পেট্রোল পাম্পে ধর্মঘট: ভোগান্তিতে পরিবহন মালিক-চালকরা
১৫ দফা দাবিতে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের সব পেট্রোল পাম্পে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু হয়েছে। ফলে রোববার (১ ডিসেম্বর) এই তিন বিভাগের জেলাগুলোতে সকাল থেকে জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করছে পাম্পগুলোর মালিক ও শ্রমিকরা।
এতে ভোগান্তিতে পড়েছে মোটর সাইকেল, বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনের মালিক শ্রমিকরা। জ্বালানি তেল না পেয়ে অনেককে পাম্প থেকে ফিরে যেতে দেখা গেছে। তেলের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে বাস-ট্রাক চলাচল।
আন্দোলনকারীরা বলছে, দীর্ঘদিন ধরে জ্বালানি ব্যবসায়ীদের যৌক্তিক অমীমাংসিত দাবি নিয়ে সংশ্লিষ্টরা তাল বাহানা করছেন। বারবার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন। এগুলো মেনে নিয়ে জ্বালানি ব্যবসা করা আদৌ সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে জ্বালানি ব্যবসায়ীরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছেন।
খুলনা বিভাগের ১০ জেলাসহ বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫ জেলায় চলছে না ট্যাংকলরির চাকা। একই সঙ্গে পেট্রোল পাম্পে তেল বিক্রি বন্ধ রয়েছে।
পূর্ব ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাজশাহী বিভাগেও ধর্মঘট পালন করছেন বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংক-লরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
পাম্প বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন যানবাহনের চালকরা। বিশেষ করে মোটরসাইকেল আরোহীদের অনেককে রাজশাহী নগরীর পাম্পগুলোতে এসে তেলের জন্য ধরনা দিতে দেখা যায়। তবে পাম্প শ্রমিকরা তাদের দাবি সম্বলিত পোস্টার ঝুলিয়ে রাখার পাশাপাশি তেল কিনতে আসা চালকদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন।
নগরীর কাজলা এলাকার মেসার্স ফিলিং স্টেশনের শ্রমিক সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল থেকে বহু মানুষ এসে ফিরে গেছেন। আমরা কর্মবিরতি পালন করছি। কোনো প্রকার তেল বিক্রি করা হচ্ছে না। তবে গতকাল (শনিবার) রাতে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনের লম্বা লাইনের তৈরি হয়েছিল। ব্যাপকভাবে সবাই তেল কিনে রেখেছে।’
ওই পাম্পে মোটরসাইকেলে তেল নিতে এসে দাঁড়িয়ে থাকা জাহিদ হাসান বলেন, ‘কয়েকদিন আগে শুনেছিলাম পাম্প বন্ধ থাকবে। তবে তা আর খেয়াল ছিল না। দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটির পর আজ অফিস। বাসা থেকে বেরিয়ে পাম্পে এসে শুনি তেল বিক্রি বন্ধ। অথচ আমাকে এখন যেতে হবে গোদাগাড়ী উপজেলায়। এখান থেকে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে।’
জ্বালানি তেল বিক্রির কমিশন ও ট্যাংকলরির ভাড়া বৃদ্ধিসহ ১৫ দফা দাবিতে শনিবার ভোর ৬ টা থেকে রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় জ্বালানি তেল পেট্রোল পাম্প মালিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করছে। এই বিভাগের ঠাকুরগাঁও জেলার ৫ উপজেলার ৩২টি পাম্পের জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
উল্লেখ্য, ট্র্যাংকলরীর ভাড়া বৃদ্ধি, জ্বালানি তেল বিক্রিতে ৭.৫ ভাগ কমিশন, প্রিমিয়ান পরিশোধ স্বাপেক্ষে ট্যাংকলরি শ্রমিকদের ৫ লাখ টাকা দুর্ঘটনা বীমা চালুসহ ১৫ দফা দাবি আদায়ে রোববার থেকে খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের সকল জেলায় অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে ট্যাংকলরি মালিক-শ্রমিক ও জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা।