নির্মাণাধীন বাড়ির নিচে গুপ্তধন, উধাও তিন শ্রমিক
রাজশাহীর বাগমারায় কাসার কলসে থাকা স্বর্ণ, রৌপ্য মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে উধাও হয়েছেন তিন শ্রমিক। নির্মাণাধীন বাড়ির টয়লেটের হাউজ খননের সময় এসব ‘গুপ্তধন’ পান তারা। এনিয়ে বাড়ির মালিক বাগমারা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। তবে গত এক সপ্তাহেও নিখোঁজ শ্রমিকদের সন্ধান বের করতে পারেনি পুলিশ। এনিয়ে উপজেলায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে উপজেলার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার চাঁনপাড়া গ্রামের আব্দুল আজিজ জোয়ার্দারের ছেলে আলমগীর হোসেনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই ওই শ্রমিকরা সেখান থেকে কাউকে কিছু না বলে পালিয়ে যায়।
নিখোঁজ শ্রমিকরা হলেন- চাঁনপাড়া গ্রামের আলতাফ হোসেন, ওসমান আলী ও পার্শ্ববর্তী বাসুপাড়া ইউনিয়নের দেওলা গ্রামের কফিল উদ্দিন। বাড়িতে থাকা নারীরা বিষয়টি বাড়ির মালিক আলমগীরকে জানালে তিনি ওই দিন বিকেলে বাগমারা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
থানায় দালিখকৃত লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে আলমগীর হোসেনের বাড়িতে নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন আলতাফ, ওসমান ও কফিল। ১১ ফেব্রুয়ারিও তারা সকালে কাজে আসে এবং টয়লেট নির্মাণের জন্য হাউজ খনন শুরু করে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ির মালিক আলমগীর তার দোকানে যান। এর কিছুক্ষণ পরই শ্রমিকদের কোদালের আঘাতে ব্যাপক শব্দ হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ওই শব্দ শুনে বাড়িতে থাকা নারীরা সেখানে যান। তারা দেখতে পান মাটির ভেতরে কাসার দু’টি কলস। তবে কৌশলে ওই শ্রমিকরা নারীদের সেখান থেকে সরিয়ে দেন। পরে তারা কলস ঘটনাস্থলে রেখে ভেতরে থাকা সোনা ও রূপার মুদ্রা এবং স্বর্ণালঙ্কার গামছায় পেঁচিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন। পরে কাউকে কিছু না বলে ওই তিন শ্রমিক কাজ ফেলে রেখে চলে যান।
বাড়ির মালিক আলমগীর খবর পেয়ে দ্রুত বাড়িতে এসেও শ্রমিকদের খুঁজতে তাদের বাড়িতে যান। তবে তারা বাড়িতে যাননি বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। পরে বাড়ির মালিক বাগমারা থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করেন এবং বিকেলে লিখিত অভিযোগ করেন।
বাড়ির মালিক মিষ্টি ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, মাদারী শাহ নামে তার দাদার একজন পালিত সন্তান বাড়িতে বসবাস করতেন। তিনি ছিলেন খুব ধনী ব্যবসায়ী এবং নিঃসন্তান। ধারণা করা হচ্ছে- তিনিই স্বর্ণালঙ্কার ও স্বর্ণমুদ্রা মাটির নিচে গচ্ছিত রেখেছিলেন।
অভিযোগের পর থেকে শ্রমিকদের সন্ধানে কাজ করছেন বাগমারা থানার সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) হাসান আলী। তিনি বলেন, আমরা ঘটনার পর দিন ওই স্থান পরিদর্শন করেছি। সেখানে কাসার কলস ও পুরোনো কিছু কাপড় পাওয়া গেছে। হয়তো পুরোনো দিনে গচ্ছিত রাখা কোনো সম্পদ ছিল। যা ওই শ্রমিকরা পেয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা হাসান আলী আরও বলেন, ঘটনার পরদিন ওই শ্রমিকদের নম্বর ট্রাকিং করে অবস্থান জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু তার বারবার অবস্থান পরিবর্তন করছেন। ফলে তাদের সন্ধান বের করা সম্ভব হয়নি। তাদের আটকে পুলিশ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।