মতে আজিজ মোহাম্মদ ভাই দীর্ঘ দিন ধরে বিদেশে থাকেন। তবে অভিযান চলা ফ্ল্যাটগুলোর মধ্যে একটিতে তার ভাতিজা ওমর মোহাম্মদ ভাই থাকতেন। তবে তিনি অভিযানের আগেই বাসা থেকে পালিয়ে যান। আমরা তাকে আটকের চেষ্টা করছি। তবে এর সঙ্গে আর কারা সংশ্লিষ্ট তা বের করার জন্য তদন্ত করছি।
তিনি বলেন, আমরা খোঁজখবর নিয়ে দেখছি এই অবৈধ ক্যাসিনো ও মিনি বারের সঙ্গে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা। যদি থেকে থাকে অবশ্যই আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। তাদের আত্মীয়-স্বজনের যদি সংশ্লিষ্টতা থাকে তাহলেও আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
বাড়িটিতে এসব কার্যক্রম কতদিন ধরে চলছে এমন প্রশ্নের জবাবে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি। তবে শুধুমাত্র সেবনের জন্য এখানে মদ সংগ্রহ করা হয়েছে—বিষয়টি এমন নয়। এত মদ সেবনের জন্য কেউ সংরক্ষণ করেন না।
আরও পড়ুন:
‘খেলা হতো ডলারে, আসতেন হাই-প্রোফাইল লোকজন’
আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বাসায় ক্যাসিনো-মিনি বার