তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন মানছে না ৯৬ ভাগ সরকারি অফিস!
রংপুর মহানগরের শতকরা ৯৬ ভাগ সরকারি অফিসে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ’ আইন লঙ্ঘিত হচ্ছে। ৯৯ ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, ৯১ ভাগ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে ও ৯৬ ভাগ হোটেল রেস্টুরেন্টে দেদারছে লঙ্ঘিত হচ্ছে এই আইন। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানে নেই ধূমপান বিরোধী সতর্কতামূলক নোটিশ।
রোববার (১৫ মার্চ) দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘রংপুর শহরের পাবলিক প্লেসে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রতিপালনে বর্তমান অবস্থা যাচাই’ শীর্ষক এক জরিপের ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।
উন্নয়ন সংস্থা ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি’র এর আয়োজন করে। রংপুর নগরীতে চার ধরনের পাবলিক প্লেসে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের চিত্র জরিপের ফলাফলে তুলে ধরা হয়।
এতে জানানো হয়, ২০১৯ সালের জুন-সেপ্টেম্বর ‘এসিডি’র তত্ত্বাবধানে ‘রংপুর শহরের মোট ৮১২টি পাবলিক প্লেসে (১৫৬টি সরকারি অফিস, ১০৮টি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, ১২৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ৪২১টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে) এ জরিপ পরিচালিত হয়। জরিপে শতকরা ৮০ ভাগ সরকারি অফিসে ধূমপানের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ৮৯ ভাগ অফিসে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী সতর্কতামূলক নোটিশ দেখা যায়নি। সরকারি ২৭ ভাগ অফিসে সরাসরি ধূমপান, ৮০ ভাগ অফিসে সিগারেট/বিড়ির বাট এবং ১ ভাগ সরকারি অফিসে সিগারেট/বিড়ির গন্ধ পাওয়া গেছে।
এছাড়াও সরকারি দুই ভাগ অফিসে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন পাওয়া গেছে। তিন ভাগ অফিসে সীমানার মধ্যে তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়কেন্দ্র পাওয়া গেছে। একাত্তর ভাগ অফিসের সীমানা থেকে ১০০ মিটারের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়কেন্দ্র পাওয়া গেছে।
এসিডি’র মিডিয়া ম্যানেজার আমজাদ হোসেন শিমুল জরিপের ফলাফল তুলে ধরে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
এতে রংপুরের তামাক নিয়ন্ত্রণ কোয়ালিশনের ফোকাল পার্সন সুশান্ত ভৌমিকের সভাপতিত্বে জরিপের ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন- বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর মোজাম্মেল হক। অন্যান্যদের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন এসিডির প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোস্তফা কামাল, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিড্স-সিটিএফকে’র প্রোগ্রাম অফিসার আতাউর রহমান মাসুদ, এসিডির অ্যাডভোকেসি অফিসার আনোয়রুল ইসলাম, প্রোগ্রাম অফিসার তৌফিকুল ইসলাম।
জরিপে দেখানো হয়, রংপুর শহরের ৯১ ভাগ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘিত হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৯৯ ভাগ প্রতিষ্ঠান কোন না কোনভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন মানছে না। এছাড়াও শহরের অলিগতিতে গড়ে উঠা ৯৬ ভাগ ছোট বড় হোটেল রেস্টুরেন্টে প্রকাশ্যে ধূমপান করাসহ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অমান্য করা হচ্ছে।
এসময় তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০০৫ (সংশোধিত আইন-২০১৩) এর যথাযথ প্রয়োগ ও তামাকজাত পণ্য উৎপাদন, বাজারজাতকরণ বন্ধে বেশ কিছু সুপারিস তুলে ধরেন অনুষ্ঠানের আলোচকরা।