সিলেটের উন্নয়নে বরাদ্দ হাজার কোটি টাকা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
সিলেটে আলী আমজদের ঘড়ি/ ছবি: সংগৃহীত

সিলেটে আলী আমজদের ঘড়ি/ ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চারদিকে পাহাড়, টিলা আর চা বাগানে ঘেরা মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জেলা সিলেট। বিগত এক দশকে যখন সারা দেশে একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে, সেখানে সিলেটের উন্নয়নের গতি ‘তুলনামূলক’ ছিল তলানিতে। খানাখন্দে ভরা রাস্তাঘাট, যানজট, অনুন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, সামান্য বৃষ্টির পানিতে রাস্তাঘাট ডুবে জলাবদ্ধতায় নিত্য দুর্ভোগ পোহাতে হত সিলেটবাসীকে।

তাই সিলেট নগরীর অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। অবশেষে সিলেটবাসীর জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়নে মেগাপ্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। আগামী চার বছরের মধ্যে সিলেট নগরীর উন্নয়নে প্রায় ১২২৮ কোটি এক লাখ ৮৭ হাজার টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পটি গ্রহণ করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, যা বাস্তবায়ন করবে সিলেট সিটি কর্পোরেশন (এসসিসি)।

জানা গেছে, চলতি বছরের ৩০ মে ‘সিলেট সিটি কর্পোরেশনের জলাবদ্ধতা নিরসন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও অবকাঠামো নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্প প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। এরপর ৩ জুলাই প্রস্তাবনার ওপর মূল্যায়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার আলোকে ৯ জুলাই কার্যবিবরণী জারির পর ২২ অক্টোবর পুনর্গঠিত প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। এর আলোকে সেটি গত ২৪ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক নির্বাহী কমিটির সভায় অনুমোদিত হয়। ২০০১ সালে সিলেট সিটি কর্পোরেশন গঠিত হওয়ার পর থেকে এটিই হলো সবচেয়ে বড় উন্নয়ন বরাদ্দ।

প্রকল্পটি মূল্যায়ন করতে গিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য শামীমা নার্গিস বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়নের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারকরণ, উন্নয়ন কার্যক্রমের গুণগত মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যন্ত্রপাতি ও যানবাহন সরবরাহ করা হবে। এ বিবেচনায় প্রকল্পটি অনুমোদনযোগ্য।

জানা গেছে, অবস্থানগত কারণে সিলেট নগরীতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় রাস্তাঘাট অধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাহাড়ি ঢলে ছড়া ও ড্রেনগুলো মাটি দিয়ে ভরাট হয়ে যায়। তাই অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলে নগরীতে দেখা যায় জলাবদ্ধতা। তাই নগরীর সড়ক উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সড়ক ব্যবস্থাপনা ও এর কার্যক্রমের গুণগত মান বজায় রাখার জন্য নানা ধরনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন হবে।

প্রকল্পের আওতায় ২৬২ কিলোমিটার রাস্তা উন্নয়ন করা হবে। মহানগরীর পুকুর সংরক্ষণ ও ভূমিধস হতে নগরবাসীকে রক্ষার জন্য ৯ কিলোমিটার আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করা হবে। ফুটপাথ ব্যবহারে পথচারীদের আকৃষ্ট করার জন্য ফুটপাথের উপর ৬৫ কিলোমিটার পেভিং ব্লক স্থাপন করা হবে, সড়ক দুর্ঘটনা এড়ানো ও রাস্তার সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ২০ কিলোমিটার বৃক্ষ রোপণসহ রোড ডিভাইডার নির্মাণ করা হবে, নগরবাসীর নিরাপদ ও আরামদায়ক ভ্রমণের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য ৬টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হবে।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, নগরীর উন্নয়নে আরও ৩২৭ কিলোমিটার ড্রেন, ১৯৫ কিলোমিটার পাইপ লাইন স্থাপন, ১৪৫ কিলোমিটার সড়কবাতি স্থাপন, ৮ কিলোমিটার রিটেইনিং ওয়াল, ১ কিলোমিটার ভূমিধস রোধে সিসি ব্লক স্থাপন, ২০টি যন্ত্রপাতি ও ৩৬টি যানবাহন ক্রয় করা হবে।

প্রকল্পটির বছরভিত্তিক ব্যয় বিভাজন তালিকা থেকে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ব্যয় করা হবে ২৬৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা, ২০২০-২১ অর্থবছরে ব্যয় হবে ২৯৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, ২০২১-২২ অর্থবছরে ব্যয় হবে ২৯৮ কোটি ৪৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকা, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ব্যয় হবে ৩৬৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।

অন্যদিকে অঙ্গভিত্তিক ব্যয় বিভাজন তালিকা থেকে জানা যায়, প্রকল্পটির মোট ব্যয়ের সিংহভাগ ধরা হয়েছে আরসিসি রাস্তা, আরসিসি ড্রেন, আরসিসি ড্রেনসহ ফুটপাত নির্মাণ খাতে।

সিলেটের উন্নয়নের জন্য হাজার কোটি টাকার প্রকল্প পাস হওয়ায় মহানগরীতে আনন্দের ছোঁয়া লেগেছে। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সিলেটের উন্নয়নের ব্যাপারে সবসময়ই সচেষ্ট। সিলেট নগরীর উন্নয়নে আমরা যে প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠিয়েছিলাম, তা কোন কাটছাঁট না করেই পাস করেছেন। সিলেট সিটি করপোরেশনের ইতিহাসে এত বড় প্রকল্প এর আগে অনুমোদন পায়নি। একনেকে এই প্রকল্প পাসের জন্য সিলেট নগরবাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

সিলেট নগরীর উন্নয়নে বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ। মহানগর সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, সিলেটের উন্নয়নের দায়িত্ব নিয়েছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতির জনকের কন্যা যে কথা দেন, সেটা রক্ষাও করেন। এর প্রমাণ সিলেটের উন্নয়নে এক সঙ্গে এক হাজার কোটি টাকার প্রকল্প পাস। এর আগে কখনই সিলেটের উন্নয়নে এক সঙ্গে এত বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।

   

বন ডাকাতদের জন্যই পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয়: জিএম কাদের



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার কুমারখালী বাঁধবাজার থেকে মাদুলিয়া পর্যন্ত সড়কের ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্তে উষ্মা প্রকাশ করেছেন জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত বাতিল ও বিগত দিনে একই সড়কের গাছ কাটার বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করতেও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন তিনি।

বিবৃতিতে বলেছেন, গণমাধ্যমে প্রকাশ ২০২৩ সালে ঐ সড়কের ১০ হাজার গাছ কেটেছে বনবিভাগ। সম্প্রতি একই সড়কে আরো ৩ হাজার গাছ কেটেছে কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় জনসাধারন ও পরিবেশবীদদের মতামত উপেক্ষা করে ঐ সড়কে আরো প্রায় ৩ হাজার গাছ কাটার জন্য নম্বরিং করেছে বনবিভাগ। এর চেয়ে আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত আর হতে পারে না। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় দেশে ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকার কথা। কিন্তু আমাদের আছে ৯ শতংশের কম। এভাবে বনাঞ্চাল নিধন করার কারণেই দেশ আজ বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন যে আজ অতিষ্ঠ, যথেষ্ট গাছপালা থাকলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাওয়া যেত।

বিবৃতিতে বলেন, অন্যদিকে রাজধানীতে সড়ক ও ভবন তৈরীর জন্য ইতোমধ্যেই দেদারছে কেটে ফেলা হয়েছে হাজার গাছ। অপরিকল্পিত ও আত্মঘাতি এমন সিদ্ধান্তে রাজধানী বসবাসের অনুপযোগি হয়ে আছে। পরিবেশবীদদের মতে রাজধানীতে ২০ শতাংশ বনাঞ্চল থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ২ শতাংশ। প্রয়োজন হলে গাছ না কেটেও সড়ক উন্নয়ন ও প্রশস্ত করা সম্ভব। তাই কারনে-অকারনে বৃক্ষ নিধন বন্ধ করতে হবে।

আগে বন থেকে গাছ চুরি হতো, এখন বনে ডাকাতি শুরু হয়েছে। বন ডাকাতদের জন্যই পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয়। বনখেকো ও বনদস্যুদের চিহ্নিত করে তাদের আইনের মুখোমুখি করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান তিনি।

;

ভার পেয়ে মওকা খুঁজলেন মাউশির ডিজি, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে উকিল নোটিশ



আল-আমিন রাজু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা
ভার পেয়ে মওকা খুঁজলেন মাউশির ডিজি, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে উকিল নোটিশ

ভার পেয়ে মওকা খুঁজলেন মাউশির ডিজি, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে উকিল নোটিশ

  • Font increase
  • Font Decrease

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)র মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে ভারপ্রাপ্ত হয়েছিলেন অধিদপ্তরের কলেজ প্রশাসনে পরিচালক প্রফেসর শাহেদুল খবির চৌধুরী। এ সময়ে নিজেকে যোগ্য প্রমাণ করে উচ্চতর পদটি পাওয়ার চেষ্টাই করার কথা ছিলো তার। কিন্তু সেটা না করে মওকা বুঝে অর্থ আত্মসাৎ করে নিয়েছেন এমন অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে পাঠানো হয়েছে উকিল নোটিশ। বলা হচ্ছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির বড় অংকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন এই অধ্যাপক।

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির বর্তমান সভাপতি ও অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর শাহেদুল খবির ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে গত দুই বছর ধরে তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, গত ছয় বছরে দুই পদে দায়িত্ব পালনের সময়ে সমিতির সাধারণ তহবিল ও বিশেষ তহবিল খাতের অর্থ জনতা ব্যাংকের দুটি ব্যাংক হিসাব থেকে তুলে বিভিন্ন কাজে ব্যয় করেন। যা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এছাড়া সারাদেশের বিভিন্ন কলেজ থেকে চাঁদা আদায়সহ সমিতির নানাখাতের আয় ও ব্যয়ের হিসাব নিয়ে সদস্যদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ফলে অনেকটা চাপের মুখে শাহেদুল খবিরের নিজের লোক হিসেবে পরিচিত প্রফেসর আ ন ম শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে অডিট কমিটি গঠন করেন। এই কমিটি সমিতির ব্যাংক হিসাব ও আয়-ব্যয়ের অডিট করতে গিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকার গড়মিল খুঁজে পায়।

আর সেই অডিটের সূত্র ধরে শাহেদুল খবিরকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সমিতির সাধারণ সদস্য খাগড়াছড়ি জেলার রামগর সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাক।

এই শিক্ষকের পক্ষে আইনি নোটিশটি পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মো. শাহীন আলী।

এই নোটিশে শাহেদুল খবিরের পাশাপাশি তার সঙ্গে আর্থিক অনিয়মে জড়িত জড়িত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সাবেক কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর খান রফিকুল ইসলাম, সমিতির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও বর্তমানে ওএসডি হয়ে চট্টগ্রাম জেলার স্বন্দীপের হাজী আব্দুল বাতেন কলেজে সংযুক্ত সহযোগী অধ্যাপক মো. শওকত হোসেন মোল্ল্যা, সমিতির কোষাধ্যক্ষ ও বর্তমানে ওএসডি হয়ে একই কলেজে সংযুক্ত ব্যাবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামাল আহমেদকে একই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তাদেরকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নোটিশে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

সমিতির একাধিক সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রফেসর নাসরিন বেগম ও আইকে সেমিলউল্লাহ খন্দকার বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির দায়িত্বে ছিলেন। তাদের মেয়াদে এক কোটি ৯ লাখ টাকা পরবর্তী কমিটি অর্থাৎ ২০১৬ সালে নির্বাচিত সভাপতি আই কে সেলেমউল্লাহ খন্দকার ও মহাসচিব প্রফেসর শাহেদুল খবিরের কাছে বুঝিয়ে দিয়ে যান। ২০১৬ সালের সমিতির ১২৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির নির্বাচনে দুটি প্যানেল অংশগ্রহণ করে। একটি আই কে সেলেমউল্লাহ খন্দকারের প্যানেল, অন্যটি শাহেদুল খবিরের প্যানেল। এই নির্বাচনে সেলেমউল্লাহ খন্দকার সভাপতি নির্বাচিত হন। তার প্যানেলের আর কেউ নির্বাচিত হতে পারেন নি। বাকি ১২২ পদে শাহেদুল খবিরের প্যানেল নির্বাচিত হয়। ফলে কমিটিতে সেলেমউল্লাহ খন্দকার একা হয়ে যান। এই সুযোগে মহাসচিব হিসেবে শাহেদুল খবির ও তার প্যানেলের কোষাধক্ষ্য মুন্সিগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও নায়েমের সাবেক উপ-পরিচালক খান রফিকুল ইসলাম মিলে সভাপতিকে পাশকাটিয়ে সমিতির সকল ব্যাংক একাউন্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। এই সুযোগে ২০১৬ থেকে ২০১২২ সাল পর্যন্ত দুজনের স্বাক্ষরে ব্যাংক থেকে কয়েক কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়। সারাদেশের কলেজগুলো থেকে গত ৬ বছর ধরে তারা চাঁদা তুলেছেন। এই সময়ে কোন কলেজ কতটাকা চাঁদা দিয়েছে। এই টাকা কি ভাবে খরচ করা হয়েছে। পূর্বের হিসাবের সঙ্গে বর্তমান হিসাবের কোনো ধারাবাহিকতা তারা রক্ষা করেন নি।

এর ফলে সমিতির সাধারণ সদস্যদের মাঝে কমিটির নানা খাতের ব্যয় ও আয়ের বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানাভাবে সমিতির ক্ষমতাশীন নেতাদের এমন অন্যায়ের প্রতিবাদ জানালে চলতি বছরের মার্চ মাসের ৭ তারিখ দুটি অডিট কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি ২৪ দিন পর গত ৩১ মার্চ অডিট প্রতিবেদন জমা দেয়। দুটি কমিটির প্রধান ছিলেন দুজন অধ্যাপক। তারা এই হিসাব ও ব্যাংক বিবারণ দেখে নিজেরাই বিব্রত। ফলে অনেকটা অনিচ্ছা সত্যেও সভাপতির নিজেদের লোকদের করা অডিটেও ২ কোটি ৮৪ লাখ টাকার গরমিল উল্লেখ করা হয়।

সমিতির সদস্যদের আরও অভিযোগ, সাধারণ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে নিজেদের ক্ষমতাধর ভেবে কমিটির সভাপতি ও তার নেতৃত্বাধীন নেতারা কোনো নিয়ম মানছেন না। এছাড়া বর্তমান কমিটির ভোটেও নয়-ছয়ের অভিযোগও করছেন অনেকে।

অডিটে অংশ নেওয়া একাধিকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অডিট কমিটির কাছে উপস্থাপন করা বেশিরভাগ ভাউচারে কাটাকাটি করা হয়েছে। ব্যয়ের খাত উল্লেখ নেই। এমন কি লাখ লাখ টাকা খরচ করা হলেও তার খাত বা ভাউচার দেখাতে পারেন নি। ফলে বিসিএস ক্যাডারের পেশাজীবি একটি সংগঠনের সদস্যদের কোটি কোটি টাকার ব্যয়ের হিসাব রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্তদের বড় ধরনের অবহেলার প্রমাণ মিলেছে। এতে অডিট কমিটির প্রধানসহ সবাই হতবাক হয়েছেন।

এ দিকে ২০২৩ সালের অক্টোবর ও সেপ্টেম্বর মাসে বিসিএস ক্যাডার–বৈষম্য, পদোন্নতিসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানসহ বিভিন্ন দাবিতে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারাদের প্রায় ১৫ দিন কর্মবিরতি পালন করেন। এই কর্মবিরতিতে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পদোন্নতিসহ বিভিন্ন দাবিতে সারাদেশে শিক্ষকদের ১৫ দিন কর্মবিরতির নেপথ্যে ছিলেন শাহেদুল খবির। তিনি পদোন্নতি এনে দেওয়ার নামে অনেকটা চাপ প্রয়োগ করে বর্তমান সরকারের তৃতীয় মেয়াদের শেষ সময়ে নির্বাচনের আগে এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। যদিও পরবর্তীতে তার পদ নিয়ে টানাটানি শুরু হলে তিনি আন্দোলন থেকে সরে আসেন এবং শিক্ষকদের আন্দোলন থেকে বিরত থাকতে বলেন। সেই সময়ে আন্দোলনের বিষয়ে শাহেদুল খবির গণমাধ্যমে নানা বক্তব্য দিয়েছিলেন। বিভিন্ন পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে খুঁজে যার সত্যতা পাওয়া যায়।

এছাড়া শাহেদুল খবিরের অন্যতম সহযোগী শওকত হোসেন মোল্যার সন্দ্বীপ হাজী আব্দুল বাতেন কলেজে বদলি হলেও তিনি বিগত তিন বছর কলেজে যান না। কলেজে না যেয়েও কলেজ অধ্যক্ষের সহযোগিতায় বেতন তুলছেন। তিনি শাহেদুল খবির চৌধুরীর নিজের লোক হওয়ায় কর্মস্থলে দীর্ঘদিন না গেলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এই শাহেদুল খবির চৌধুরীর যোগসাজশে নোয়াখালী সরকারি কলেজের যাবতীয় অনিয়ম দুর্নীতি শিক্ষক হয়রানি হচ্ছে। শিক্ষা সচিব নোয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ সালমা আক্তার ও উপাধ্যক্ষ লোকমান ভূঞাঁ এর বিরুদ্ধে পৃথক তদন্তের আদেশ দিলেও তদন্ত আটকে রেখেছেন শাহেদুল খবির চৌধুরী। সারাদেশে শিক্ষায় দুর্নীতিবাজদের গুরু শাহেদুল খবির চৌধুরী। কেউ অনিয়ম করে ধরা পড়লেও তার কারণে কোন তদন্ত হয় না। তদন্ত হলেও সেই প্রতিবেদনের কাগজ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় না। এমন কি কুমিল্লা বোর্ডের চিঠি জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে এই সিন্ডিকেটের সদস্যদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার তদন্তও আটকে আছে অদৃশ্যের বাধায়।

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক অধিদফতরে চাকরি করে একই অধিদফতরের মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাক বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির একজন সাধারণ সদস্য। সে হিসেবে এই সমিতির আর্থিক আয় ও ব্যয়ের হিসাব জানার অধিকার আমার আছে। কারো ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে নয় সমিতির সকল সদস্যদের মতো আমিও সমিতির আর্থিক হিসাব চাইতে পারি। সে জন্যই সম্প্রতি অডিটে উঠে আসা আর্থিক অনিয়মের বিরুদ্ধে জড়িতদের আইনি নোটিশ পাঠিয়েছি। সমিতির কোটি কোটি টাকা ক্ষমতার জোরে তারা আত্মসাৎ করেছেন। এমন কি জোর করে কোষাধ্যক্ষের কাছ থেকে চেকে স্বাক্ষর নেওয়ার কথাও আমরা ফেসবুকে দেখতে পাই। ব্ল্যাংক চেকে স্বাক্ষর নেওয়ার যৌক্তিকতা কোথায় আছে? একজন ক্যাডার সার্ভিসের কর্তকর্তা হিসেবে তারা এই কাজ করতে পারেন না। যদি আমার নোটিশের উপযুক্ত জবাব তারা দিতে না পারেন, বৈধ কাগজ না দেখাতে পারেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হবে।

অধিদফতেরর মহাপরিচালককে আইনি নোটিশ পাঠানোর কারণে হয়রানির আশঙ্কা করছেন কি না জানতে চাইলে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের এই শিক্ষক বলেন, আমি ২০১৮ সাল থেকে হয়রানির শিকার। মাউশির ১০ স্কুল প্রকল্পের দূর্নীতি বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় আমাকে নানাভাবে হয়রানি করা হয়। সেই সময়ে আমি অভিযোগ দিয়েছিলাম। সেই অভিযোগে ৯ জনের অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হয়। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী বিষয়টি জানতেল। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় নি। অথচ আমাকে ওএসডি করে রাখা হয় দুই বছর। সেখান থেকে নোয়াখালী সরকারি কলেজে বদলি করা হয়। সেখানেও পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল, ফলাফল টেম্পারিং করে টাকা নেওয়া, শিক্ষার্থী ভর্তিতে ব্যাপক দূর্নীতি নিয়ে দুদক ও শিক্ষা সচিবের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। সেখানেও দূর্নীতির প্রমাণ পাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং আমাকে খাগড়াছড়ি বদলি করা হয়। আমি এতেও ভীত নই। আমি জানি হয়রানির শিকার হবো। তবে আমি যতদিন বেঁচে আছি দূর্নীতির সঙ্গে আপষ করবো না। শুধু তাই নয় আমার এসিআরে বিরূপ মন্তব্য করে আমার পদোন্নতি আটকে দেওয়া হয়েছে। আমার জুনিয়রদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তাই আমি থেমে যাবো না। তাদের বিচার না হলেও বরং মানুষ জানুক তারা কিভাবে শিক্ষা ব্যবস্থাকে নষ্ট করে দিচ্ছে।

এ দিকে যার বিরুদ্ধে এতো অভিযোগ সেই শাহেদুল খবিরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। টানা দুই দিন তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেন নি। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি উত্তর দেন নি।

;

মাগুরাতে বৃষ্টি প্রার্থনায় ইসতিসকার নামাজ আদায়



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মাগুরা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র তাপদাহ ও খরা থেকে মুক্তি পেতে রোদের মধ্যে মাগুরায় বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে জেলার শ্রীপুর উপজেলার খামারপাড়া সিদ্দিকিয়া আহম্মদীয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা ময়দানে এ নামাজ আদায় করেন প্রায় দুই শতাধিক মুসল্লি।

এতে ইমামতি করেন খামারপাড়া বাজার জামে মসজিদের ইমাম কাজী আবুল হাসান। নামাজ শেষে দোয়া পরিচালনা করেন শ্রীপুর সরকারি এম সি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক আব্দুল কাদের সিদ্দিকী।

নামাজ অংশ নেয়া মুসল্লিরা বলেন, অনাবৃষ্টির কারণে মানুষ হাহাকার করছে। মহান আল্লাহ কোনও কারণে আমাদের ওপরে নারাজ হয়েছেন। এ কারণে বৃষ্টিবর্ষণ বন্ধ রেখেছেন। আমরা আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করেছি। আজকে মহান আল্লাহর কাছে বৃষ্টি বর্ষণের জন্য মুসল্লিদের সাথে নামাজ আদায় করেছি। নামাজ শেষে অনাবৃষ্টি এবং গরম থেকে মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর রহমত কামনা করে মোনাজাত করেছি।

;

বঙ্গোপসাগরে কার্গো জাহাজ ডুবি, সাগরে ভাসছে ১২ নাবিক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালী হাতিয়ার পূর্ব পাশে বঙ্গোপসাগরে এমভি মৌমনি নামে একটি কার্গো জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে হাতিয়ার ইসলাম চরের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জাহাজের ১২ নাবিক সবাই নদীতে ভাসছেন বলে জানা যায়।

দুর্ঘটনার পরপরই নাবিকরা জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিয়ে সহযোগিতা চায়। পরে ৯৯৯-থেকে হাতিয়া নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ডকে সহযোগিতার জন্য বলা হয়।

এদিকে দুপুর ২টার দিকে হাতিয়া কোস্টগার্ড ও নলচিরা নৌ-পুলিশের দুটি টিম উদ্ধার করার জন্য হাতিয়ার নলচিরা ঘাট থেকে রওয়ানা হয়।

নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মেহেদী জামান জানান, ঘটনাটি ঘটেছে সাগর মোহনায়। আমরা একটি ট্রলার নিয়ে ঘটনাস্থলের দিকে যাচ্ছি। নদী খুবই উত্তাল রয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে আমাদের সময় লাগবে। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নাবিকরা সবাই ডুবে যাওয়া জাহাজের উপরের অংশ ধরে ভাসছে।

এদিকে নৌ-পুলিশের পরপরই হাতিয়া কোস্টগার্ডের একটি টিম ঘাটের একটি ট্রলার নিয়ে ঘটনাস্থলের দিকে রওয়ানা হয়েছে। কোস্টগার্ড জানায়, ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে তাদের ১-২ ঘণ্টা সময় লাগবে।

এ ব্যাপারে জাহাজের মালিক পক্ষের একজন মোহাম্মদ ওহায়েদুল ইসলাম মোবাইলে জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে জাহাজটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ডুবে যাওয়ার প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। জাহাজে থাকা লোকজনের সঙ্গে প্রথমে কথা বলা গেলেও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় এখন যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। তিনি আরও জানান, জাহাজটি চট্টগ্রাম থেকে মালামাল নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিল। জাহাজে ১২ জন নাবিক রয়েছে।

;