আজও শীতে কাঁপছে সারা দেশ



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হাড় কাঁপানো শীতে কাঁপছে দেশ

হাড় কাঁপানো শীতে কাঁপছে দেশ

  • Font increase
  • Font Decrease

‘মাঘের শীতে বাঘ কাঁপে’ প্রবাদটি এবার বদলে হয়ে যেতে পারে। কারণ আজ কেবল ৬ পৌষ। এরই মধ্যে সারা দেশে জেঁকে বেসেছে শীত। পৌষ মাস যেন সঙ্গে করে নিয়ে এসেছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।

গত চার দিন ধরে দেশের কোথাও সূর্যের দেখা মেলেনি। কাঁপন ধরানো শীতের মাত্রা তুলনামূলক বেশি উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোয়। উত্তরের এ জেলাগুলোতে শীতের তীব্রতা এতটাই বেশি যে রাতের বেলায় আকাশ থেকে ঝরছে বৃষ্টির মতো কুয়াশা।

হেডলাইট ও ফগ লাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন

রাজধানীসহ দেশের মধ্যাঞ্চলেও রয়েছে শীতের তীব্রতা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘন কুয়াশার কারণে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে সতর্কতা জারি করা হয়। হাইওয়ে পুলিশের হেডকোয়ার্টার্সের অতিরিক্ত ডিআইজি তানভীর হায়দার চৌধুরীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ঘন কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা অনেকাংশে কমে আসছে। যার ফলে জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে সামনের পথচারী ও বিপরীত দিক থেকে আসা যানবাহন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় না ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।

এ অবস্থায়, মহাসড়কে চলাচলরত যানবাহনের চালকদের কুয়াশাচ্ছন্ন রাস্তায় ফগলাইট ব্যবহার ও গতিসীমা সীমিত রেখে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হল।

ঢাকায় ঘন কুয়াশা

ঘন কুয়াশা ও ঠাণ্ডা বাতাসে জনজীবন বিপর্যস্ত হয় পড়েছে। খড়কুটো জ্বালিয়ে অনেককে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন না। শহরেও মানুষের চলাচল অনেকটাই কমে গেছে। তবে শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছেন চরম বেকায়দায়। ঘন কুয়াশা আর উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে বয়ে আসা ঠাণ্ডা বাতাস শীতের তীব্রতাকে আরও বৃদ্ধি করেছে।

তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে

শনিবারও (২১ ডিসেম্বর) শীতের তীব্রতায় নাকাল পুরো দেশ। দমকা বাতাসের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে শীতের প্রকোপ। আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ফরিদপুরে ১০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে টেকনাফে ২৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ঘন কুয়াশার কারণে দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা ৫ ঘন্টা বন্ধ রাখা হয় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পুনরায় ফেরি চলাচল শুরু হয়। দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়।

শীতের তীব্রতায় রাস্তাঘাটে কমে গেছে মানুষের আনাগোনা

একই কারণে শিমুলিয়া-কাঠালবাড়ি নৌরুটের ফেরি চলাচলও প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা বন্ধ ছিলো। পরে শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ফেরি চলাচল শুরু হয়।

বিস্তারিত আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে:

ঢাকা:

ঘন কুয়াশার কারণে শনিবার ঢাকার হযরত শাহজালাল ও চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামা বন্ধ রাখা হয়েছে। এ দুটি বিমানবন্দরের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, আবহাওয়া অনুকূলে আসলে বিমান ওঠানামা স্বাভাবিক হবে।

ঘাসগুলো কুয়াশায় ভিজে আছে

চুয়াডাঙ্গা:

চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাপন বিপন্ন হয়ে পড়েছে।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক সামাদুল হক জানান, কিছুদিন পর চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা আরো নিচে নেমে আসতে পারে।

ভোর থেকে ঘন কুয়াশা আর দমকা হাওয়ায় রাস্তাঘাট এবং বাজারে মানুষের উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম। সকাল ১১টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা পাওয়া যায়নি।

এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে মাঠে লাগানো ধানের বীজতলা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ধারণা করছে কৃষি বিভাগ।

সরেজমিনে দেখা যায়, সাধারণ মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। এদিকে এলাকার মোড়ে মোড়ে মানুষ শীত থেকে বাঁচতে কাগজের টুকরো আর খড়কুটো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।

খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা

পঞ্চগড়:

হিমালয়ের হিম বাতাসের হিমেল হাওয়ার সঙ্গে শৈত্য প্রবাহ ও ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। ঘন কুয়াশার কারণে গত দিন ধরে সূর্যের দেখা নেই। ফলে নিম্ন আয়ের ও খেটে খাওয়া মানুষরা পড়েছে চরম বিপাকে।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) পাঁচটি উপজেলা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কনকনে শীতে বড় অসহায়ত্বে মাঝে জীবন যাপন করছে খেটে খাওয়া মানুষরা। অনেকেই খড়খুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, আজ সকালে পঞ্চগড়ে ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল থেকে শীতের তীব্রতা অনেক বেশি। হিমালয়ের হিমেল বাতাস ও ঘন কুয়াশার কারনে আজ শীতের তীব্রতা বেড়েছে।

এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৮ হাজার শীতবস্ত্র জেলার ৫টি উপজেলায় বিতরণ করা হয়েছে।

সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও দেখা নেই সূর্যের।

জয়পুরহাট:

গত চারদিন ধরে এ জেলার আকাশে সূর্যের দেখা মেলেনি। আজ ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবারও (২১ ডিসেম্বর) জেলার প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে লোকজনের আনাগোনা ছিল কম। ঠাণ্ডা জনিত সমস্যায় আজ সকালেও বেশ কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যা ছিলো বেশি।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকির হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, আজ জেলায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সময় গড়ানোর সঙ্গে সাঙ্গে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। শীতার্ত মানুষদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন উপজেলায়ও কম্বল পাঠানো হয়েছে।

কুড়িগ্রাম:

কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্য প্রবাহ। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) জেলায় ১২ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্র রেকর্ড করা হয়েছে।

সারা দেশের মতো এ জেলাতেও গত চারদিন ধরে নেই সূর্যের দেখা। রাতের শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন জেলার চর এলাকার মানুষ।

খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছেন চরম বেকায়দায়

খুলনা:

ঘন কুয়াশার কারণে খুলনা থেকে বিভিন্ন রুটের ট্রেনে শিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বেশির ভাগ ট্রেনই গড়ে তিন থেকে চার ঘণ্টা দেরি করে ছাড়ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন সহস্রাধিক যাত্রী।

চিত্রা এক্সপ্রেস, রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেন, পার্বতীপুরের রকেট এক্সপ্রেস ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহানন্দা এক্সপ্রেসও শিডিউল বিপর্যয়ের মুখে পড়ে।

ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের বিষয়ে খুলনা রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার আমিরুল আজাদ বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে যাত্রী নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে গতি কমিয়ে ট্রেন চালানো হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাতিল করা হচ্ছে ট্রেন যাত্রা। কুয়াশা কেটে গেলে শিডিউল বিপর্যয় অনেকটাই কমে আসবে বলে জানালেন তিনি।

শীতের কারণে কষ্ট পাচ্ছেন বৃদ্ধরা।

মেহেরপুর:

শনিবার সকালে মেহেরপুরে ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আজকে সকালেও সূর্যের দেখা নেই।

ঘন কুয়াশায় ঢেকে আছে গোটা জেলা। রোদ না থাকায় এবং উত্তরের ঝিরিঝিরি বাতাসে শীতের প্রকোপ বাড়ছে।

গাইবান্ধা:

গত চারদিন ধরে গোটা গাইবান্ধা জেলার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ও ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে। শীতের দাপটে সাধারণ মানুষের চেয়েও বেশি কাতর হয়ে পড়েছেন জেলার চরাঞ্চলসহ সাত উপজেলার ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষ।

শীতের তীব্রতায় বাড়ছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগের প্রকোপ। প্রতিদিন ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালগুলোয় ভিড় করছে মানুষ। এসব রোগে আক্রান্তদের মধ্যে শিশু আর বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-সহকারি পরিচালক মাসুদুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ঘন কুয়ার কারণে কৃষকের সবজি ক্ষেত, বোরো বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। এসব ফসল রক্ষায় কৃষকদের নানা পরামশ দেওয়া হচ্ছে।

   

মানিকগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনায় যুবক খুন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মানিকগঞ্জ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজনের আঘাতে হাবিনুর রহমান (২২) নামের এক যুবক খুন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার বাল্লা ইউনিয়নের পশ্চিম নাওডুবি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত যুবক বাল্লা ইউনিয়নের মাচাইন গ্রামের টুলু মিয়ার ছেলে।

থানা পুলিশ ও স্থানীয়রা বলেন, কয়েকমাস আগে মাচাইন মাজার শরীফের ওরশে বাস্তা ও নাওডুবি এলাকার কয়কজন যুবকর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। পরে মাজার কমিটির লোকজন ও স্থানীয়রা তাদের মধ্যে মিমাংসা করে দেয়।

সেই একই বিরোধকে কেন্দ্র করে দুপুরে কয়েকজন যুবক হাবিনুরের উপর হামলা করে কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ নূর-এ আলম জানান, হাবিনুর খুনের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে। এই ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ওসি।

;

উপজেলা নির্বাচন

সিরাজগঞ্জে প্রচারণায় বাধা-মারপিটের অভিযোগ দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিরাজগঞ্জ
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

৮ মে অনুষ্ঠিতব্য উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার চেয়ারম্যান পদে দুই প্রার্থী অপর এক প্রার্থীর বিরুদ্ধে তাদের প্রচার-প্রচারণায় বাধা ও কর্মী সমর্থকদের মারপিটের অভিযোগ করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে শহরের একটি অভিজাত হোটেলে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ ও কাজিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম অপর প্রার্থী কাজিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী খলিলুর রহমান সিরাজীর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, চেয়ারম্যান প্রার্থী খলিলুর রহমান সিরাজী ও তার বাহিনী প্রতিটি ইউনিয়নে ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’ গড়ে তুলেছেন। আমাদের কর্মী-সমর্থকেরা প্রচার-প্রচারণায় নামলেই তাদেরকে মারপিট করছে। পোস্টার ও লিফলেট কেড়ে নিচ্ছেন এবং ছিঁড়ে ফেলছেন। সেইসঙ্গে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য হুমকি প্রদান করছেন।

তারা জানান, ২৪ এপ্রিল প্রচারণা চালানোর সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমানকে মারপিট করা হয়েছে। এ নিয়ে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী থানায় চারটি জিডি করলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

৮ মে নির্বাচনের দিন খলিলুর রহমান প্রতিটি বুথে দুজন ক্যাডার রাখবেন। ভোটাররা চাপ বা টিপ দিয়ে ইভিএম ওপেন করে দিলে বুথের ভেতরে থাকা খলিলের কর্মীরা ভোট দিয়ে দেবেন বলে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

প্রতিনিয়ত হুমকি-ধামকির কারণে ভোট নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে এই দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত কোনো নির্দেশনাই খলিলুর রহমান সিরাজী মানছেন না। তিনি প্রভাব বিস্তার করে মানুষের ভোটের অধিকার হরণের চেষ্টা করছেন।

এ অবস্থায় সুষ্ঠু ভোট ও ভোটের পরিবেশ তৈরি করতে প্রধানমন্ত্রী, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিকস সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও কাজিপুর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান সিরাজী তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘উনারা ভোট পাবে না বলে ভোট প্রার্থনার জন্য ভোটারদের কাছে না গিয়ে শুধু অভিযোগ করে যাচ্ছেন’।

প্রসঙ্গত, উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে আগামী ৮ মে এই কাজিপুর উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ উপজেলায় মোট ৩ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

;

অবৈধ রেশন বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা নেতা খুন, নেপথ্যে আরসা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,কক্সবাজার
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রতিমাসে মাথাপিছু ১০ ডলার খাদ্য সহায়তা দেয় জাতিসংঘ। এই অর্থের বিনিময়ে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (ডব্লিউএফপি) পরিচালিত ই ভাউচার আউটলেট থেকে চাল, ডাল, তেল, সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী রেশন হিসেবে রোহিঙ্গারা সংগ্রহ করে।

নিজ দেশ মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে আসা মানুষগুলোর জীবনযাপনের অন্যতম এই অবলম্বন নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে চলছে অবৈধ রেশন বাণিজ্য।

প্রতিমাসের নির্ধারিত দিনে রেশন সংগ্রহে যাওয়া সাধারণ রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে নামমাত্র মূল্যে এসব রেশন ক্রয় করে অবৈধ এই বাণিজ্যে জড়িত অসাধু রোহিঙ্গারা, কেউ দিতে না চাইলে তার উপর শুরু হয় নির্যাতন।

সাধারণ রোহিঙ্গাদের অভিযোগ, কথিত সশস্ত্র সংগঠন আরকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি (আরসা) এর সাথে জড়িত। আরসার সমর্থক ও সদস্যরা নিজেদের তহবিল সংগ্রহের নামে এধরণের কর্মকাণ্ড চালায়।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাতে উখিয়ার ২ ডব্লিউ ক্যাম্প থেকে সৈয়দুল আমিন (৪৫) নামে এক রোহিঙ্গার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও রোহিঙ্গাদের সূত্র বলছে, এই হত্যাকান্ডের কারণ অবৈধ রেশন বাণিজ্য।

নিহত সৈয়দুল আমিন (৪৫), ২ ডব্লিউ ক্যাম্পের এ-১১ ব্লকের আশরাফ আলীর পুত্র এবং তিনি ঐ ব্লকে মাঝির (রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা) দায়িত্ব পালন করতেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শামীম হোসেন জানিয়েছেন, ২ ডব্লিউ ক্যাম্পের একটি মসজিদের সামনে পেয়ে সৈয়দুল আমিনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায় অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা। পরবর্তীতে হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, খবর পেয়ে উখিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহের সুরতহাল প্রস্তুত করে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ অভিযান, রোহিঙ্গাদের মাঝে জনপ্রিয়তা শূণ্যের কোটায় নেমে আসা, প্রতিপক্ষ আরএসওর প্রতিরোধসহ নানা কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছে আরসা।

মিয়ানমারের মংডু থেকে ২০১৭ সালে পালিয়ে আসার আগে থেকেই আরসার সাথে সখ্যতার কারণে সংগঠনটির হয়ে ২ ডব্লিউসহ কুতুপালংয়ের ৪টি ক্যাম্পে অবৈধ রেশন বাণিজ্য সামলানোর দায়িত্ব পান সৈয়দুল আমিন।

সম্প্রতি আরসার প্রভাব হ্রাস পাওয়ায় সংগঠনটিকে নির্ধারিত চাঁদার অংশ দেয়া বন্ধ করে নিজের মতো ব্যবসা করছিলেন তিনি। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে কৌশলে আরসার সদস্যরা এই হত্যাকান্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা ক্যাম্পের বাসিন্দাদের।

২ ডব্লিউ ক্যাম্পের এ ব্লকে বাস করা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোহিঙ্গা জানান (অডিও সংরক্ষিত), " সৈয়দুল আমিন একসময় আরসা করতেন, আরসাকে প্রতিমাসে রেশন ব্যবসা থেকে মোটা অংকের টাকা দিতেন। শুনেছি আরসার নেতারা ক্যাম্প ছেড়ে চলে যাওয়ায় তিনি তাদের কে টাকা দিতেন না, ফলে আরসা তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলো।"

অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী ব্লকের এক মাঝি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সৈয়দুল আমিন টাকা দেওয়া বন্ধ করায় ওই ক্যাম্পে নিজেদের পক্ষের লোকজনকে রেশন তোলার দায়িত্ব দেয় আরসা নেতা হালিম।

ঘটনার সময় রেশনের চাল নিয়ে হাতাহাতি হলে হালিমের লোকজন সৈয়দুল আমিনকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় বলে জানান তিনি।

ক্যাম্পের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্বরত ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ন (এপিবিএন) এর অধিনায়ক মোহাম্মদ ইকবাল (অতিরিক্ত ডিআইজি) এ প্রসঙ্গে বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর থেকে এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান চলছে। কেন এই হত্যাকাণ্ড ঘটলো সেই রহস্যও উদঘাটন করা হবে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে এপিবিএনের তৎপরতা অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।

;

মানিকগঞ্জে হাসপাতাল থেকে নারীসহ দালাল চক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মানিকগঞ্জ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মানিকগঞ্জে সরকারি জেলা সদর হাসপাতাল থেকে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে রোগী ভাগিয়ে নেওয়া চক্রের (দালাল) নারীসহ পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের ভেতরে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়ার পাঞ্জনখাড়া এলাকার মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে পাপ্পু মিয়া (৩৫), একই উপজেলার পশ্চিম সেওতা এলাকার হযরত আলীর ছেলে ফারুক হোসেন (৩৮), জাগীর শেঘশিমুল এলাকার মনির মিয়ার স্ত্রী শিলা আক্তার (২৫), সাটুরিয়া উপজেলার পশ্চিম চর-তিল্লী এলাকার জহির আলীর মেয়ে বিউটি বেগম (৫০) ও ঘিওর উপজেলার হিজুলিয়া এলাকার মৃত মনোয়ার হোসেনের স্ত্রী সেলিনা বেগম (৪২)।

পুলিশ জানান, মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সহজ-সরল রোগী ও স্বজনদের ফুসলিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতেন এবং বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক মালিকদের কাছ থেকে কশিমন পেতেন দালাল চক্রের সদস্যরা।

জেলা হাসপাতালের ভেতর থেকে রোগী ধরে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে গত সোমবার জেলা সদর হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মী দুলাল হোসেনের সাথে দালাল চক্রের সদস্যদের কথা কাটাকাটি হয়।

এর এক পর্যায়ে সদর হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মী দুলাল হোসেনকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করে এবং দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে জেলা সদর হাসপাতাল থেকে চলে যায় দালাল চক্রের ১০-১২জন সদস্য।

পরে এ ঘটনায় জেলা সদর হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মী দুলাল হোসেনে ১৫ জনের নাম উল্লেখ্যসহ আরো ৫ জনকে অজ্ঞাতনামা করে গতকাল বুধবার মানিকগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন।

মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিল হোসেন জানান, মামলার পর মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে অভিযান চালিযে দালাল চক্রের নারীসহ পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর আইনি প্রক্রিয়া শেষে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও তিনি জানান।

;