‘১৫ দিনে পূর্ণাঙ্গ না করলে কমিটি ভেঙে দেব’

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন কাদের ও নানক, ছবি: বার্তা২৪.কম

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন কাদের ও নানক, ছবি: বার্তা২৪.কম

গেল বছরের ১২ ডিসেম্বর রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে সভাপতি-সম্পাদকসহ চারজনের নাম ঘোষণা করা হয়। নির্দেশনা দেওয়া হয়- আগামী এক মাসের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার। তবে প্রায় তিন মাস পার হলেও তা করতে পারেনি আংশিক কমিটির নেতারা।

রোববার (১ মার্চ) রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে এসে প্রকাশ্যে রীতিমত শাসিয়ে গেলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তৃতাকালে নানক পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে জেলা আওয়ামী লীগকে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম দেন। একই মঞ্চ থেকে নানকের কথায় সুর মিলিয়ে জেলা আওয়ামী লীগকে হুশিয়ারি দেন ওবায়দুল কাদেরও।

বিজ্ঞাপন

জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘তারা (জেলা আওয়ামী লীগ) গত বছরের ডিসেম্বরে বিশাল প্যান্ডেল করে সম্মেলন করেছিল। সম্মেলনে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছিল। বলে গিয়েছিলাম- একমাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে। সেই কমিটি হয়েছিল ১২ ডিসেম্বর, আজকে ১ মার্চ। দুঃখজনক হলেও সত্যি- প্রায় তিন মাস পর রাজশাহীতে আসলাম, কিন্তু কমিটির সেই চারজন ছাড়া কারও সাথে পরিচিত হতে পারলাম না।’

নানক আরও বলেন, ‘এভাবে সংগঠন চলতে পারে না। শুধু দুই জনের পরিচয়ের জন্য একটি কাউন্সিল করা হয় না। উনারা পরিচয় দিয়ে বলবেন- আমি সভাপতি আর আমি সাধারণ সম্পাদক। আর বাকিরা লজেন্স চুষবে? আমি দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলেছি। ১৫ দিনের মধ্যে যদি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন না করা হয়, তাহলে কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করবো।’

বিজ্ঞাপন

পরে নানকের কথায় সুর মিলিয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও একই হুশিয়ারি দেন। কাদের বলেন, ‘তিন মাস হয়ে গেল, রাজশাহী জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনও হয়নি। তাদেরকে বলবো- দ্রুত কমিটি করুন, না হলে দল কঠোর সিদ্ধান্ত নেবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ মহানগর ইউনিটের সভাপতি-সম্পাদকের নাম ঘোষণা করে গেলাম। মহানগরকেও একমাস সময় দিচ্ছি। এই সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে হবে। তা না হলে কমিটি ভেঙে দেব।’

ওবায়দুল কাদের ও জাহাঙ্গীর কবির নানক যখন বক্তৃতা করছিলেন, তখন জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটির চার নেতাও মঞ্চে ছিলেন। ওই চার নেতা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা, যুগ্ম-সম্পাদক লায়েব উদ্দিন লাভলু ও আয়েন উদ্দিন।

দলের সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসিডিয়াম সদস্যের এমন হুশিয়ারির পর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমরা পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে গুরুত্বসহকারে কাজ করছি। জেলা কমিটি মানে বড় ইউনিট। অনেক মেধাবী, যোগ্য ও ত্যাগী নেতা রয়েছে। দলের পদ-পদবীতে তাদের প্রত্যাশাও অনেক। যাচাই-বাছাই করে ৭৫ জনকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ফলে কিছুটা বেশি সময় লাগছে।’ তবে নেতাদের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে খসড়া পূর্ণাঙ্গ তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।

তবে দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিগত কমিটির সভাপতি-সম্পাদক দ্বন্দ্বে তৃণমূল বিভক্ত। তৃণমূলের অধিকাংশ নেতাকর্মী আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদের নিয়ন্ত্রণে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঠিক করতে গিয়ে দলের শীর্ষ নেতারা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। ফলে দল গোছাতে এবং নেতাকর্মীদের মধ্যে সমন্বয় করতে বেগ পোহাতে হচ্ছে নতুন নেতাদের।