নতুন সড়ক আইন
সফটওয়্যার আপডেট না হওয়ায় মামলা দিতে বিলম্ব
সফটওয়্যার আপডেট না হওয়ায় নতুন সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাস্তবায়নে যেতে পারছে না ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশ। ফলে রাস্তায় চালক বা গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দিতে বিলম্ব হচ্ছে। এতে ভোগান্তি বাড়ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
জানা গেছে, সফটওয়্যারে প্রয়োজনীয় তথ্য এখনও সংযুক্ত না হওয়ায় নতুন আইন বাস্তবায়নে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। তবে আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে পুরনো কেস স্লিপের মাধ্যমে মামলা (কেস) দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। এর আগে চালক ও যাত্রীদের মাঝে নতুন আইন সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াবে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ফলে ব্যস্ত সময় কাটছে ডিএমপি সংশ্লিষ্টদের।
আরও জানা গেছে, আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাজধানীর ট্রাফিক সার্জেন্টরা ডিজিটাল পোস মেশিন ব্যবহার করেন। যেটা চালক ও মোটরযানের বিভিন্ন কাগজপত্র হালনাগাদ যাচাই বাছাইয়ের কাজে ব্যবহৃত হয়। মেশিনটিতে সব চালকের লাইসেন্স ও গাড়ির বিবরণ এবং শাস্তির হালনাগাদ তথ্য দেওয়া থাকে। কিন্তু নতুন আইনের দণ্ডবিধি এখনও সফটওয়্যারে আপডেট হয়নি। আপডেট হতে কমপক্ষে এক মাস সময় লাগবে।
নতুন আইন অনুযায়ী মামলা দেয়ার সময় চালকের বা গাড়ির নথি রেখে কেস স্লিপ নিতে হবে। সেই স্লিপের জরিমানা ব্যাংকে পরিশোধ করতে হবে। পরে ট্রাফিক অফিসে গিয়ে জব্দ নথি ফেরত নিতে হবে। ফলে আবার গাড়ির মামলায় দীর্ঘসূত্রিতার কবলে পড়তে যাচ্ছেন চালকরা।
জানা গেছে, এরই মধ্যে ছাপাখানায় তৈরি করতে দেওয়া হয়েছে এ সংক্রান্ত স্লিপ। ছাপানোর পরেই অনুষ্ঠানিকভাবে নগরীতে প্রয়োগ শুরু হবে নতুন সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮।
ঢাকা মহনগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মোফিজউদ্দিন বলেন, নতুন আইন কার্যকর করার আগে নগরবাসী, চালক ও পথচারীদের দণ্ড ও জরিমানার বিষয়ে সচেতন করতে জনসংযোগ করা হবে।
এখনো নতুন আইনের আওতায় কোনও মামলা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে পুলিশ সার্জেন্ট নাহিদুর রহমান বলেন, আমরা দুই-তিন দিন শুধু চালকদের ভুল ধরিয়ে দিচ্ছি এবং তাদের সচেতন করছি। ফলে এখনই মামলা দিচ্ছি না। এতে চালকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে। আগে প্রতিদিন ঢাকা মহানগরীর মধ্যে রাস্তায় ৩০ হাজার মামলা দেওয়া হতো। এখন প্রতিদিন ৩০ হাজার মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। ফলে তারা আইন মানছে, সেটা ভয়ে হোক আর শ্রদ্ধা করে হোক।
তিনি আরও বলেন, আমরা সড়কে এখনও অনেক গাড়ি পাচ্ছি, যেগুলোর কাগজপত্র ঠিক আছে, কিন্তু ফিজিক্যালি আনফিট। সে ক্ষেত্রে আমরা প্রাথমিকভাবে সেগুলো ছেড়ে দিচ্ছি। কিন্তু দুই-তিন দিন পর খসড়া কাগজের মাধ্যমে মামলা দেওয়া শুরু হলে সেই সুযোগ আর দেওয়া হবে না।
আগে সিট বেল্ট না বাঁধলে ২৫০ টাকার মামলা দেওয়া হতো। যা নতুন আইনে তিন হাজার টাকা করা হয়েছে। উল্টো পথে আসার অপরাধে ২০০ টাকা পরিবর্তে জরিমানা তিন হাজার টাকা এবং মোটরসাইকেলর হাইড্রোলিক হর্ন বাজানোর অপরাধে ১০০ টাকা পরিবর্তে ১৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১ নভেম্বর থেকে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ কার্যকর হয়েছে।